অলস্পোর্ট ডেস্ক: ৭৮ মিনিটের পরিবর্তনেই বাজিমাত করলেন হোসে মোলিনা। যখন তিনি নামিয়ে দিলেন দিমিত্রিকে। তার পর ম্যাচ গড়াল নির্ধারিত সময়ের গণ্ডি পেরিয়ে অতিরিক্ত সময়ে। নয় মিনিটের অতিরিক্ত সময়।ঘড়ির কাটা মনে মনে মিলিয়ে নিলেন ওড়িশা গোলকিপার। শিল্ড আর মোহনবাগানের মধ্যে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ওড়িশা গোলকিপার অমরিন্দর সিংই। ৯০ মিনিটের গণ্ডি পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত এদিনই অফিশিয়ালি লিগ শিল্ড লেখা হয়ে গেল মোহনবাগানের নামের পাশে। ততক্ষণে ১০ জনে হয়ে গিয়েছে ওড়িশা। আর সেই সুযোগ নিয়েই বাজিমাত করল মোহনবাগান। ৯৩ মিনিটে ওড়িশা গোলের সামনে অমরিন্দরের কঠিন পাঁচিল ভাঙলেন দিমিত্রি। এদিন ১০১ মিনিট ফুটবল খেলল দুই দল। ৫৭ হাজারের গ্যালারির হুঙ্কারে গমগম করল গোটা চত্তর। ১-০ গোলে জিতে লিগ শিল্ড নিশ্চিত করেই থামল মোহনবাগান।
শনিবার এফসি গোয়া জিতে যাওয়ায় রবিবার ওড়িশার বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে ম্যাচ ছিল মাস্ট উইন যদি শিল্ড লক করতে হত। পুরো ৯০ মিনিট পর্যন্ত মনে হচ্ছিল অপেক্ষা করতে হবে আরও একটা ম্যাচ। কিন্তু না, একরাশ স্বপ্ন নিয়ে গ্যালারি ভরানো সমর্থকদের হতাশ করেনি মোহনবাগান। এদিন খেলতে নামার আগে সপ্তাহের সেরা গোলের পুরস্কার পেলেন ম্যাকলারেন। তাঁর সঙ্গে গ্রেগ স্টুয়ার্টকে রেখে আক্রমণ সাজিয়েছিলেন হোসে মোলিনা। দিমিত্রি, কামিন্সকে বেঞ্চে বসতে হয়েছিল শিল্ড জয়ের ম্যাচে। তবে সেই তুরুপের তাসকেই তিনি ব্যবহার করলেন নির্ধারিত সময়ের শেষ ১২ মিনিট আর অতিরিক্ত সময়ের নয় মিনিট। আর তাতেই বাজিমাত।
এদিন শুরু থেকেই আক্রমানাত্মক ছিলেন মোলিনার ছেলেরা। কখনও মনবীর তো কখনও লিস্টন। জেমি ম্যাকলারেন তো একাধিক নিশ্চিত গোলের সুযোগ তৈরি করলেন কিন্তু ওড়িশার গোলের নিচে যে রয়েছেন অমরিন্দর। ওড়িশাও প্রথমার্ধে বেশ কিছু সুযোগ তৈরি করল কিন্তু তাতে সেই জোড় ছিল না। ১৬ মিনিটে মনবীরের নিশ্চিত গোলের সুযোগ দক্ষতার সঙ্গে বাঁচালেও সেই বল নিজের দখলে রাখতে পারেননি অমরিন্দর। ফিরতি বলে গোল পেতেই পারতেন দীপক টাংরি। ২০ মিনিটে হুগো বুমৌসের বল নিয়ে দৌঁড় শেষ হয়েছিল রাহুল কেপির জন্য বল ভাসিয়ে কিন্তু ভাল জায়গায় সেই বল দখলে নিতে পারেননি তিনি।
শুরু থেকেই মোহনবাগানের আক্রমণাত্মক মানসিকতা দেখে রক্ষণকে সারাক্ষণ কাজে লাগিয়ে রেখেছিলেন কোচ সার্জিও লোবেরা। ৩২ মিনিটে ম্যাকলারেনের গোলমুখি শট আটকে দেন অমরিন্দর। শেষ পর্যন্ত তা কর্নারের বিনিময়ে ক্লিয়ার করে ওড়িশাা রক্ষণ। প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে মোহনবাগানের এগিয়ে যাওয়ার নিশ্চিত সুযোগ আবারও আটকে দেন অমরিন্দর। এবার পর পর দু’বার। ৬০ মিনিটে মনবীর যে সুযোগ মিস করলেন সেটার জন্য এদিন তাঁর রাতের ঘুম উড়ে যেতে পারে। গ্রেগের থেকে মাপা পাস একদম তিনগজ বক্সের সামনে ধরেও শট নিতে পারলেন না। অমরিন্দর তখন জায়গায় ছিলেন না। একটা। হালকা টোকাতেই গোলের মুখ খুলে ফেলতে পারত মোহনবাগান।
দু’মিনিটের মধ্যে পর পর দু’বার সুযোগ পেয়ে গিয়েছিল ওড়িশাও। হুগো বুমৌসের ফ্রিকিক থেকে। কিন্তু মোহনবাগানের গোলের নিচেও তো বিশাল কাইথ রয়েছেন। ক্লিনশিটে যিনি রেকর্ড করে ফেলেছেন। এর পর দীপক টাংরির গোলমুখি শট বাঁচালেন মুর্তাদা ফল। জায়গায় কোনও ডিফেন্ডার না থাকায় তাঁকে কিছুটা বিরক্তও দেখাল। ৭৮ মিনিটে এক সঙ্গে তিনটি পরিবর্তন করলেন মোহনবাগান কোচ হোসে মোলিনা। ৮৩ মিনিটে ম্যাকলারেনকে বক্সের বাইরে ফাউল করে রেড কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লেন মুর্তাদা ফল।ডি-এর মধ্যে ফ্রিকিক পেল মোহনবাগান। তবে তা কাজে লাগল না। চতুর্থ রেফারি জানিয়ে দিলেন ৯ মিনিটের অতিরিক্ত সময়। একটু যেন। বিচ্যুত হয়ে পড়েছিলেন অমরিন্দর। সেই সুযোগেই দিমির বাঁ পায়ের শট বাঁক খেয়ে ঢুকে গেল ওড়িশা গোলে। লেখা হয়ে গেল পর পর দু’বার লিগ শিল্ড জয়ের ইতিহাস।
মোহনবাগান: বিশাল কাইথ, শুভাশিস বোস, টম আলড্রেড (দিমিত্রি পেত্রাতোস), আলবার্তো রডরিগেজ, আশিস রাই (অনিরুদ্ধ থাপা), লিস্টন কোলাসো, আপুইয়া, দীপক টাংরি (দীপেন্দু বিশ্বাস), মনবীর সিং, গ্রেগ স্টুয়ার্ট (জেসন কামিন্স), জেমি ম্যাকলারেন
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার