সুচরিতা সেন চৌধুরী: আইএসএল ২০২৪-২৫ লিগ টেবলের শীর্ষে মোহনবাগান পৌঁছে গিয়েছিল জামশেদপুর ম্যাচ জয়ের সঙ্গেই। তবে গোল পার্থক্যে এই মুহূর্তে লিগ টেবলের এক ও দুই নম্বর জায়গার রদ-বদল হচ্ছে ম্যাচের সঙ্গে সঙ্গেই। ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে বেঙ্গালুরু এফসি। মহমেডানের সঙ্গে জিতে গত ম্যাচে আবার শীর্ষে ফিরে গিয়েছে বেঙ্গালুরু। শনিবার যদি মোহনবাগান ঘরের মাঠে চেন্নাইকে হারিয়ে দেয় তাহলে গোল পার্থক্যে আবার শীর্ষে পৌঁছে যাবে, এই লক্ষ্য নিয়েই এদিনের ম্যাচ খেলতে নেমেছিল মোহনবাগান। আর সেই লক্ষ্যে সফল সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। ৮৫ মিনিটে নেমেই ৮৬ মিনিটে গ্রেগের শট ক্রসবারে লেগে না ফিরলে তখনই এগিয়ে যেতে পারত মোহনবাগান। তবে বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি। পরের মিনিটেই গ্রেগ স্টুয়ার্টের পাস থেকে কামিন্সের অনবদ্য ফিনিশেই লেখা হয়ে গেল ম্যাচের ভাগ্য। শেষ মুহূর্তে আবারও স্টুয়ার্টের শট পোস্টে লেগে ফিরল। স্টুয়ার্ট নামার পর থেকে ১১ মিনিটের একটা ঝড় দেখল যুবভারতী।
এদিন শুরুতে সেই চেনা মোহনবাগানকে পাওয়া যায়নি। যদিও আগের দিন সাংবাদিক সম্মেলনে বেশ আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছিল মোহনবাগান কোচ হোসে মোলিনাকে। কিন্তু ম্যাচের শুরুতে তার প্রতিফলন দেখা গেল না। ৩০ মিনিট পর্যন্ত মোলিনার দলকে বেশ ছন্নছাড়া দেখাল। আর তখনই খেলাটা ধরার চেষ্টা করল প্রতিপক্ষ চেন্নাইয়ন এফসি। তবে ফিনিশিংয়ের অভাবে ভুগল দুই দলই। প্রথমার্ধের শেষের ১৫ মিনিটে একাধিকবার গোলের সুযোগ তৈরি করল মোহনবাগান। কিন্তু কাজের কাজ কিছু হল না। তবে এই ম্যাচে যেন নিজেকে খুঁজে পেলেন লিস্টন কোলাসো।
২৭ মিনিটে মাঝ মাঠ থেকে উড়ে আসা বল ধরে যেভাবে প্রতিপক্ষের ডিফেন্ডারকে কাঁধে নিয়ে গোলের মুখে দিমিত্রিকে লক্ষ্য করে বল রাখলেন মনভীর সিং, তাতে গোল না করতে পারাটাই অপরাধ। এর পর ৩৭ ও ৩৯ মিনিটে পর পর লিস্টন কোলাসোর গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠাও দেখা গল। ডি-এর বাইরে থেকে লিস্টনের জোড়াল শট দক্ষতার সঙ্গে বাঁচালেন চেন্নাই গোলকিপার মহম্মদ নওয়াজ। এর পরেরটাও নিশ্চিত সুযোগ ছিল। বাঁদিক থেকে বক্সের মধ্যে থাকা মনভীরকে বল বাড়িয়েছিলেন সেই লিস্টন কিন্তু ফিনিশিংয়ের সমস্যায় ভোগাটা অব্যহত থাকল। সঙ্গে আইএসএল-এ এই মরসুমে এখনও পর্যন্ত সব থেকে বেশি হলুদ কার্ড দেখার রেকর্ডেও নাম লিখিয়ে ফেলল সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। কার্ড সমস্যায় পরের ম্যাচে নেই শুভাশিস বোস।
দ্বিতীয়ার্ধে সাধারণত খেলার পরিবর্তন হয়। কিন্তু এদিন যেন তারও কোনও লক্ষণ দেখা গেল না। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে যেভাবে আবারও গোল নষ্ট হল তার খেসারত দিতেই হত। গোলের জন্য ঝাঁপালেন সকলেই। তাতে রক্ষণের শুভাশিস বা আশিস রাইও পিছিয়ে থাকলেন না। কিন্তু গোল এল না। বরং মোহনবাগানের আক্রমণ দক্ষতার সঙ্গে সামলালেন চেন্নাই ডিফেন্ডাররা। ৭৮ মিনিটে চকিতে মোহনবাগান গোল লক্ষ্য করে যেভাবে শট নিয়েছিলেন ইরফান তাতে গোলের নিচে বিশাল না থাকলে বিপদ হতেই পারত। উল্টোদিকেও এই একই কথা প্রযোজ্য। ৮৩ মিনিটে কামিংসের নিশ্চিত গোলের শট দারুণ দক্ষতায় বাঁচালেন নওয়াজ। তবে শেষ রক্ষা হল না। মোহনবাগানের ভাগ্য ফিরল ৮৭ মিনিটে দুই পরিবর্ত স্টুয়ার্ট ও কামিংসের দক্ষতায়। যার ফল ১-০ গোলে চেন্নাইয়নকে হারিয়ে লিগ টেবলের শীর্ষে পৌঁছে গেল মোহনবাগান।
মোহনবাগান: বিশাল কাইথ, দীপেন্দু বিশ্বাস (আশিস রাই), মাইকেল আলড্রেড, আলবার্তো রডরিগেজ, শুভাশিস বোস, লিস্টন কোলাসো (আশিক কুরুনিয়ান), দীপক টাংরি (সাহাল আব্দুল সামাদ), আপুইয়া, মনবীর সিং, দিমিত্রি পেত্রাতোস (গ্রেগ স্টুয়ার্ট), জেমি ম্যাকলারেন (জেসন কামিন্স)
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার