অলস্পোর্ট ডেস্ক: আর্থিক সমস্যায় জর্জরিত মহমেডান। গতমরশুমের বিদেশি ফুটবল ও কোচের বকেয়া মাইনে মেটাতে না পারার কারণে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ব্যানের কোপ নেমে এসেছিল মহমেডানের ঘাড়ে। ক্লাবের মূল ইনভেস্টার বাঙ্কারহিল চুক্তির শর্তপূরণ না হওয়ায় গত মরশুমের আইএসএলের মাঝে সম্পর্ক ছিন্ন করে সরে দাঁড়ানোয় সাদা কালো ব্রিগেড মুখ থুবড়ে পড়ে। সেসময় শ্রাচির তরফে মহমেডানের পাশে দাঁড়ানোর কথা বললেও, পরে তারাও নিজেদের প্রতিশ্রুতি পালন করেনি। তার ফল ভুগতে হয় ক্লাবকে।
গতমরশুমে একটা সময় এমন হয়েছিল, আইএসএলে দল নামাতে পারবেন না মহমেডান কর্তারা, মাইনে না পেলে ফুটবলাররা মাঠে নামতে অস্বীকার করায়। তাঁদের সেই মুহূর্তে বুঝিয়ে শুনিয়ে মাঠে নামানো সম্ভব হলেও, মরশুম শেষে ফুটবলাররা বকেয়া মাইনের দাবিতে সোচ্চার হন। মহমেডান কর্তারা তাঁদের মাইনে মেটাতে পারেননি ভাঁড়ে মা ভবানী অবস্থা থাকায়। কোচ-ফুটবলাররা এএফসি ও ফিফাতে অভিযোগ করলে, মহমেডানের ওপর ব্যানের খাঁড়া নেমে আসে।
সেই ব্যানের কারণে একঝাঁক ভাল ফুটবলারকে নতুন মরশুমের জন্য দলে নিলেও তাঁদের এখনও সই করাতে পারেনি মহমেডান। বারবার টাকার জন্য, নতুন স্পনসরের জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির দারস্থ হয়েছেন মহমডান কর্তারা। রাজ্যের অন্যান্য মন্ত্রী মারফত স্পনসর বা ইনভেস্টার জোগাড়ের চেষ্টা চালিয়েছেন। কিন্তু কেউই সাহায্যের হাত এগিয়ে দেয়নি। সেই সমস্যা নিয়েই কলকাতা লিগ, ডুরান্ড, এমনকি সুপার কাপে অংশ নিয়েছে মহমেডান। বিশেষ করে সুপার কাপে নিজেদের পকেটের টাকা খরচ করে বিমানে ফুটবলারদের গোয়া পাঠিয়ে তাঁদের থাকাখাওয়ার ব্যবস্থা করেন মহমেডান কর্তারা, তা যথেষ্ট প্রশংসনীয়।
তবে এবার আইএসএল খেলতে হলে, ভাঙাচোরা দল নিয়ে লড়াই করলে চলবে না। মহমেডান কর্তারা এটা ভালই জানেন। ইতিমধ্যেই একটা দাবি উঠেছে, আইএসএল হোক মহমেডানকে বাদ দিয়ে। কারণ তাদের ওপর ফিফা ও ফেডারেশনের ব্যান রয়েছে। আইএসএল সময়মতো শুরু হলে, মহমেডান দলে নামাতে পারত কিনা সন্দেহ। সেক্ষেত্রে তারা নিজেরাই হয়ত সরে দাঁড়াত ইনভেস্টার বা স্পনসর সময়মতো জোগাড় করতে না পারলে। আইএসএল পিছিয়ে যাওয়াটা মহমেডানের কাছে শাপে বর হয়েছে। তারা বাড়তি সময় পেয়েছে, বকেয়া মিটিয়ে ব্যান তুলতে। মহমেডান কর্তারা ব্যান তোলার জন্য জোরালো ভাবেই নড়েচড়ে বসেছেন। তাঁরা আবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির শরণাপন্ন হয়েছিলেন, আর্থিক সহযোগিতার জন্য। শোনা যাচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রী মহমেডান কর্তাদের কাছে নাকি জানতে চেয়েছিলেন, ব্যান তুলতে আপাতত ঠিক কত টাকা লাগবে? সেই টাকাটা যাতে জোগাড় হয়, তার জন্য নিজের ঘনিষ্ট মন্ত্রীদের নির্দেশ দিয়েছেন। সেইমতো আর্থিক সাহায্য আসতে শুরু করেছে।
মহমেডান সচিব ইস্তিয়াক(রাজু) আমেদ জানালেন, গত মরশুমের ফুটবলারদের বকেয়া মাইনে মেটানোর কাজ শুরু হয়েছে। সবটা একবারে সম্ভব নয়। অল্প অল্প করে মেটানো হচ্ছে ফুটবলারদের সঙ্গে কথা বলে। আশা করা যায়, কিছুদিনের মধ্যে ফুটবলারদের বকেয়া মিটিয়ে ব্যান তোলা সম্ভব হবে। তারপর যে ফুটবলারদের সঙ্গে কথা বলে রাখা হয়েছিল, তাদের সঙ্গে চুক্তিমতো অগ্রিম দিয়ে আইএসএলের জন্য নথিভুক্ত করে ফেলা সম্ভব হবে। আইএসএলে আমরা খেলবই।
আইএসএল জানুয়ারিতে শুরু হলে, মহমেডান খেলার সুযোগ পাবে, ব্যান উঠে গেলে, তবে লিগ টেবিলের ভাল জায়গায় থাকবে, এমন আশা করা যাচ্ছে না এখনই। কারণ তারা কী মানের ফুটবলার সই করাতে পারছে , সেটা এখনও পরিষ্কার না হওয়ায়। তার থেকেও বড় কথা, সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া নির্দেশমতো আইএসএলে প্রোমোশনের পাশাপাশি রেলিগেশন চালু হলে, মহমেডানের আইএসএলে টিঁকে থাকার কাজটা কঠিন হয়ে যাবে, বর্তমান স্ট্রেংথ নিয়ে। এখন মহমেডান অবনমনের হাত থেকে বেঁচে যেতে পারে, এক ভাল দল গড়ে দারুন খেলে, নইলে চলতি মরশুমে আইএসএল শুরুর স্বার্থে সুপ্রিম কোর্টকে রেলিগেশনের শর্ত আরোপ থেকে সরে আসতে রাজি করিয়ে।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন:ফেসবুক ও টুইটার





