অলস্পোর্ট ডেস্ক: আর মাত্র একটা ম্যাচ। সেই ম্যাচে জয় তুলে নিলেই লিগশিল্ড চলে আসবে হাতের মুঠোয়। তাহলে ঘরের মাঠেই পর পর দু’বছর এই সাফল্য উদযাপন করতে পারবে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। হোসে মোলিনা জমানায় পুরো মরসুমটাই দাঁপিয়ে খেলছে মোহনবাগান দল। সে তার বিদেশি হোক বা স্বদেশি, এমন কী বাঙালির আকালের মধ্যেও তাঁর কোচিংয়ে উঠে এসেছেন দীপেন্দুদের মতো জুনিয়ররা। ঠিক যেটা গত মরসুমে ইস্টবেঙ্গলে করেছিলেন কার্লেস কুয়াদ্রাত। কিন্তু তাঁর ভাগ্য ভাল ছিল না। মরসুমের শুরুতে পর পর ম্যাচ হেরে বিদায় নিতে হয়েছিল তাঁকে। এদিকে মরসুমের শুরু থেকেই হাবাসকে সরিয়ে মোহনবাগানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল মোলিনাকে। প্রথম থেকে দলকে হাতে পেয়ে নিজের মতো গড়ে নিতে পেরেছিলেন তিনি। সঙ্গে ছিল ভাগ্যও। ড্রেসিংরুমের গুডমুড আর মাঠের নিয়মানুবর্তিতা সঙ্গে চ্যাম্পিয়নশিপের স্বপ্ন, সব যখন এক প্লেটে সাজানো যায় তখন সাফল্য আসে। যার জ্বলজ্যান্ত প্রমাণ মোহনবাগান। শনিবার কেরালার ঘরের মাঠে কেরালাকে ৩-০ গোলে হারিয়ে ঘরের মাঠে লিগশিল্ডের ম্যাচে নামবে তারা।
এদিনের শুরুটা কিন্তু ঘরের মাঠে নিজেদের দখলেই রেখেছিল কেরালা। প্রথম ১২ মিনিট মোহনবাগানকে রীতিমতো চাপে রাখল কেরালা ব্লাস্টার্স। এর পর থেকেই ধিরে ধিরে খেলায় ফেরে মোহনবাগান। যার ফল ২৮ মিনিটেই এগিয়ে যায় সবুজ-মেরুন ব্রিগেড কিছুটা খেলার গতির বিপরিতে গিয়েই। বাঁদিকে বল ধরে প্রতিপক্ষের দুই প্লেয়ারকে কাটিয়ে ম্যাকলারেনকে লক্ষ্য করে বল বাড়িয়েছিলেন লিস্টন কোলাসো। ততক্ষণে ছ’গজ বক্সের কাছে পৌঁছে গিয়েছেন এই অজি স্ট্রাইকার। আর সেই চলতি বলেই তাঁর হালকা টোকা কেরালার গোলে চলে যাওয়া আটকাতে পারেনি গোলকিপার সচিন। এগিয়ে গিয়ে আক্রমণে জোড় বাড়াতে শুরু করে মোলিনার ছেলেরা।
প্রথমার্ধেই দলের ও নিজের দ্বিতীয় গোলটি তুলে নেন ম্যাকলারেন। এবারও খেলার গতির বিপরিতে গিয়ে। তার আগে বেশ কয়েকটি ফ্রিকিক তুলে নিয়েছিল কেরালা। কিন্তু তা থেকে গোলের মুখ খুলতে পারেনি হোম টিম। বরং ম্যাচের ৪০ মিনিটে আরও একটি গোল হজম করে বসল তারা। প্রায় মাঝ মাঠ থেকে একটা ভলি উড়ে এসেছিল ম্যাকলারেনের কাছে। বক্সের বাইরে সেই বল ধরে এগিয়ে আসা প্রতিপক্ষ গোলকিপারের মাথার উপর দিয়ে বলকে পাঠিয়ে দেন গোলে। প্রথমার্ধ ২-০ গোলে এগিয়ে শেষ করে মোহনবাগান।
দ্বিতীয়ার্ধ আরও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে শুরু করে সবুজ-মেরু। অন্যদিকে ঘুরে দাঁড়ানোর একটা চেষ্টা করে হোম টিম। একটা সময় বল পজেশনে এগিয়েও গিয়েছিল কেরালা কিন্তু গোলের মুখ খুলতে পারেনি। যা রেকর্ড পঞ্চম ক্লিনশিট রাখতে সাহায্য করল মোহনবাগানকে। এদিনই ম্যাচের আগে মাসের সেরা ফুটবলারের পুরস্কার পেয়েছিলেন মোহনবাগান গোলকিপার বিশাল কাইথ। আর সেটা যে ভুল ছিল না তা আরও একবার প্রমাণ করে দিলেন তিনি। তবে এদিন একবার শুভাশিসকে গোললাইন সেভও করতে হল। অনেকদিন পর মোহনবাগান রক্ষণের বাধন চোখে পড়ল। আর এর মধ্যেই মোহনবাগানের হয়ে তৃতীয় গোলটি করে গেলেন রডরিগেজ। এই নিয়ে মরসুমে পাঁচ গোল হয়ে গেল তাঁর।
প্রাথমিকভাবে মোহনবাগানের গোলমুখি শট আটকে গিয়েছিল কেরালা বক্সে। কিন্তু তারা ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হন। আর সেই বলই পায়ে এসে পড়ে রডরিগেজের। চলতি বলে তাঁর বাঁ পায়ের শট চলে যায় গোলে। ৬৬ মিনিটে ৩-০ গোলে এগিয়ে যায় মোহনবাগান। তার পরই চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন মনবীর সিং। তাঁর জায়গায় নামেন কেরালার ছেলে আশিক কুরুনিয়ান। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে বেশ কিছু পরিবর্তন করেন মোলিনা। যদিও গোলের ব্যবধান আর বাড়েনি।
মোহনবাগান: বিশাল কাইথ, শুভাশিস বোস, টম আলড্রেড, রডরিগেজ, দীপেন্দু বিশ্বাস, লিস্টন কোলাসো (অভিষেক সূর্যবংশী), দীপক টাংরি (সুহেল ভাট), আপুইয়া, মনবীর সিং (আশিক কুরুনিয়ান), জেমি ম্যাকলারেন, জেসন কামিন্স (দিমিত্রি পেত্রাতোস)
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার