Thursday, March 20, 2025
No menu items!
Google search engine
Homeআইএসএললিগ টেবিলের শেষ দুই দলের লড়াইয়ে হার মহমেডানের

লিগ টেবিলের শেষ দুই দলের লড়াইয়ে হার মহমেডানের

অলস্পোর্ট ডেস্ক: প্রথম লিগে চার গোলে জেতার পর মহমেডানকে ফিরতি লিগে ৩-১ গোলে হারিয়ে লিগ ডাবল করে ফেলল হায়দরাবাদ এফসি। শনিবার সন্ধ্যায় ঘরের মাঠে পয়েন্ট টেবলের শেষ দুই দলের মধ্যে ম্যাচ আকর্ষণীয় হয়ে উঠলেও দু’পক্ষের মধ্যে গোলের সুযোগ নষ্টের প্রতিযোগিতা চলে প্রায় সারাক্ষণই। দুই দলই অনেক সুযোগ পেলেও তার খুব কমই কাজে লাগাতে পারে।

শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে খেলা হায়দরাবাদকে ২৪ মিনিটের মাথায় এগিয়ে দেন ব্রাজিলীয় ফরোয়ার্ড অ্যালান পলিস্তা। বিরতির আগে সংযুক্ত সময়ে ফ্রি কিক থেকে অসাধারণ গোল করে ব্যবধান বাড়িয়ে নেন তরুণ ফরোয়ার্ড রামলুনচুঙ্গা। দ্বিতীয়ার্ধে ৭৮ মিনিটের মাথায় একটি গোল শোধ করেন মহমেডানের পরিবর্ত ফরোয়ার্ড মকান চোঠে। ম্যাচের শেষ মুহূর্তে দলকে তৃতীয় গোল এনে দেন হায়দরাবাদের পরিবর্ত ফরোয়ার্ড জোসেফ সানি।

মহমেডানের হয়ে এ দিন প্রচুর গোলের সুযোগ তৈরি করেন তাদের আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার অ্যালেক্সি গোমেজ। অনেকগুলি গোলের বলও সরবরাহ করেন সতীর্থদের। কিন্তু তাঁর চেষ্টাকে সফল করার মতো কাউকে পাননি তিনি। তাই হায়দরাবাদ জিতলেও এ দিন ম্যাচের সেরার পুরস্কার জিতে নেন গোমেজ। সারা ম্যাচে এ দিন আটটি শট গোলে রাখে মহমেডান, ১৩টি কর্নার আদায় করে নেয়। কিন্তু একটির বেশি গোল করতে পারেনি তারা।

এ দিন প্রথম দলে ছ’টি পরিবর্তন করেন মহমেডান কোচ মেহরাজউদ্দিন ওয়াডু। গোলে পদম ছেত্রীর জায়গায় খেলেন ভাস্কর রায়। অন্য দিকে হায়দরাবাদ এফসি দু’টির বেশি পরিবর্তন করেনি প্রথম এগারোয়। শুরু থেকেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয় দুই দলের মধ্যে। প্রথম দশ মিনিটের মধ্যে যেমন মহমেডানের মার্ক স্মেরবক ও অ্যালেক্সি গোমেজের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়, বিকাশ সিংয়ের শট ব্লক করা হয়, তেমনই হায়দরাবাদের সাই গদার্ড, আব্দুল রাবির গোলমুখী শট ব্লক করেন মহমেডান ডিফেন্ডাররা।

খেলা যত গড়ায় তত পরপর ব্যর্থ শটের প্রদর্শনী দেখা যায়। তবে ২২ মিনিটের মাথায় মহমেডানের প্রায় অবধারিত গোল বাঁচান হায়দরাবাদ গোলকিপার অর্শদীপ সিং। ফ্রাঙ্কার পাস থেকে বক্সের বাঁ দিক থেকে সোজা গোলে শট নেন স্মেরবক, যা আটকে দেন অর্শদীপ। পরের মিনিটেই প্রায় ৩৫ গজ দূর থেকে গোমেজের নেওয়া শট গোলের বাইরে চলে যায়।

হায়দরাবাদের অনবরত চেষ্টা শেষ পর্যন্ত সফল হয় ২৪ মিনিটের মাথায়, যখন সেন্টার লাইনের ওপার থেকে রফির পাঠানো উড়ে আসা বলে অসাধারণ শট নিয়ে জালে বল জড়ান অ্যালান পলিস্তা। বুক দিয়ে বল নামিয়ে গোলে শটটি নেওয়ার সময় পলিস্তাকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন অগিয়ে ও গৌরব বোরা। কিন্তু কেউই সফল হননি। এগিয়ে আসা ভাস্করের মাথার ওপর তোলা হাতে লেগে বল চলে যায় গোলে (১-০)।

এই গোলের পাঁচ মিনিট পরেই ছ’গজের বক্সের মধ্যে থেকে গোলে শট নেন পলিস্তা। কিন্তু এ বার দুর্দান্ত ক্ষিপ্রতার সঙ্গে তা আটকে দেন ভাস্কর। মহমেডান গোল শোধ করার চেষ্টা চালিয়ে যায়। কিন্তু তাদের গোলের সুযোগকে গোলে পরিণত করতে না পারার সমস্যা এ দিনও ভোগায় সাদা-কালো বাহিনীকে। ৩১ ও ৩৭ মিনিটের মাথায় গোমেজের গোলমুখী শট সোজা গোলকিপারের হাতে জমা হয়ে যায়।

প্রথমার্ধের সংযুক্ত সময়ের প্রথম মিনিটে ফের গোল করে ব্যবধান বাড়িয়ে নেয় হায়দরাবাদ। এ বার মহমেডানের বক্সের ঠিক সামনে থেকে নেওয়া অসাধারণ ফ্রি কিক থেকে সোজা জালে বল জড়িয়ে দেন তাদের তরুণ ফরোয়ার্ড রামলুনচুঙ্গা। ভাস্করের বলে হাত লাগাতে পারলেও তিনি আটকাতে পারেননি (২-০)। প্রথমার্ধে হায়দরাবাদের চেয়ে বেশি শট নেন মহমেডানের খেলোয়াড়রা। দুই দলই তিনটি করে শট গোলে রাখে। কিন্তু হায়দরাবাদ দু’টি শটকে গোলে পরিণত করতে পারলেও মহমেডান বরাবরের মতো ব্যর্থ হয়।

দ্বিতীয়ার্ধেও শুরুতেও তাদের এই দুর্বলতা ফের দেখা যায়। ৪৮ মিনিটের মাথায় প্রতিপক্ষের বক্সের মধ্যে জোহেরলিয়ানাকে প্রায় গোলের বল সাজিয়ে দেন গোমেজ। কিন্তু বক্সের মাঝখান থেকে গোলের বাইরে বল পাঠান তিনি। গোমেজ এ দিন ঘন ঘন আক্রমণে উঠে গোলের সুযোগ তৈরি করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁর তৈরি সুযোগের সদ্ব্যবহার করার মতো কোনও সতীর্থকে পাননি। কোনও পক্ষেরই রক্ষণ তেমন শক্তিশালী নয়। তাই এই ম্যাচে অ্যাটাকারদের দাপট ছিল দেখার মতো। ফলে দুই গোলকিপারই এ দিন বেশ চাপে ছিলেন।

সতীর্থদের গোলের বল জুগিয়েও কাজ হচ্ছে না দেখে ৫৫ মিনিটের মাথায় প্রায় ৪০ গজ দূর থেকে সোজা গোলে শট নেন গোমেজ। এ বারও অসাধারণ দক্ষতায় ডানদিকে ঝাঁপিয়ে তা আটকে দেন অর্শদীপ। গোল পাওয়ার জন্য ৬৬ মিনিটের মাথায় মনবীর সাইনিকে নামায় মহমেডান, মাঠ ছাড়েন মহম্মদ ইরশাদ। তবে মনবীর নামার পরেও আক্রমণে তীব্রতা বাড়াতে পারেনি মহমেডান। তাই বিকাশের জায়গায় মকান চোঠেকে নামায় তারা এবং তিনি মাঠে নামার দু’মিনিটের মধ্যেই গোল পেয়ে যান।

অ্যালেক্সি গোমেজের কর্নারে দুর্দান্ত ব্যাক ফ্লিকে কঠিনতম কোণ থেকে গোলে বল পাঠিয়ে দেন চোঠে (২-১)। এর আগেই গোমেজের অসাধারণ ও তীব্র গতির এক দূরপাল্লার শট কোনও রকমে আটকান অর্শদীপ। তাঁর হাত থেকেই গোললাইনের বাইরে বল যাওয়ায় কর্নার পায় মহমেডান এবং সেই কর্নার থেকেই প্রথম গোল পায় তারা।

দু’গোলে এগিয়ে থাকা হায়দরাবাদ অবশ্য দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই ব্যবধান বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যায়। দ্বিতীয়ার্ধে কলকাতার দলের আক্রমণের ধারই ছিল বেশি। ৬১ মিনিটের মাথায় রফির ক্রস থেকে গোলের সুযোগ পান অ্যালান আলবা। কিন্তু তিনি গোলের বাইরে শট নেন। ৭২ মিনিটের মাথায় রফির শটও অল্পের জন্য বাইরে চলে যায়।

সমতা আনার উদ্দেশে নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার দু’মিনিট আগে ডিফেন্ডার আদিঙ্গার জায়গায় অ্যাটাকিং মিডপিল্ডার লালরেমসাঙ্গাকে মাঠে নামায় মহমেডান। ৯০ মিনিটের মাথায় সুযোগও পেয়ে যায় তারা। ডানদিক থেকে গোমেজের ক্রস থেকে গোলের সুযোগ পান জোহেরলিয়ানা। কিন্তু তিনি গোলকিপারের হাতে বল তুলে দেন। সংযুক্ত সময়ে বাঁ দিক থেকে অ্যাডিসন সিংয়ের ক্রসে বক্সের মধ্যে ডানদিক থেকে গোলে কোণাকুনি শট নেন রেমসাঙ্গা। এ বারও তা আটকে দেন গোলকিপার অর্শদীপ।

তবে ম্যাচের একেবারে শেষে জোসেফ সানি যে ভাবে ওয়ান টু ওয়ান পরিস্থিতিতে অসহায় ভাস্করকে সামনে পেয়েও যে ভাবে সাইড নেটে শট নেন, তা হয়তো তিনি নিজেও ভাবতে পারেননি। তবে এর দু’মিনিটের মধ্যে সেই ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করেন তিনি এবং দলকে তৃতীয় গোল এনে দেন। পলিস্তার অ্যাসিস্টে বক্সের মধ্যে থেকে এই গোলটি করে দলের তিন পয়েন্ট সুনিশ্চিত করে ফেলেন তিনি (৩-১)।

মহমেডান এসসি দল (৪-৩-৩): ভাস্কর রায় (গোল), জো জোহেরলিয়ানা, গৌরব বোরা, ফ্লোরেন্ট অগিয়ে, আদিঙ্গা, অ্যালেক্সি গোমেজ, মহম্মদ ইরশাদ, লালরিনফেলা, বিকাশ সিং, মার্ক স্মেরবক, কার্লোস ফ্রাঙ্কা।

(লেখা আইএসএল ওয়েব সাইট থেকে)

খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com

অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments