অলস্পোর্ট ডেস্ক: এভাবেই কলকাতার রাস্তায় মিলে গেল লাল-হলুদ, সবুজ-মেরুন ও সাদা-কালো রঙ। বাইপাসের দখল নিল ছয় রঙ। লাঠি উঁচিয়ে ছুটে এল পুলিশ। সেই লাঠি সপাটে গিয়ে পড়ল এই রঙের গায়ে। হাঁটু ফুলে গেল লাঠির ঘায়ে, পা থেকে খুলে গেল চটি, পাঁজা কোলে তোলা হল গাড়িতে, কিন্তু প্রতিবাদের চিৎকার থামানো গেল না। ম্যাচ বাতিল করে যা আটকানোর চেষ্টা করা হয়েছিল তার কয়েকগুন বড় আকাড়ে আছড়ে পড়ল প্রতিবাদ। জারি করা হল ১৬৩ (আগের ১৪৪) ধারা। স্লোগান উঠল “ডার্বি বাতিল করলে কর, জাস্টিস চায় আর্জি কর” বা “হাত মিলিয়েছে বাঙাল-ঘটি, ভয় পেয়েছে হাওয়াই চটি” বা ‘‘ডার্বি বাতিল করে দে, মেয়েটাকে ফিরিয়ে দে’’।
এই সব রঙ মিলে গেলে কী রঙ হয়?
এই সব রঙ মিলে গেলে হয় প্রতিবাদের রঙ। যা আজ দেখল সল্টলেকের যুবভারতী চত্তরের বাইরের অংশ। সত্যিই কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নামলেন ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, মহমেডানের সমর্থকরা। আর তাঁদের সামলাতে হাজারে হাজারে পুলিশ। এই পুলিশের অভাবেই নাকি বাতিল করা হয় ডুরান্ড কাপ ২০২৪-এর ডার্বি। কারণ ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ম্যাচ দেখতে যে ৬০ হাজারের গ্যালারি ভরে যেত তা নাকি সামলানোর মতো পুলিশ নেই তাদের কাছে। কারণ শহরের বিভিন্ন জায়গায় চলছে প্রতিবাদ মিছিল, সভা। কিন্তু সকাল থেকেই যুবভারতীর সামনে দেখা গেল অন্য দৃশ্য। কাতারে কাতারে পুলিশ হাজির। আটকাতে হবে প্রতিবাদ।
এখানেই বড় ভুল করে ফেলল পুলিশ, প্রশাসন। যদি ম্যাচ হতে দেওয়া হত তাহলে হয়তো প্রতিবাদ থাকত ৬০ হাজারের গ্যালারির মধ্যেই। কিন্তু গ্যালারির প্রতিবাদ আটকাতে ডার্বি বাতিল করে যেই প্রতিবাদের রাস্তা খুলে দেওয়া হল তা কিন্তু ওই ৬০ হাজারের গ্যালারির কয়েকগুন বেশি। বাংলার আসল এবং সর্বোচ্চ শক্তি যে এই ফুটবল সমর্থকরা তা আরও একবার প্রমান হয়ে গেল। এভাবে যে প্রতিবাদ আটকানো যায় না তা প্রমান করে দিলেন তিন প্রধানের সমর্থকরা।
পুলিশ ফুটবল সমর্থকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করতে পিছপা হয়নি। পুরুষ, মহিলা নির্বিশেষে লাঠিচার্জ করা হয়। অনেককে তোলা হয় প্রিজন ভ্যানেও। গ্রেফতার হতে হয় তিন প্রধানের সমর্থকদের। তবুও প্রতিবাদের আওয়াজ বন্ধ করতে পারেনি। তা পারবে না পুলিশ, প্রশাসন প্রমাণ করে দিয়েছে সমর্থকরা।
এদিন বিকেল চারটে থেকেই জমায়েত হতে শুরু করে স্টেডিয়াম চত্তরে। বেলেঘাটা মোরে শুরু হয় প্রথম জমায়েত। আর সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়ে গোটা স্টেডিয়ামের চারদিকে। বাইপাসের দখল নেন ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, মহমেডানের সমর্থকরা। প্রশ্ন উঠছে, কিসের ভয়ে খেলা বন্ধ? এখানেই থেমে থাকেনি পুলিশ। সমর্থকদের ফোন করে প্রতিবাদে না যাওয়ার কথাও বলা হয় বিধাননগর পুলিশের তরফে। না, তাতেও লাভ হয়নি। এই প্রশাসন কি বুঝতে পারল ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান ও মহমেডান সমর্থকদের শক্তি?
পুলিশও একটি অডিও ক্লিপকে হাতিয়ার করছে। তাদের দাবি, একটি অডিও ক্লিপে বলা হয়েছে ডার্বিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা হবে এবং অ্যাসিড বম্ব নিয়ে যাওয়া হবে। আর সেই কারণেই নাকি ডার্বি বাতিল। তাহলে সেই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী জনতা কি এই প্রতিবাদে এল? তাদের কি খুঁজে পেল পুলিশ? নাকি সমর্থকদের প্রতিবাদের আওয়াজ বন্ধ করাটাই লক্ষ্য ছিল?
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার