সুচরিতা সেন চৌধুরী: যেমনটা ভাবা হয়েছিল, তেমন মোহনবাগানকেই পাওয়া গেল ডুরান্ড কাপ ২০২৪-এর প্রথম ম্যাচে। কাশ্মীরের অনামী দল ডাউনটাউন হিরোজের বিরুদ্ধে মোহনবাগানকে ১০-এর মধ্যে কত নম্বর দেওয়া যাবে, সে হিসেব নাই বা করলাম। তবে গোল না হলে শূন্য বাধা ছিল তাদের জন্য। প্রথমার্ধে ডাউন টাউনের কিছু আধা সুযোগ তৈরি হলেও মোহনবাগানের ভাড়ার শূন্য। এদিন এক ফরোয়ার্ডে দল সাজিয়েছিলেন কোচ বাস্তব রায়। তবে টিম লিস্টে মোহনবাগানের কোচের জায়গা ফাঁকাই ছিল প্রথম ম্যাচে। মাঠে অবশ্য দেখা গেল তাঁকে। সাইড লাইনে দাঁড়িয়ে দলকে নির্দেশও দিচ্ছিলেন। আগের দিন সাংবাদিক সম্মলনে তিনি অবশ্য বলেই দিয়েছিলেন প্রথম দুটো ম্যাচই তাঁর দায়িত্ব। তার পর চলে আসবেন হোসে মোলিনা। তার আগে কতটা আশার আলো দেখাতে পারল তার দল তা একটা গোল দিয়ে বিচার করা সম্ভব নয়। তবুও সুহেল ভাটের গোল ম্যাচের একমাত্র আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠতে পারে।
শনিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে উদ্বোধন হয়ে গেল ১৩৩তম ডুরান্ড কাপের। প্রথম ম্যাচেই মুখোমুখি হয়েছিল মোহনবাগান ও ডাউনটাউন। গোলশূন্য ম্যাচে দুই দলের খেলায় বলার মতো কিছুই হল না। দেখে মনে হবে একটা বল আর তার ২২ জন দাবিদার। সবাই যে যার মতো সেটা পেতে দৌঁড়ে বেড়াচ্ছে। কিন্তু সেটা পেতে যে কী করতে হবে তা কেউ জানে না। তাই পায়ের নাগালে পেয়েও অনেক সময় তা ধরতে পারছেন না। তাও কিছুটা বল ধরে আক্রমণে উঠতে দেখা গেল ডাউনটাউনকে। মোহনবাগান তৈরি নয় সেটা আরও একবার স্পষ্ট হয়ে গেল। এটা ঠিক, দল গুছিয়ে নেওয়ার আগেই দলকে নেমে পড়তে হয়েছে।
৩৫ মিনিটে তাদের লাইবেরিয়ান বিদেশি দারিয়াস পারউড যেভাবে মোহনবাগানের রক্ষণকে কাটিয়ে বক্সে পৌঁছে গিয়েছিলেন তাতে গোল প্রায় নিশ্চিত মনে হয়েছিল। কিন্তু অল্পের জন্য গোলের মুখ খুলতে ব্যর্থ হন তিনি। প্রায় পোস্টের গা ঘেঁষেই বাইরে যাওয়া বলকে তালুবন্দি করেন মোহনবাগান গোলকিপার বুখারি। প্রথমার্ধে আর বলার মতো তেমন কিছু নেই। বরং দ্বিতীয়ার্ধে গোল করে ম্যাড়ম্যাড়ে ম্যাচে কিছুটা রঙ আনলেন মোহনবাগানের সুহেল ভাট।
৭৩ মিনিটে যে গোলের মুভ দেখা গেল মোহনবাগান প্লেয়ারদের মধ্যে তা প্রশংসার যোগ্য। বক্সের বাইরে থেকে আশিস রাইকে লক্ষ্য করে সেন্টার করছিলেন টাইসন সিং। সেই বল ধরে বক্সের ঠিক উল্টোদিক থেকে উঠে আসা সুহেলকে গড়ানে পাস বাড়ান আশিস। সেই বল গোলে রাখতে ভুল করেননি দলের একমাত্র ফরোযার্ড। মোহনবাগানের এই মুভে কিছুটা ছন্নছাড়া হয়ে গিয়েছিলেন ডাউনটাউনের রক্ষণ। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ডুরান্ড কাপ জয় দিয়েই শুরু করে দিল সবুজ-মেরুন ব্রিগেড।
জয় তো এল, তবে এদিন মোহনবাগানের টিম লিস্ট দেখলে হতাশ হতেই হবে। ১১ জন নামাতে পেরেছিল দল ঠিকই কিন্তু রিজার্ভে ছিলেন মাত্র চার জন প্লেয়ার। তার মধ্যে ডিফেন্ডার দীপেন্দু বিশ্বাসের আবার চোট। আর এক জন গোলকিপার। থাকল পড়ে দুই। সুমিত রাঠি চোট পেয়ে মাঠ ছাড়লে সৌরভকে আর গোলকিপার ভুখারির চোট হওয়ায় ধীরজকে নামাতে বাধ্য হলেন কোচ। কলকাতা লিগের জড়তা কাটিয়ে ডুরান্ডের শুরুটা জয় দিয়েই করে ফেলল মোহনবাগান। গ্যালারি থেকে চির শত্রুদের মেপে গেলেন ইস্টবেঙ্গল কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত। তবে ১৮ অগস্টের ডার্বির আগে এই মোহনবাগান দলে অনেক বদল আসবে।
মোহনবাগান: জাহিদ হোসেন বুখারি (ধীরজ সিং), সুমিত রাঠি (সৌরভ ভানওয়াল), থমাস আলড্রেড, রাজ বাসফোর, আশিস রাই, গ্লেন মার্টিন্স, অভিষেক সূর্যবংশী, টাইসন সিং, রবি বাহাদুর রানা, সালাউদ্দিন, সুহেল ভাট
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার