অলস্পোর্টস ডেস্ক: শেষ চার ম্যাচে জয়, লিগ শীর্ষে টিকে থাকা ও দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেঙ্গালুরু এফসির থেকে গত ম্যাচের পরই দুই পয়েন্টে এগিয়ে যাওয়া, সব মিলে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থাকা মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট শুক্রবার খেলতে নেমেছিল এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে, তাদেরই ঘরের মাঠে। যে এফসি গোয়ার কোচ আবার ভারতীয় সিনিয়র ফুটবল দলেরও হেড কোচ। এই মোহনবাগান দলের একাধিক প্লেয়ারও খেলেন জাতীয় দলে। যে কারণে এই কোচের পদ্ধতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকারই কথা শুভাশিস, লিস্টনদের। লিস্টন আবার গোয়ার প্রাক্তন ফুটবলার। সব মিলে এই দল সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য নিয়েই খেলতে নামার কথা ছিল মোলিনার ছেলেদের। কিন্তু এদিন পুরো ম্যাচে চেনা ছন্দে পাওয়া গেল না মোহনবাগানকে। যার ফলে আইএসএল ২০২৪-২৫-এ দ্বিতীয় হারের মুখ দেখতে হল টেবল টপে থাকা দলকে।
এদিন গোয়ার ফতোরদা স্টেডিয়ামে ১১ ম্যাচে ২৬ পয়েন্ট নিয়ে খেলতে নেমেছিল মোহনবাগান। সঙ্গে ছিল আটটি জয়, দুটো ড্র ও একটি হার। এই ম্যাচ খেলতে নামার আগে হোসে মোলিনা বলেছিলেন, ভাল ফুটবল খেলে জিততে চান তিনি। কারণ গোয়ার বিরুদ্ধে নামার আগে গত ১৪ ডিসেম্বর ঘরের মাঠে কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে ৩-২ গোলে জেতা ম্যাচে মোটেও দৃষ্টি নন্দন ফুটবল খেলতে পারেননি মোলিনার ছেলেরা। আর সেটা এই ম্যাচে চাননি। কারণ অভিজ্ঞ কোচ জানতেন, খারাপ খেলে জয় ভাগ্যক্রমে এসেছে, সব সময় এই ভাগ্য সঙ্গ দেবে না। আর তাঁর সেই ভয়টাই এদিন সত্যি হয়ে গেল।
শুরু থেকেই টপ টিম হিসেবে যে ফুটবলটা খেলার কথা ছিল সবুজ-মেরুন ব্রিগেডের, সেটা দেখা গেল না। বরং হোম টিম হিসেবে দাপট অনেকবেশি শেষ পর্যন্ত ধরে রাখল এফসি গোয়া। যার ফল ম্যাচের ১২ মিনিটেই মোহনবাগানের রক্ষণের ভুলেই এগিয়ে গেল গোয়া। এদিন জোড়া গোল করে গোয়ার এবং ম্যাচের নায়ক ব্রাইসন ফার্নান্ডেজ। প্রথম গোল তিনি করলেন সামনে দাঁড়িয়ে থাকা আশিস রাইকে রীতিমতো ড্রিবল করতে করতেই। এবং যখন গোলে শট নিলেন তখন জায়গায় নেই বিশাল কাইথ। তাঁর মাথার উপর দিয়েই ব্রাইসনের শট চলে গেল গোলে। প্রথমার্ধ শেষ হল ১-০ গোলেই।
মনে হয়েছিল দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়াবে দল। এমন নজির অতীতে বার বার রেখেছে মোহনবাগান। এদিন তেমনটা হল না। বরং মাঝে মাঝেই বড্ড বেশি ফিজিক্যাল গেম খেলতে দেখা গেল ফুটবলারদের। তার মধ্যেই ৬৮ মিনিটে আরও একবার এগিয়ে গেল এফসি গোয়া। কারিগর সেই ব্রাইসন। মাঝ মাঠ থেকে উড়ে আসা একটা লং বল বক্সের বাঁ দিকে ধরে নিজেদের মধ্যে খেলে সেন্টার করেছিলেন বোরহা হেরেরা। সেই নিচু হয়ে আসা বলেই ব্রাইসনের অসাধারণ হেড, আটকাতে পারেননি বিশাল। তার আগে অবশ্য ৫৫ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে সমতায় ফিরিয়েছিলেন দিমিত্রি। বক্সের মধ্যে বল হাতে লাগিয়ে পেনাল্টি পাইয়ে দিয়েছিলেন সাদিকু।
এক পয়েন্টের আশা তৈরি হলেও তা বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেনি মোহনবাগান রক্ষণ। যার ফলে গোয়া থেকে খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে মোলিনার দলকে। মোহনবাগানের পরের ম্যাচ পঞ্জাব এফসির বিরুদ্ধে পঞ্জাবের ঘরের মাঠে। এর পর ২ জানুয়ারি আবার ঘরের মাঠে ফিরবে দল। প্রতিপক্ষ হায়দরাবাদ। কেরালা ম্যাচ জেতার পর সমর্থকদের জন্য যে ম্যাচের টিকিট ফ্রি করে দিয়েছিলেন দলের অন্যতম কর্ণধার সঞ্জীব গোয়েঙ্কা। এদিন ম্যাচের শেষ মুহূর্তে লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হল মোহনবাগানের সাপোর্ট স্টাফ ক্রিস্টাল জনকে।
মোহনবাগান: বিশাল কাইথ, শুভাশিস বোস, টম আলড্রেড, রডরিগেজ, আশিস রাই (আশিক কুরুনিয়ান), রালতে, সাহাল আব্দুল সামাদ, লিস্টন কোলাসো (অনিরুদ্ধ থাপা), দিমিত্রি পেত্রাতোস (জেসন কামিন্স), মনবীর সিং, জেমি ম্যাকলারেন
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার