Wednesday, January 22, 2025
No menu items!
Google search engine
Homeআইএসএলনর্থইস্টের বিরুদ্ধে আত্মবিশ্বাসী মোহনবাগান কোচ হোসে মোলিনা

নর্থইস্টের বিরুদ্ধে আত্মবিশ্বাসী মোহনবাগান কোচ হোসে মোলিনা

অলস্পোর্ট ডেস্ক: লিগ টেবলের মাঝামাঝি জায়গায় থাকা নর্থইস্ট একটি ম্যাচে হেরেছে বলে এই ম্যাচ তাদের পক্ষে অপেক্ষাকৃত সহজ হতে পারে, এমন তত্ত্ব মানতে রাজি নন সবুজ-মেরুন বাহিনীর কোচ হোসে মোলিনা। রবিবারের প্রতিপক্ষ নিয়ে তিনি বলেন, “নর্থইস্টের সঙ্গে আমরা এর আগেও দুবার খেলেছি। তাই ওদের আমরা ভাল করে জানি। ওরা কঠিন প্রতিপক্ষ। ওদের রক্ষণ খুবই ভাল। ওরা কাউন্টার অ্যাটাকেও খুব দ্রুত ওঠে। ওরাও আমাদের জানে। দুই দলের পক্ষেই এটা কঠিন ম্যাচ। আশা করি, আমরা ভাল খেলব ও তিন পয়েন্ট জিতব। তবে ওরা গত ম্যাচে হেরেছে বলে এই ম্যাচে আমাদের ছেড়ে দেবে না। ওরা লড়াই করবে। কারণ, ওদের কী করতে হবে, সেই ধারণা খুব স্পষ্ট। ওদের হারাতে গেলে আমাদের একশো শতাংশ দিতে হবে। আমাদের রিল্যাক্সড হওয়ার কোনও জায়গা নেই”।

কিন্তু এমন এক গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মোহনবাগান পাবে না তাদের দুই নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার রড্রিগেজ ও শুভাশিসকে। এই নিয়ে খুব একটা চিন্তিত মনে হল না মোলিনাকে। বলেন, “আমার কাছে দলের সব খেলোয়াড়ই গুরুত্বপূর্ণ। আলবার্তো ও শুভাশিস এই ম্যাচে খেলতে পারবে না। তবে তাদের বিকল্প রয়েছে আমাদের হাতে। আমি নিশ্চিত, তারাও ভাল খেলবে ও দলকে জিততে সাহায্য করবে”।

অন্যতম সম্ভাব্য বিকল্প দীপেন্দু বিশ্বাসের প্রশংসা করে কোচ বলেন, “দীপেন্দু খুব ভাল খেলছে। গত ম্যাচে দীপেন্দুর সামনে প্রথম এগারোয় ফেরার সুযোগ ছিল। ও যথেষ্ট ভাল খেলেছে। ও তরুণ খেলোয়াড়। অভিজ্ঞ শুভাশিসের মতো করে সব পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না ঠিকই। গত ম্যাচে আমার ভয় হচ্ছিল, দীপেন্দু না দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে ফেলে। তাই আশিসকে পাঠাই। তবে ও যেটুকু সময় খেলেছে, ভাল খেলেছে। রবিবার ও শুরু থেকে খেলতে পারে”।

বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে তাদের তিন গোলে হারা ম্যাচে খেলেছিলেন দীপেন্দু। সমর্থকদের অনেকেই অভিযোগ করেছিলেন, সেই ম্যাচে দীপেন্দুর ব্যর্থতার জন্য হারতে হয়েছিল দলকে। তাঁর ভুলেই পাওয়া পেনাল্টি থেকে গোল করে জয় সুনিশ্চিত করেন সুনীল ছেত্রী। তবে মোলিনা তাদের সঙ্গে একমত নন।

সেই ম্যাচের প্রসঙ্গ উঠলে মোলিনা বলেন, “বেঙ্গালুরুতে আমরা হেরেছিলাম ঠিকই। তবে তা শুধু দীপেন্দুর জন্য না। পুরো দলের জন্য। আমিও সমান দোষী ছিলাম। আমরা যখন হারি, একসঙ্গে হারি, যখন জিতি একসঙ্গে জিতি। সেই ম্যাচের পর থেকে আমরা দুজন বিদেশী সেন্টার ব্যাক খেলাচ্ছি। ফলে রক্ষণ অনেক মজবুত হয়েছে। আক্রমণেও দুজন বিদেশী আমাদের আরও ধারালো করে তুলেছে। তাই এখন ছবিটা অন্যরকম”।

সেই ম্যাচেও খেলেননি রড্রিগেজ। তবে দীপেন্দুর সঙ্গে রক্ষণ সামলেছিলেন শুভাশিস, আশিস রাই ও টম অলড্রেড। সম্প্রতি অলড্রেড জ্বরে ভুগছিলেন বলে শোনা গিয়েছিল। তাই রক্ষণ নিয়ে বেশ সবুজ-মেরুন শিবিরের বেশ উদ্বিগ্ন হওয়ার মতো পরিস্থিতি হয়। কিন্তু এখন সুস্থ অলড্রেড ও রবিবার গুয়াহাটির মাঠে নামার জন্য তিনি তৈরি বলে জানিয়ে দেন দলের স্প্যানিশ কোচ।

নর্থইস্টের বিরুদ্ধে ৩-২-এ জয় দিয়েই এ বারের লিগ অভিযান শুরু করেছিল মোহনবাগান। ম্যাচের তৃতীয় গোল করেছিলেন যিনি, সেই মরক্কান ফরোয়ার্ড আলাদিন আজারেই গত কয়েক মাসে আইএসএলের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ১১ গোল করে এখনও তিনিই সর্বোচ্চ গোলদাতা। রবিবারও বাান রক্ষণে তিনিই হয়ে উঠতে পারেন সবচেয়ে বড় ত্রাস। তবে তাঁর জন্য কোনও বিশেষ পরিকল্পনা নেই বলেই জানান মোলিনা।

আলাদিন আজারেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আজারেই খুব ভাল খেলোয়াড়। আমাদের মধ্যে গত ম্যাচে ও একটা গোল করেছিল। তবে সেই ম্যাচে আলবার্তো ছিল না। আমাদের ক্লিন শিট হয়নি। তবে আমরা জিতেছিলাম। আজারেইকে আটকানোর জন্য কোনও বিশেষ পরিকল্পনা নেই। দু-একজনের জন্য আলাদা পরিকল্পনা করি না। পুরো দলকে নিয়ে পরিকল্পনা আছে আমার। গত ম্যাচের চেয়ে আলাদা হবে সেই পরিকল্পনা। কারণ, সব প্রতিপক্ষ, সব ম্যাচ একই রকম হয় না। তাই পরিকল্পনাও আলাদা হয়”।

দলের প্রশংসা করে মোলিনা বলেন, “দল লিগের শুরু থেকেই ভাল খেলছে। চার মাস একসঙ্গে কাজ করার পর দল এখন অনেক ধারাবাহিক ও সব বিভাগেই আমরা মোটামুটি গুছিয়ে নিয়েছি। ফলও পাচ্ছি। তবে এখনও কাজ শেষ হয়নি। এখনও অনেক ম্যাচ, লড়াই বাকি আছে। আমি আত্মবিশ্বাসী, আমরা ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারব”।

তাঁর মতে, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি লিগের সব দলের কাছেই খুব গুরুত্বপূর্ণ। হোম-অ্যাওয়ে ম্যাচকেও তিনি যে আলাদা করে দেখছেন না, তা স্পষ্ট জানিয়ে সবুজ-মেরুন কোচ বলেন, “ঘরের মাঠ হোক বা বাইরে। আমাদের সব ম্যাচেই পয়েন্ট পেতে হবে। ডিসেম্বর-জানুয়ারি দুটোই খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের একই রকম পরিশ্রম করে যেতে হবে। আরও কঠিন ম্যাচ আছে আমাদের সামনে। সব ম্যাচই আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। টেবলের শীর্ষে থাকতে হলে আমাদের জয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। সে প্রতিপক্ষ যে-ই হোক বা আমরা যেখানেই খেলি”।

রবিবারের ম্যাচে রক্ষণে দেখা যেতে পারে আশিক কুরুনিয়ানকে, যিনি চোট সারিয়ে মাঠে ফিরলেও যথেষ্ট সময় মাঠে থাকার সুযোগ পাচ্ছেন না। পছন্দের জায়গায় খেলতে না পারলেও তিনি মাঠে নামাকেই এখন বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।

শুভাশিসের জায়গায় খেলার সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে আশিক সাংবাদিকদের বলেন, “শুভাশিসের জায়গা নিতে বললে কোনও আপত্তি নেই। আমার কাছে যতটা সম্ভব বেশি সময় মাঠে থাকা এখন বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কোথায়, কোন ভূমিকায় খেলব, সেটা আমার কাছে বড় কথা নয়। যেখানেই খেলি নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব। লেফট ব্যাক হিসেবে খেলাই আমি বেশি পছন্দ করি। বেঙ্গালুরু এফসি-তে এটাই আমার জায়গা ছিল। তবে সবচেয়ে ভাল লাগে স্ট্রাইকার হিসেবে খেলতে”।

জিথিন এম এস-এর মতো তুখোড় উইঙ্গারকে আটকানোর কাজ দেওয়া হতে পারে তাঁকে, শুনে আশিক বলেন, “আমি এই ম্যাচে শেষ পর্যন্ত খেলব কি না জানি না। তবে জিথিন খুবই ভাল খেলোয়াড়। আমাকে যে নির্দেশ দেওয়া হবে, তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করব”।

মোহনবাগান দলে জায়গা পাকা করা যে খুবই কঠিন চ্যালেঞ্জ, তা জানিয়ে কেরালার তারকা ফুটবলার বলেন, “আমাদের দলটা বড় এবং প্রত্যেক খেলোয়াড়ই ভাল। প্রতি পজিশনে একাধিক ভাল খেলোয়াড় আছে। তাই আমাকে জায়গা পাকা করার জন্য প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়। প্রতিদিন অনুশীলনে আমাকে সেরাটা দিতে হয়। এতে অবশ্য আমারই ভাল হচ্ছে। যাদের সঙ্গে আমার লড়াই, তাদেরও ভাল হচ্ছে। আশা করি, দলে নিয়মিত জায়গা পাব”।

দীর্ঘ এক বছর মাঠের বাইরে থেকে চোট সারিয়ে মাঠে ফেরার অনুভূতি নিয়ে তিনি বলেন, “গুরুতর চোট সারিয়ে অনেক দিন পর ফিরে আসাটা সব সময়ই কঠিন। তবে এটা খেলারই অঙ্গ। দু-তিন বছর আগেও আমার এ রকম চোট হয়েছিল। তাই এটা আমার কাছে বিশাল ব্যাপার নয়। এক বছর মাঠে ছিলাম না। তবে মাঠে ফিরতে পেরে খুব ভাল লাগছে। এ জন্য ক্লাব আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। ম্যানেজমেন্ট, কোচিং স্টাফ সবাই। আমি খুব ভাল জায়গায় রিহ্যাব করতে পেরেছি। এটা ক্লাবের জন্যই হয়েছে। এ জন্য প্রয়োজন হলে সারা জীবন মোহনবাগান ক্লাবে থাকতে পারি আমি”।

(লেখা আইএসএল ওয়েবসাইট থেকে)

খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com

অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments