সুচরিতা সেন চৌধুরী: রাত পোহালেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। ঠিক যেখানে গত মরসুমের আইএসএল শেষ হয়েছিল সেখান থেকেই যাত্রা শুরু করছে লিগের দুই সেরা দল, মোহনবাগান বনাম মুম্বই সিটি। এই কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনেই। গত মরসুমের শেষ ম্যাচের ফল এই মরসুমের শুরুতে বদলাতে চাইবে মোহনবাগান। মুম্বইয়ের সামনে লক্ষ্য যেখানে শেষ করেছিল সেখান থেকেই শুরু করা। তাই হয়তো প্রতিপক্ষের মাঠে আইএসএল যাত্রা শুরু করার আগে আত্মবিশ্বাসী মুম্বই সিটি এফসি কোচ পেত্র ক্রাতকি। তাঁর পাশে বসে থাকা দলের নতুন অধিনায়ক লালিয়ানজুয়ালা ছাংতের মুখেও আত্মবিশ্বাসের একশো ওয়াটের আলো। গত মরসুমের দুরন্ত পারফর্মেন্সের ফল পেয়েছেন তিনি। পেয়েছেন অধিনায়কের দায়িত্ব।
ভারতীয় ফুটবলে মোহনবাগান ও মুম্বই সিটির শত্রুতা সবার জানা। যেমন কলকাতা ফুটবলে ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান। তাই সব সময় মোহনবাগান বনাম মুম্বই সিটি ম্যাচের উত্তেজনা থাকে তুঙ্গে। অতীত এর সাক্ষী। আরও একটা নতুন মরসুম, আবারও মুখোমুখি মোহনবাগান-মুম্বই সিটি। তার আগেই আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে ফিরেছেন এই দুই দলের প্লেয়াররা। যদি ভারতীয় ফুটবল দল দেখা যায়, তাহলে দেখা যাবে পুরো দলটাই প্রায় মুম্বই সিটি এফসি ও মোহনবাগান সুপার জায়ান্টের প্লেয়ারদের নিয়েই তৈরি হয়েছিল। অন্যান্য দলের এক, দু’জন করে ছিলেন। সেদিক থেকে দেখতে গেলে সদ্য আন্তর্জাতিক টুর্নাামেন্ট খেলে ফিরেছেন দুই দলের প্লেয়াররা। দুই দলই দারুণভাব তৈরি। আর সেই আত্মবিশ্বাসই ফুটে উঠছে দুই দলের কোচের কথায়।
মোহনবাগান কোচ মোলিনা বলছিলেন, “আপাতত আমি মুম্বই ম্যাচ নিয়ে ভাবছি। দীর্ঘ মরসুম পরে রয়েছে সামনে, তার আগে আমার দল তৈরি এবং একটি করে ম্যাচ ধরেই এগবো। আমরা একটা দল হিসেবেই খেলব।” পাশাপাশি তিনি এও বলছেন, “এরকম ম্যাচের ক্ষেত্রে ফিজিক্যাল ফিটনেসের সঙ্গে মেন্টাল ফিটনেসটাও জরুরি। এবং আমার ছেলেরা তার জন্য তৈরি। “
অতীতকে পিছনে ফেলে এখন সামনের দিকে তাকাতে চান দুই কোচই। সদ্য শেষ হয়েছে ডুরান্ড কাপ। সেখানে মোহনবাগানের কাছে হেরে ছিটকে যেতে হয়েছিল মুম্বইকে। অন্যদিকে ফাইনালে পৌঁছেও নর্থইস্ট ইউনাইটেডের কাছে হেরে ট্রফি জেতা হয়নি মোহনবাগানের। এই অবস্থায় মোলিনা ও ক্রাতকি একই নৌকার যাত্রী। দু’জনেই বলছেন, “যা হয়ে গিয়েছে তা নিয়ে না ভেবে সামনের দিকে তাকানোই লক্ষ্য। ডুরান্ড কাপ এখন পাস্ট।”
মুম্বই সিটি এফসির দুই প্রাক্তন প্লেয়ার আপুইয়া ও গ্রেগ স্টুয়ার্ট এখন মোহনবাগানের সৈন্য। আর তাদের বিরুদ্ধেই শুক্রবার লড়াই মুম্বই সিটির। গত মরসুমে মুম্বইয়ের মাঝ মাঠকে ভরসা দেওয়া দুই তারকা এবার মোহনবাগানেও তারকা হয়ে উঠতে পারে কিনা সেটাই দেখার। সঙ্গে এই দু’য়ের অবর্তমানে মু্ম্বইয়ের মাঝ মাঠ কতটা সাফল্য পায় সেটাও নজরে থাকবে নিশ্চিত। গতকয়েক মরসুমে আইএসএল-এর বাজারে বাজিমাত করেছে এই দুই দলই। ২০২০-২১-এ লিগ-শিল্ড ও চ্যাম্পিয়নশিপ দুটোই জিতে নিয়েছিল মুম্বই।
২০২১-২২ বাদ দিলে আবার লড়াইয়ে মোহনবাগান ও মুম্বই ফিরে আসে ২০২২-২৩ মরসুমে। সেবার লিগ-শিল্ড জিতে নেয় মুম্বই এবং চ্যাম্পিয়নশিপ জেতে মোহনবাগান। ২০২৩-২৪, মানে গত মরসুমে এই ফলটাই উল্টে যায়। যেখানে মোহনবাগান লিগ-শিল্ড জিতে নিলেও চ্যাম্পিয়নের ট্রফি বাড়ি নিয়ে যায় মুম্বই। এই অবস্থায় আবার চাকা ঘোরাতে চাইবে মোহনবাগান। গত মরসুমে ফেরান্দোকে সরিয়ে হাবাসকে আনলেও এই মরসুমে আবার মোলিনাকে ফিরিয়ে এনেছে মোহনবাগান। তিনিই দলকে ডুরান্ড ফাইনালে তুলেছিলেন ঠিকই কিন্তু তাঁর কোচিংয়ে সব থেকে বেশি চিন্তার বিষয় প্রায় সব ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে চলে যাওয়া এবং টাইব্রেকারে জেতা বা হারা। লিগে তেমন কোনও সুযোগ নেই। ৯০ মিনিটেই শেষ করতে হবে ম্যাচ।
তবে দুই কোচই বুঝিয়ে দিলেন এই তো সবে শুরু, এখনও অনেক রাস্তা চলা বাকি। তাই এখনই কোনও কিছু আগাম ধরে নেওয়ার কোনও জায়গা নেই। প্রতি মুহূর্তে বদলাবে টুর্নামেন্টের রঙ।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার