Sunday, November 16, 2025
No menu items!
Google search engine
Homeফুটবলআইএফএকে একহাত নিল মোহনবাগান

আইএফএকে একহাত নিল মোহনবাগান

মুনাল চট্টোপাধ্যায়:‌ বারাসত স্টেডিয়ামের মাঠ তৈরি নয়, তাই শেষপর্যন্ত কল্যানী স্টেডিয়ামের মাঠকেই ১৯ জুলাই কলকাতা প্রিমিয়ার ফুটবল লিগের ডার্বির জন্য বেছেছে আইএফএ। ডার্বিতে ইস্টবেঙ্গলের মুখোমুখি হতে তৈরি থাকলেও, কল্যানীর মাঠে খেলা দেওয়া নিয়ে রীতিমতো অসন্তোষ প্রকাশ করলেন মোহনবাগান সভাপতি দেবাশিস দত্ত ও সচিব সৃঞ্জয় বসু। আইএফএকে একহাত নিলেন তাঁরা মঙ্গলবার কার্যকরী কমিটির বৈঠক শেষে।

কল্যানীতে ম্যাচ দেওয়ায় কি মোহনবাগানের ডার্বি খেলতে কোনও আপত্তি আছে, এই প্রশ্নে সচিব সৃঞ্জয় বসু ও সভাপতি দেবাশিস দত্তর প্রতিক্রিয়া, ‘‌ মোহনবাগান খেলবে। কিন্তু একইসঙ্গে ডার্বি ম্যাচ কেন কল্যালীতে দেওয়া হল, সেটা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। এটা কি একটা চমক দেওয়ার প্রচেষ্টা, নাকি যেনতেন প্রকারেণ মরশুমের প্রথমে একটা ডার্বি ম্যাচ আয়োজন করে ফেলার চেষ্টা?‌ বড় ম্যাচ সাধারনত যুবভারতীতেই হয়। তার প্রধান কারণ আমাদের ও ইস্টবেঙ্গলের যত সদস্য আছে, তাঁদের অধিকাংশ যাতে মাঠে যেতে পারেন ডার্বির উন্মাদনার স্বাদ নিতে। কল্যানীতে সেই দর্শকাসন সংখ্যা কোথায়?‌ অতদূরে সদস্য-‌সমর্থকরা যাওয়ার আগ্রহই হারিয়ে ফেলবেন। তাছাড়া কলকাতা লিগের ডার্বিতে সদস্যদের খেলা দেখার টিকিট দিয়ে থাকি আমরা। কল্যানীতে খেলা হলে, সেই টিকিটের কী ব্যবস্থা করেছে আইএফএ?‌ কত টিকিটই বা দিতে পারবে, সেটা অজানা?‌ সমর্থক বা ফুটবলারদের নিরাপত্তার কী ব্যবস্থা থাকছে, সেটাও জানায়নি। নামেই কলকাতা লিগ। অধিকাংশ খেলা হচ্ছে জেলার মাঠে। এমন লিগের কী মানে আছে?‌’‌

গত মরশুমে যুবভারতীতে ডার্বি হলেও মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের উপস্থিতি ছিল খুব কম। সবটাই লোকসান। সেখানে কল্যানীতে এর আগে দু’‌দলের খেলায় মাঠ প্রায় প্রতিদিন ভরতি থেকেছে। মোহনবাগানের আইলিগ জয়ও ঘটেছে কল্যানীর মাঠে কিবু ভিকুনার কোচিংয়ে। এনিয়ে বাগান সভাপতি দেবাশিস দত্তর প্রতিক্রিয়া,‘‌লোকসানের ভয়ে তাহলে তো আমাদের আইএসএল খেলা বা ম্যাচ আয়োজন করা ছেড়ে দিতে হয়। কয়েকটা বিশেষ বিশেষ ম্যাচ ছাড়া, বাকি ম্যাচে কত লোকসান হয় আমাদের সেই অঙ্কটা প্রকাশ্যে বলতে চাই না। তাই বলে কী আমরা যুবভারতীতে ম্যাচ আয়োজনে পিছিয়ে গেছি, না ভবিষ্যতে যাব?‌ আইএফএ হয় ভাল করে লিগ পরিচালনা করুক, নইলে গয়ংগচ্ছ ভাবে লিগ আয়োজনে বিরত থাকুক।’‌

এনিয়ে আইএফএ সচিব অনির্বাণ দত্তর বক্তব্য, ‘‌ কল্যানীতে লিগের ম্যাচ হওয়া নতুন নয়। দীর্ঘদিন ধরেই হয়। আইলিগের অনেক ম্যাচ খেলা হয়েছে। মোহনবাগান ওই মাঠে আইলিগ জিতেছে। দর্শক ভরাই থাকে। ১৩ হাজার টিকিট ছাপা হচ্ছে। তার মধ্যে আপাতত ১ হাজার করে টিকিট দু’‌দলকেই দেওয়া হবে। এই টিকিটের জন্য সদস্যদের কোনও মূল্য দিতে হবে না ঠিকই, তবে সদস্য কার্ড দেখিয়ে সংগ্রহ করতে হবে। পরে অবস্থা বুঝে আরও বেশি টিকিট দেওয়া সম্ভব কিনা,সেটা ভেবে দেখা হবে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে কোনও সমস্যা হবে না। পুলিশ প্রশাসনের পুরো আশ্বাস মিলেছে সেব্যাপারে।’‌

কিশোরভারতীতে কেন ডার্বি করা যাচ্ছে না?‌ অনির্বাণের উত্তর, ‘‌ ওই স্টেডিয়ামের মাঠ রেসিডিন্সিয়ান এলাকায় পড়ে বলেই ল’‌ অ্যান্ড অর্ডারের একটা সমস্যা হতে পারে ভেবেই ডার্বি ওখানে করার ভাবনা থেকে সরে আসতে হয়েছে।’

মোহনবাগানের দুই শীর্ষ কর্তার কাছে প্রশ্ন ছিল, নিজেদের মাঠে কেন লিগের ম্যাচ খেলছে না ক্লাব?‌ কবে থেকে খেলতে পারে তারা? তাঁদের উত্তর, ‘‌ মোহনবাগান নিজের মাঠেই খেলতে চায়। কিন্তু হকি যখন মাঠ ছাড়ে, তারপর থেকে মাঠ তৈরি করতে অনেকটা সময় লেগে যায়। বিশেষ করে ভরা বর্ষায়। আপনাদের না জানার কথা নয়, প্র‌্যাক্টিসের মাঠের অভাবে প্রস্তুতি সমস্যার কারণে আমরা ডুরান্ড খেলব কিনা, তা নিয়ে সংশয় ছিল। পরে সেই সমস্যার সমাধান হয়েছে। সল্টলেকে হকির অ্যাস্ট্রোটার্ফ তৈরি হয়ে যাওয়ার পরও কেন, কলকাতা ময়দানের মাঠ হকি অতদিন ধরে আটকে রাখছে, এটা দুর্বোধ্য?‌ যদি আগেই ছেড়ে দেয়, তাহলে আমরা মাঠ সময়মতো তৈরি করে নিজেদের মাঠে লিগ বা অন্যান্য খেলা খেলতে পারি।’‌

এদিকে, আইএসএল ঘিরে অনিশ্চয়তা নিয়ে সচিব সৃঞ্জয় বসুর প্রতিক্রিয়া, ‘‌ এটা যথেষ্ট উদ্বেগের। আমরা না হয় এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টায়ার টু আর ডুরান্ড কাপ খেলার জন্য নিজেদের দলের প্রস্তুতি সময়মতো শুরু করব। এফসি গোয়াও করবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ টায়ার টুর প্লে অফে খেলবে বলে। কিন্তু বাকি দলগুলোর কাছে গোটা ব্যাপারটাই ধোঁয়াশা ভরা। এটা ভারতীয় ফুটবলের জন্য ভাল বিজ্ঞাপন নয়। এই সমস্যার যাতে দ্রুত সমাধান হয়, সেটা চাই। আমরা সংশ্লিষ্ট জায়গায় নিজেদের বক্তব্য তুলেও ধরব। আর সুপ্রিম কোর্টের কাছে আমাদের একান্ত অনুরোধ ফুটবলের ভাল করতে গিয়ে যেন তারা ভারতীয় ফুটবলকে ১০০ বছর পিছিয়ে না দেয়। তারা যে সিদ্ধান্তই নিক, তা যেন ভারতীয় ফুটবলের উন্নতিতে কাজে লাগে।’‌ কথাটা খারাপ কিছু বলেননি বাগান কর্তা। ফুটবল খেলা থাকলে, তবেই তো অগ্রগতির সম্ভাবনা বজায় থাকবে, নইলে আইনি জটিলতায় ভারতীয় ফুটবল পথ হারাবে।

খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com

অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন:ফেসবুক ও টুইটার

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments