অলস্পোর্ট ডেস্ক: আইএসএ ২০২৪-২৫-এর এই ম্যাচ ঘিরে যতটা আগ্রহ ছিল মহমেডান সমর্থকদের তার থেকে নিশ্চিত অনেকবেশি তাকিয়ে ছিলেন মোহনবাগান সমর্থকরা। যদিও এই ম্যাচ শেষেই ভারতীয় ফুটবলের সব থেকে বড় ম্যাচে নামতে চলেছিল ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান। আইএসএল-এর ফিরতি লেগের কলকাতা ডার্বি। যাকে একদিন আগেই এশিয়ার সেরা ডার্বি বলে চিহ্নিত করে গিয়েছিলেন জেমি ম্যাকলারেন, সঙ্গে এও বলেছিলেন, তাঁর খেলা সেরা ডার্বি এটাই। তবে তার আগে কলকাতা ফুটবলের চোখ ছিল কান্তিরাভা স্টেডিয়ামের দিক। যেখানে মুখোমুখি হয়েছিল বেঙ্গালুরু এফসি ও মহমেডান এসসি। অসম লড়াই হলেও ক্লাসের লাস্ট বয়ের কাছে আটকে গেল সেকেন্ড বয়। ৮৭ মিনিটের একটা মুহূর্ত খেলা ঘুরিয়ে দিল মহমেডানের দিকে। যেখান থেকে ফেরা প্রায় অসম্ভব ছিল বেঙ্গালুরুর জন্য। চেন্নাইয়ের ঘরের মাঠে চেন্নাই বধ করার পর বেঙ্গালুরুর ঘরে মাঠে বেঙ্গালুরু বধ করে ১১ ম্যাচ পর জয়ের মুখ দেখল কলকাতার তৃতীয় প্রধান।
মরসুমের শুরু থেকেই এই মহমেডানকেই দেখা গিয়েছে প্রায় সব ম্যাচেই। শুরু থেকে অসাধারণ ফুটবল খেলেছে দলটা। সে ঘরের মাঠে হোক বা অ্যাওয়ে ম্যাচে। তাও ১৫ ম্যাচ শেষে দলটা দাঁড়িয়ে লিগ টেবলের সবার নিচে। এখানেই অভিজ্ঞতার অভাবে ভুগছে সাদা-কালো ব্রিগেড। যা সব সময়ই বলে এসেছেন, মহমেডান কোচ চের্নিশভ। আইলিগের দল নিয়ে আইএসএল খেলতে নামলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। শনিবার বেঙ্গালুরু এফফসি তাদের ১৫তম ম্যাচে খেলতে নেমেছিল ২৮ পয়েন্ট নিয়ে। শীর্ষে থাকা মোহনবাগানের থেকে পাঁচ পয়েন্ট পিছনে। এই ম্যাচে যদি মহমেডান তাদের আটকে দিতে পারে তাহলে আরও অ্যাডভান্টেজে চলে যাবে মোহনবাগান। যে কারণেই এই ম্যাচ ডার্বির রাতেও মোহনবাগানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
এদিন প্রথম থেকেই অনেকটা সময় খেলা হল মাঝ মাঠে। প্রথমার্ধে মহমেডানের তেমন আক্রমণ না থাকলেও বেঙ্গালুরুর সুনীল ছেত্রীর নেতৃত্বে বার বার মহমেডান রক্ষণকে পরীক্ষার মুখে পড়তে হল। তাদের অবশ্য পরীক্ষায় পাশ করালেন একজনই। তিনি গোলকিপার পদম ছেত্রী। প্রথমার্ধেই প্রতিপক্ষের তিনটি নিশ্চিত গোলমুখি শট যেভাবে বাঁচালেন তাতে তিনি না থাকলে প্রথমার্ধেই একাধিক গোলে এগিয়ে যেতে পারল বেঙ্গালুরু এফসি। সেম সাইড গোল হজম থেকেও দলকে রক্ষা করলে তিনি। সেদিক থেকে দেখতে গেলে তেম খাটতে হল না গুরপ্রীত সিংকে। বরং অল্পের জন্য গোল হজম থেকে বাঁচলেন তিনি, যখন অ্যালেক্সিসের শট পোস্টের গা ঘেঁষে বাইরে চলে গেল।
গোলশূন্যভাবেই দুই দল দ্বিতীয়ার্ধে খেলতে নেমেছিল। শুরুর ৫০ মিনিট মহমেডানকে বার কয়েক আক্রমণে উঠতে দেখা যায়। কাসিমোভ, ফ্রাঙ্কা, বিকাশ সিংরা অন্তত একটা জয়ের জন্য প্রতিপক্ষ বক্সের সামনে ছটফট করতে থাকে। দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া একটা দলের আর কিইবা করার থাকতে পারে শুধু মরিয়া হয়ে জয়ের জন্য লড়াই করা ছাড়া। এদিন সেই লড়াইটাই দেখা গেল মহমেডানের খেলায়। খুব বেশি আক্রমণ না করলেও যখন সুযোগ এল তা থেকে গোল করে খেলা দখলে নিতে ভুল করেনি দল। ম্যাচের ৮৭ মিনিটে কাসিমোভের বক্সের বাইরে থেকে মাপা ফ্রিকিক গুরপ্রীতের ডানদিকর উপরের কোনা দিয়ে ঢুকে গেল জালে। ঝাঁপালেও বল ক্লিয়ার করতে পারেননি তিনি। এর পর মহমেডানের সামনে ছিল শুধুই গোল বাঁচানোর লড়াই। যাতে তাঁরা সফল। ১৫ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে হায়দরাবাদকে টেবলের সবার নিচে নামিয়ে ১২ নম্বরে উঠে এল মহমেডান। খেলার ফল মহমেডান ১, বেঙ্গালুরু ০।
মহমেডান: পদম ছেত্রী, জোডিংলিয়ানা, মহম্মদ ইরশাদ, জোহেরলিয়ানা, ভানলালজুডিকা, ফ্লোরেন্ত ওজির, কাসিমোভ, অ্যালেক্সিস, বিকাশ সিং, লালরেমসাঙ্গা, ফ্রাঙ্কা
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার