অলস্পোর্ট ডেস্ক: এক নতুন যুগের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ইন্ডিয়ান সুপার লিগ (ISL)-এর ক্লাব ইস্টবেঙ্গল এফসি। কারণ, কার্লস কুয়াদ্রাতের জায়গায় হেড কোচ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন অস্কার ব্রুজোঁ। মরশুমের বাকি অংশে লাল-হলুদ বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেবেন তিনি এবং তাঁর সামনে এক বড় চ্যালেঞ্জ।
আইএসএলে টানা চারটি পরাজয়ের পরে লিগ টেবলে একেবারে নীচে নেমে গিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। এই দলের ভাগ্য ঘুরিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ব্রুজোনকে। এ ছাড়াও, সমর্থকদের প্রত্যাশা পূরণ করতে এবং এএফসি চ্যালেঞ্জ কাপে সাফল্য অর্জন করাও এখন তাঁর কাছে বড় চ্যালেঞ্জ।
ক্লাব এবং আন্তর্জাতিক ফুটবলের অভিজ্ঞতা নিয়ে, ব্রুজোঁ তাঁর পেশাদার কোচিং জীবনের একটি বড় অংশ এশিয়ার ফুটবলে কাটিয়েছেন। এখানে ইস্টবেঙ্গল এফসির নতুন হেড কোচ সম্পর্কে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরা হল।
তারুণ্য ও অভিজ্ঞতার মিশ্রণ
৪৭ বছর বয়সে, ব্রুজোঁ ১৭ বছরের অভিজ্ঞতা নিয়ে একজন অভিজ্ঞ কোচ। তিনি তাঁর কোচিং যাত্রা শুরু করেছিলেন ২০০৭ সালে। তার আগে পেশাদার ফুটবলে খেলেন ১৯৯৮ থেকে ২০০৩ পর্যন্ত। স্পেনে কোচিং শুরু করেন ব্রুজোঁ, যেখানে তিনি আরিওসা এবং সেল্টা ফিগোর যুব দলগুলির সঙ্গে কাজ করেন। তাঁর কোচ হিসেবে কাজ করা শুরু ২০১২-য়, যখন তিনি ভারতে আসেন এবং স্পোর্টিং ক্লুব দ্য গোয়ায় যোগ দেন। তার পর থেকে, তিনি বাংলাদেশ এবং মালদ্বীপে কাজ করেন এবং বিখ্যাত হয়ে ওঠেন। ২০২১-এ বাংলাদেশের জাতীয় দলের অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবেও কাজ করেন তিনি, যা তাঁর আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতাকে আরও সমৃদ্ধ করেছে।
আইএসএলের অভিজ্ঞতা
ব্রুজোঁ ভারতীয় ফুটবলে যথেষ্ট পরিচিত নাম। এর আগে স্পোর্টিং ক্লুব দ্য গোয়া এবং মুম্বই এফসির মতো ক্লাবগুলিতে কাজ করেছেন। ২০১৫-য়, তিনি মুম্বই সিটি এফসির সহকারী কোচ হিসেবে আইএসএলে অংশ নেন, যেখানে তিনি প্লেয়ার-কাম-হেড কোচ নিকোলাস আনেলকার সঙ্গে কাজ করেছিলেন। সেই মরশুমে দলটি প্লে-অফে উঠতে ব্যর্থ হলেও পঞ্চম স্থানে শেষ করেন।
বাংলাদেশে সাফল্যের ছাপ
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল কোচ ব্রুজোঁ। তিনি বসুন্ধরা কিংসকে পাঁচটি লিগ শিরোপা এবং ছ’টি অন্যান্য ট্রফি জেতান। তিনটি স্বাধীনতা কাপ এবং তিনটি ফেডারেশন কাপ খেতাব জিতিয়েছেন তিনি। তাঁর প্রশিক্ষণে বসুন্ধরা কিংস ১১৪ ম্যাচের মধ্যে ৯৪টি ম্যাচ জিতেছে। তাঁর দল আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলে মোট ২৭৭ গোল করেছে।
এএফসি-র প্রতিযোগিতায় চমৎকার রেকর্ড
ব্রুজোঁর এএফসি কাপে উল্লেখযোগ্য অভিজ্ঞতা রয়েছে। সেখানে তিনি তাঁর পূর্ববর্তী ক্লাবগুলির সঙ্গে ১৯টি ম্যাচে ১১টি জয় অর্জন করেছেন। ২০২৩-২৪ এএফসি কাপে, বসুন্ধরা কিংস ছিল আইএসএল দল ওডিশা এফসি এবং মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট-এর সঙ্গে একই গ্রুপে এবং তাঁরা দুটি ভারতীয় ক্লাবকে হারিয়ে দ্বিতীয় স্থানে শেষ করে।
এশিয়া জুড়ে খেতাব জয়
ব্রুজোঁ তিনটি এশীয় দেশের ক্লাবগুলিতে প্রধান কোচ হিসেবে কাজ করে শিরোপা জিতেছেন। স্পোর্টিং ক্লুব দ্য গোয়াকে তিনি ২০১৩-১৪-য় গোয়া প্রফেশনাল লিগ খেতাব জেতেন এবং ফেডারেশন কাপে রানার্স আপ হন। মলদ্বীপে নিউ রেডিয়ান্ট এসসির সঙ্গে তিনি ধিবেহি প্রিমিয়ার লিগ, মলদ্বীপ এফএ কাপ, প্রেসিডেন্টস কাপ এবং এফএ চ্যারিটি শিল্ড জেতেন।
বসুন্ধরা কিংসের সাথে ঐতিহাসিক অভিযান শেষ করে ব্রুজোন এ বার ইস্টবেঙ্গল এফসিতে সেই সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখার আশায় ভারতে ফিরে আসছেন। তাঁর বিস্তৃত অভিজ্ঞতা এবং প্রমাণিত সাফল্যের নজির এই নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
(লেখা আইএসএল ওয়েব সাইট থেকে)
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার