Thursday, February 13, 2025
No menu items!
Google search engine
Homeফুটবলকলকাতা ডার্বি: আগের জয় অতীত, শনিবার অন্য ম্যাচ বলছেন, ফেরান্দো

কলকাতা ডার্বি: আগের জয় অতীত, শনিবার অন্য ম্যাচ বলছেন, ফেরান্দো

সুচরিতা সেন চৌধুরী: রাত পোহালেই আবারও একটা কলকাতা ডার্বি । যে ডার্বি ঘিরে যুগের পর যুগ উত্তাল হয়েছে ভারতীয় ফুটবল। যে ডার্বির আবেগে ভেসে গিয়েছে উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম। রাস্তা সে যেখান থেকেই আসুক, এই একটা দিন মেশে এই একটিই বিন্দুতে। অতীতে কখনও সেটা ময়দান ছিল আবার কখনও তা ছিল ইডেন গার্ডেন্স। আর এখন সেই গতিমুখ গিয়ে থেমেছে যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে। প্রস্তুতি শেষ। এবার শুধু অপেক্ষা নিজের নিজের দলের জন্য গলা ফাঁটানোর। টিকিট বিতর্কের মধ্যেই দুই দলের সমর্থকরা কোমর বাঁধছেন। শুধু কি কলকাতা? একরাত আগে থেকেই এই শহরে ঘাঁটি গাড়বে বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ইস্ট-মোহন সমর্থকরা।

সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান বলছে এই ডার্বিতে এগিয়ে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। পর পর ম্যাচ জয়ে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে রয়েছে সবুজ-মেরুন দল। এই অবস্থায় প্রি-ম্যাচ সাংবাদিক সম্মেলনে ঠিক ততটাই আত্মবিশ্বাসী দেখাল মোহনবাগান কোচ হুয়ান ফেরান্দো আর ফুটবলার দিমিত্রি পেত্রাতোসকে। তবে, আত্মতুষ্টি নেই বুঝিয়ে দিলেন স্বয়ং কোচ। কলকাতা লিগ এবং ডুরান্ড কাপ নিয়ে টানা আট ম্যাচ জিতেই ডার্বি খেলতে নামছে মোহনবাগান। তা বলে এই জয়কে অ্যাডভান্টেজ মানতে নারাজ হুয়ান ফেরান্দো। তিনি বলেন, ‘‘একদমই নয়। কারণ এটা পুরো আলাদা ম্যাচ। আমাদের কাছে এই ম্যাচ গুরুত্বপূর্ণ কারণ এই ম্যাচ জিতে পরের রাউন্ডে যেতে চাই। আর আগে যা জিতেছি সেগুলো অতীত। আমরা বর্তমানে রয়েছি। সেটা জিততে চাই। তিন পয়েন্ট তুলে নিতে চাই।’’

ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে ম্যাচকে যে যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছেন বাগান কোচ তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। যদিও তিনি শুরুতেই জানিয়েছিলেন, তাঁর কাছে সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ এএফসি কাপ। সেই অবস্থায় ডার্বির ঠিক একদিন আগে দলের সঙ্গে যোগ দেওয়া দুই বিদেশি কামিন্স ও সাদিকুকে সই করিয়ে নিয়েছে ক্লাব। যা দেখে এটা মনে হওয়াটাই স্বাভাবিক যে, প্রয়োজনে এই দুই প্লেয়ারকে ডার্বির মাঠে বল পায়ে দেখা যেতেই পারে। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘অবশ্যই এএফসি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ ওটা আন্তর্জাতিক ম্যাচ। প্লেয়াররা প্রতিদিন ট্রেনিং করছে, প্রতিদিন উন্নতি করছে। কেউ ২০ মিনিটের জন্য কেউ আবার ৫৫ মিনিটের জন্য খেলছে। তবে এএফসি কাপের আগে এটা আমাদের শেষ ম্যাচ। তাই আমরা এই ম্যাচে ভাল করতে চাই এবং পরের বুধবারের ম্যাচেও সেরাটা দিতে চাই।’’

হুয়ান ফেরান্দোর বক্তব্য অনুযায়ী ডার্বি জয়ের পাশাপাশি এই ম্যাচ থেকেই এএফসি কাপের জন্য দলকে প্রস্তুত করে নিতে চাইছেন তিনি। শনিবারের ম্যাচের পরই হয়তো তিনি তাঁর সেরা ১১ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে যাবেন। তবে তিনি মনে করেন কোনও দুটো ম্যাচের মধ্যে কোনও সম্পর্ক থাকে না। আগের ম্যাচ জিতলেই পরের ম্যাচও জিতবে কেউ সেটা বলা যায় না। তবে মোহনবাগানের সামনে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ বিভিন্ন মানের টুর্নামেন্টে খেলা এবং সেটা পর পর খেলা। ডার্বির একদিন আগেই কলকাতা লিগের ম্যাচ এফসিআই-এর বিরুদ্ধে খেলতে হয়েছে দলকে। শনিবার প্রতিপক্ষ ইস্টবেঙ্গল আবার বুধবার খেলতে হবে আন্তর্জাতিক দলের বিরুদ্ধে। এই অবস্থায় দলের ভারসাম্য ধরে রাখা যে কঠিন সেটা স্বীকার করে নিলেন হুয়ান।

তিনি বলেন, ‘‘এটা সত্যিই কঠিন। আমাদের খেয়াল রাখতে হচ্ছে কলকাতা লিগ, ডুরান্ড কাপ, এএফসি কাপের লাইন আপ নিয়ে। সব ম্যাচই আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের লক্ষ্য থাকে একটা একটা করে ম্যাচ নিয়ে ভাবা। আশা করি দিনের শেষে আমরা সাফল্য পাব।’’ কার্লোস কুয়াদ্রাতের ডার্বি খেলার অভিজ্ঞতা না থাকলেও হুয়ান ফেরান্দোর ডার্বির অভিজ্ঞতা রয়েছে। ইস্টবেঙ্গল দলকে দেখেছেন। তাই আগের বছরের থেকে এই বছরের ইস্টবেঙ্গল দলের পার্থক্য সম্পর্কেও অবহিত তিনি।

 তাঁর মতে, এই মরসুমে বেশ কিছু ভাল প্লেয়ারকে দলে নিয়েছে ইস্টবেঙ্গল। তিনি বলেন, ‘‘ওদের দারুণ কিছু বিদেশি প্লেয়ার রয়েছে। ওদের স্থানীয় ও ডোমেস্টিক প্লেয়াররাও আমার মনে হয় ভাল। যেমন উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি, মন্দারের কথা। ও আগে গোয়ায় ছিল, গত মরসুমে মুম্বইয়ে ছিল। ভাল দল ইস্টবেঙ্গল। ওরা সবে শুরু করেছে ওদের সময় দিতে হবে।’’ তবে প্রতিপক্ষ যাই হোক না কেন খেলার ধরনে কোনও পরিবর্তন আসবে না। হুয়ান বলেন, ‘‘আমাদের খেলার ধরন সব সময়ই এক ছিল। আমাদের কাছে ভাল দল রয়েছে। আমাদের জন্য আমাদের খেলাটাই সেরা। তবে খেলার মধ্যে পরিস্থিতি দেখে যা পরিবর্তন করার করতে হবে।’’

তবে এএফসি কাপের কথা মাথায় রেখে পূর্ণ শক্তির দলকে নাও নামাতে পারে মোহনবাগান কোচ। চোট-আঘাতের আশঙ্কা থেকে যাবে। তবুও তিনি চান সেরা দলই নামাতে। তবে প্রথম ১১ বেছে নেওয়া সহজ হবে না বলেই তিনি মনে করেন। এই মুহূর্তে দলের সবাই ফিট রয়েছেন এবং কার্ড সমস্যা নেই কারও।

হাবাস দলে যোগ দেওয়ায় খুশি প্রকাশ করেছেন হুয়ান। তিনি মনে করেন একটি মাথার থেকে দুটো মাথা অনেক ভাল। সেটা দলের কাজে লাগবে। সঙ্গে হাবাসের দীর্ঘ ফুটবল অভিজ্ঞতার কথাও তিনি বলতে ভোলেননি। যতই নিন্দুকেরা বলুন, হাবাসকে এনে হুয়ানকে চাপে রাখার চেষ্টা করছে ক্লাব কিন্তু ডার্বির আগে মোহনবাগান কোচিং স্টাফে অভিজ্ঞ জোড়া ফলাই মাত দিতে পারে প্রতিপক্ষকে।

খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com

অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments