অলস্পোর্ট ডেস্ক: তাদের শেষ দুই ম্যাচই ছিল ডার্বি, যাতে একটিও গোল না খেয়ে পাঁচ-পাঁচটি গোল করেছে মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। কোচ হিসেবে এর চেয়ে গর্বের আর কীই বা হতে পারে? তাই সবুজ-মেরুন বাহিনীর স্প্যানিশ কোচ হোসে মোলিনা এখন যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী। তবে দলের ফুটবলাররা যাতে অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হয়ে না পড়েন, সে জন্য তিনি সব সময়ই সতর্ক।
বুধবার হায়দরাবাদ এফসি-র ঘরের মাঠে তাদের মুখোমুখি হতে চলেছে সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। এই সেই হায়দরাবাদ, যারা চার দিন আগেই কলকাতায় এসে মহমেডান এসসি-কে চার গোল দিয়ে মরশুমের প্রথম জয় তুলে নিয়ে গিয়েছে। পারফরম্যান্সে ক্রমশ উন্নতি করা দলটির বিরুদ্ধে তাই কোনও ঝুঁকি নেওয়ার পক্ষপাতী নন মোলিনা। গত দুই ম্যাচে যে রকম পারফরম্যান্স দেখিয়েছে তাঁর দল, বুধবারও সে রকমই পারফরম্যান্স চান তিনি।
দল নিয়ে হায়দরাবাদ উড়ে যাওয়ার আগে বাগান-কোচ বলেন, “হায়দরাবাদ দলে অনেক তরুণ ফুটবলার আছে, যারা নিজেদের প্রমাণ করতে চায়। তবে আমি ওদের পুরো দল নিয়ে বেশি ভাবছি, যারা গত ম্যাচে ভাল খেলেছে। ওদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য আমরা তৈরি। গত দুই ম্যাচে প্রতিপক্ষকে আটকানোর জন্য যা যা করেছি আমরা, এই ম্যাচেও তা-ই করব। কোনও বিশেষ পরিকল্পনা নেই। আরও একটা ম্যাচে ক্লিন শিট রাখতে হবে আমাদের”।
দশ দিন বিশ্রামের পর নামছে তারা। তরতাজা হয়েই নামবে তাঁর ফুটবলাররা। এই প্রসঙ্গে কোচ বলেন, “প্রায় দশ দিনের অবকাশে দলের অনুশীলন খুব ভাল হয়েছে। মহমেডানের বিরুদ্ধে খুব ভাল ম্যাচ খেলেছি আমরা। আগেও বলেছি আইএসএলে কোনও ম্যাচই সহজ নয়। হায়দরাবাদ ম্যাচও কঠিন হতে চলেছে। তবে আমরা ৯০ মিনিট লড়াই করে নিজেদের সেরাটা দেওয়ার জন্য তৈরি। এই ম্যাচে আমরা জিততেই নামব। তবে সে জন্য আমাদের অনেক পরিশ্রম করতে হবে”।
নিজেদের সেরাটা দিতে পারলে যে বুধবার জিএমসি অ্যাথলেটিক স্টেডিয়ামে তাদেরই জেতা উচিত, তা অবশ্য বলছেন আইএসএল জয়ী কোচ। বলেন, “কাগজে কলমে আমাদের অনেকে ফেভারিট বলছে ঠিকই। কারণ, আমাদের দলটা খুব ভাল। দলে অনেক জাতীয় দলের ফুটবলার আছে। তবে ম্যাচ তো হয় এগারো বনাম এগারোর। আমরা যদি নিজেদের সেরাটা দিতে পারি, তা হলে আমাদেরই জেতা উচিত। কিন্তু আমাদের তো সেরাটা দিতে হবে। অনেক দৌড়তে হবে, লড়তে হবে, মনোনিবেশ করতে হবে। আমাদের ছেলেদের আত্মবিশ্বাস আছে ঠিকই। কিন্তু মাঠে তার ছাপ রাখতে হবে”।
এ পর্যন্ত কলকাতার বাইরে গিয়ে যে একটিমাত্র ম্যাচ খেলেছে তারা, তাতেই হেরেছে মোহনবাগান এসজি। বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধে সেই ম্যাচে ০-৩-এ হারে তারা। এ বার কলকাতার বাইরে দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে চলেছে তারা। তবে এই নিয়ে বিন্দুমাত্র দুশ্চিন্তায় নেই বাগান-কোচ।
তাঁর কাছে ঘরের মাঠে খেলা, বাইরের মাঠে খেলা একই ব্যাপার। এই প্রসঙ্গে গ্রেগ স্টুয়ার্টদের কোচ বলেন, “ঘরের মাঠ হোক বা বাইরের, আমার কাছে সবই সমান। কোথায়, কাদের বিরুদ্ধে খেলছি, সেটা কোনও ব্যাপার নয়। সব ম্যাচেই দল হিসেবে ভাল খেলতে হয়। পরিশ্রম করে, নিজেদের সেরাটা দিয়ে আক্রমণ, রক্ষণে ভাল খেলাই জেতার উপায়। যথাসম্ভব বেশি গোল করতে হবে এবং যথাসম্ভব কম গোল খেতে হবে। সব ম্যাচেই একই নিয়ম, সে যেখানেই হোক। তাই আলাদা করে অ্যাওয়ে ম্যাচের কোনও বাড়তি গুরুত্ব নেই আমাদের কাছে”।
গত ম্যাচে তারা চার গোলে জিতেছে বলে হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে তাদের খেলার স্টাইলেও কোনও পরিবর্তন হবে না বলে সাফ জানিয়ে দেন মোলিনা। বলেন, “একই স্টাইলে খেলব আমরা। যে স্টাইলে খেলে আধিপত্য বিস্তার করি আমরা। প্রতিপক্ষকে শ্রদ্ধা করি। কারণ, ওরা লড়াকু দল। আমাদের গোল করতে হবে। সবাই সুস্থ আছে। আশা করি ম্যাচের আগে পর্যন্ত সবাই সুস্থই থাকবে”।
দলের মিডফিল্ডার দীপক টাঙরিও কোচের সুরেই সুর মিলিয়ে বলেন, “হায়দরাবাদ দলটা বেশিরভাগই তরুণ ফুটবলারদের নিয়ে গড়া। ওরা নিজেদের প্রমাণ করার জন্য মরিয়া এবং নিজেদের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করছে। ওদেরও অন্যান্য দলগুলোর মতোই নিতে হবে। তাই ওদের হারাতে গেলে আমাদের সেরাটাই দিতে হবে”।
দল এখন অনেক ছন্দে চলে এসেছে বলে মনে করেন টাঙরি। বলেন, “প্রথম দিকে আমরা পুরোপুরি সেট হতে পারিনি। তখন যে যে ভুলগুলো হচ্ছিল, সেগুলো আমরা পরিশ্রম করে শুধরে নিই। মরশুমের শুরুতে দল যে অবস্থায় ছিল, তার চেয়ে এখন অনেক ভাল অবস্থায় আছি আমরা, ছন্দ চলে এসেছে খেলার মধ্যে”।
সবুজ-মেরুন বাহিনীতে প্রথম এগারোয় জায়গা পাওয়ার জন্য নিজেদের মধ্যে যে কঠিন প্রতিযোগিতা রয়েছে, তা স্বীকার করে নিয়ে টাঙরি বলেন, “প্রথম এগারোয় জায়গা পাওয়ার জন্য আমাদের দলের খেলোয়াড়রা সবাই একশো শতাংশ দিচ্ছে। তবে প্রথম এগারো কোচই বাছেন, উনিই সিদ্ধান্ত নেন। আমরা আমাদের কাজ করে যাই, একশো শতাংশ দিই। বাকিটা কোচের হাতে”।
(লেখা আইএসএল ওয়েব সাইট থেকে)
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার