অলস্পোর্ট ডেস্ক: আইএসএল-এর ইতিহাসে হোসে মোলিনা কখনও পর পর দুই ম্যাচে হারের মুখ দেখেননি। সেই ইতিহাসে আস্থা রেখেই বৃহস্পতিবার পঞ্জাব এফসির বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিল মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। টানা আট ম্যাচে অপরাজিত থেকে আইএসএল ২০২৪-২৫ টেবল শীর্ষে থাকা সবুজ-মেরুন ব্রিগেডকে গত ম্যাচেই এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে হারের মুখ দেখতে হয়েছে। সে কারণে পঞ্জাব ম্যাচ মোহনবাগানের কাছে অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সেই লক্ষ্যেই এদিন নেমেছিলেন শুভাশিসরা। যদিও চোট আঘাতের সমস্যা রয়েছে একাধিক। তার মধ্যেই প্রথমার্ধে পিছিয়ে পড়া দলটা খেলায় ফিরল দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে। ভাগ্য খারাপ পঞ্জাব এফসিরও। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ১০ জনে হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি প্রতিপক্ষকে পেনাল্টিও উপহার দিয়ে বসল। দুটো সিদ্ধান্ত নিয়েই দ্বিমত থাকতে পারে। তবে যে কোনও খেলায় শেষ কথা বলে ফলাফল, আর সেখানে ৩-১ গোলে জিতে লিগ টেবলের শীর্ষ স্থান আরও পোক্ত করল মোহনবাগান।
শুরু থেকেই এদিন দাপটের সঙ্গে খেলতে শুরু করে পঞ্জাব। যার ফল ম্যাচের তিন মিনিটেই নিখিল প্রভুর শট ক্রসবারে লেগে না ফিরলে তখনই এগিয়ে যেতে পারত হোম টিম। তবে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি পঞ্জাবকে। ১২ মিনিটেই প্রায় আশিস রাইকে কাঁধে নিয়েই মোহনবাগানের জালে বল জড়ালেন রিকি শাবং। মোহনবাগানের পুরো রক্ষণ বিভাগকেই এই সময় অকেজ দেখাল। পিছিয়ে পড়ে লড়াইয়ে ফেরার চেষ্টা শুরু করে দল। তার মধ্যেই চারটি হলুদ কার্ড দেখে পরের ম্যাচ নেই আপুইয়া। অনেক না থাকার মধ্যে আরও একটি সংযোজন চিন্তায় রাখবে মোলিনাকে।
মোহনবাগান প্রথমার্ধ শেষ করে ০-১ গোলে পিছিয়ে থেকেই। দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর তিন মিনিটের মধ্যেই অবশ্য সমতায় ফেরে মোলিনার দল। জেসন কামিন্সের কর্নার থেকে হেডে প্রতিপক্ষের জালে বল জড়ান ডিফেন্ডার রডরিগেজ। সমতায় ফেরে মোহনবাগান। এর পরই জোড়া হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাাড়তে হল পঞ্জাবের পুলগা ভিদালকে। যদিও দ্বিতীয় হলুদ কার্ডটা না দেখালেও কিছু বলার থাকত না। এগিয়ে গিয়েও ব্যাকফুটে চলে যায় পঞ্জাব এফসি। একজন প্লেয়ার কম নিয়ে খেলা এমনিতেই মানসিকভাবে বড় ধাক্কা যে কোনও দলের জন্য। এর পরই যেন ম্যাচের রাশ পুরোপুরি চলে আসে মোহনবাগানে দখলে। যার ফল দ্বিতীয় গোল করে ২-১ গোলে এগিয়ে যায় দল।
পেনাল্টি পাইয়ে দিয়েছিলেন অনিরুদ্ধ থাপা। এই পেনাল্টি নিয়েও বিতর্ক থাকতে পারে। তবে রিক্যাপ দেখেই মোহনবাগানকে পেনাল্টি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন রেফারি। গোল করতে ভুল করেননি জেমি ম্যাকলারেন। এগিয়ে গিয়ে আক্রমণে ঝাঁঝ বাড়ায় মোহনবাগান। যার ফল পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ৩-১ করে ফেলে তারা। আবারও গোলের পাশে নাম লিখিয়ে ফেললেন এক ডিফেন্ডার। এই ম্যাচে জোড়া গোল করে ফেললেন রডরিগেজ। থাপার বাঁক খেয়ে বক্সের মধ্যে পৌঁছে যাওয়া শটে মাথা ছুঁয়ে তাঁর দ্বিতীয় গোলটি করে ফেলেন রডরিগেজ।
এদিন বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরিক্ষা করেছিলেন মোহনবাগান কোচ। তিনি কখনওই শুরু থেকে জেমি ম্যাকলারেন আর জেসন কামিন্সকে নামান না। কিন্তু এদিন দিমিত্রি পেত্রাতোস ও গ্রেগ স্টুয়ার্ট না থাকায় দু’জনকেই প্রথম থেকে রেখে জোড়া স্ট্রাইকারে শুরু করেন তিনি। এছাড়া সাহালকে বাইরে রেখে শুরু থেকে থাপাকে নামিয়ে দেন। প্রথমার্ধে মনে হতেই পারে ভুল সিদ্ধান্ত কিন্তু বিরতিতে হয়তো ড্রেসিংরুমের পেপ টকেই তা সফল সিদ্ধান্তে পরিণত করলেন মোহনবাগান ফুটবলাররা। পর পর দু’ম্যাচে না হারার মোলিনার রেকর্ডও অক্ষত থাকল।
মোহনবাগান: বিশাল কাইথ, আশিস রাই, টম আলড্রেড, শুভাশিস বোস, অ্যালবার্তো রডরিগেজ, অনিরুদ্ধ থাপা, মনবীর সিং, আপুইয়া, জেসন কামিন্স, জেমি ম্যাকলারেন (সাহাল আব্দুল সামাদ)
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার