অলস্পোর্ট জেস্ক: এত ভাল শুরু করেও শেষটা হল হতাশাজনক। মোহনবাগানের হয়ে একদল ভারতীয় ফুটবলারদের লড়াই সত্যিই মন কেড়ে নিয়েছিল আপামর ফুটবলপ্রেমীদের। কিন্তু সেমিফাইনালে এফসি গোয়ার কাছে হেরে সুপার কাপ ২০২৫ থেকে বিদায় নিতে হল সদ্য আইএসএল চ্যাম্পিয়নদের। মোহনবাগানের সঙ্গেই শেষ হয়ে গেল বাংলার সুপার কাপও। যদিও নিয়মিত আইএসএল খেলা প্লেয়াররা সুপার কাপে ছিলেন না। যখন সবাই পাঁচ, ছয় বিদেশি নিয়ে খেলছে তখন মোহনবাগানের সবেধন নীলমনি একা নুনো রেইস। যাঁকে দুই ম্যাচে দেখে নম্বর দেওয়ার মতো কিছু পাওয়া গেল না। তবে মন জিতে নিলেন আশিক, সুহেল, সাহাল, সালাউদ্দিনরা। যদিও এই হারটা একাই উপহার দিলেন গোলকিপার ধীরজ সিং। প্রথম ম্যাচে কিন্তু অসাধারণ খেলে নজর কেড়েছিলেন ধীরজ। এই দিনটি তাঁর ছিল না। তবে তারকাহীন মোহনবাগানকে কৃতিত্ব দিতে হবে। এই দলের অনেক প্লেয়ার পুরো মরসুমটাই প্রায় বেঞ্চে বসে কাটিয়েছেন। তার পর এই পারফর্মেন্স অতি বড় মোহনবাগান সমর্থকও হয়তো ভাবেনি।
ম্যাচ শুরুর ২০ মিনিটের মধ্যেই এগিয়ে গিয়েছিল এফসি গোয়া। গোলের কারিগর ব্রাইসন সিং। কর্নার নিয়েছিলেন বোরহা হেরেরা। সেই বল বরিস সিংয়ের সঙ্গে পাস খেলেই বক্সের ডান দিকে আবার পেয়ে গিয়েছিলেন বোরহা। সেখান থেকেই তাঁর মাপা সেন্টার। যা ব্রাইসনের টোকায় চলে যায় গোলে। অভিষেক সূর্যবংশী চেষ্টা করেছিলেন ক্লিয়ার করার কিন্তু বলের নাগাল পাননি তিনি। তবে গোয়ার উৎসব বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। তিন মিনিটের মধ্যেই সমতায় ফেরে মোহনবাগান।
২৩ মিনিটেই সমতায় ফিরল মোহনবাগান। সুহেল ভাটের গোলে আবার আশা জিইয়ে রাখল সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। মাঠের ডানদিক থেকে বল উড়িয়েছিলেন দীপক টাংরি যা একদম বাঁদিকে পেয়ে গিয়েছিলেন আশিক কুরুনিয়ান। সেখান থেকেই কিছুটা বল হোল্ড করে বক্সের মধ্যে মাপা পাস রেখেছিলেন আশিক। আর তাঁকে লক্ষ্য করেই সঠিক সময়ে সঠিক জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিলেন সুহেল। প্রতিপক্ষের দুই ডিফেন্ডারকে দু’দিকে ঘাঁড়ে নিয়েই নিখুঁত ফিনিশ সুহেলের।
তবে প্রথমার্ধেই আবার এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল এফসি গোয়া। ৪৪ মিনিটে গোয়ারেসেনার শট পোস্টে না লাগলে বিপদ হতে পারত মোহনবাগানের। এ যাত্রায় বেঁচে গেলেও দ্বিতীয়ার্ধের একাধিক ভুলে ম্যাচ হাতছাড়া কলকাতার দলের। কারণ দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই বড় ভুল করে বসলেন মোহনবাগান গোলকিপার ধীরজ সিং। ৫০ মিনিটে বক্সের মধ্যে দ্রাজিচকে ফাউল করে এফসি গোয়াকে পেনাল্টি পাইয়ে দিলেন ধীরজ সিং। যার প্রয়োজন ছিল না। পেনাল্টি থেকে সহজেই গোল করে দলকে এগিয়ে দিলেন গোয়ারেসেনা। ২-১ গোলে এগিয়ে গিয়ে মানসিকভাবেও অনেকটাই পিছিয়ে পড়ল মোহনবাগান। যার সুযোগ দারুণভাবে নিল এফসি গোয়া। আর গোলের মুখ খুলতে পারল না তারা উল্টে আরও একটি গোল হজম করে বসল।
তবে বোরহা হেরেরার এই গোল বিশ্বমানের বললেও কম বলা হবে। প্রথম গোলের পিছনে নাম যাঁরই লেখা হোক না কেন, কৃতিত্ব ছিল বোরহারই। ৫৭ মিনিটে সরাসরি কর্নার থেকে দুরন্ত গোল করে ৩-১ করলেন বোরহা হেরেরা। বোরহার কর্নার যেভাবে বাঁক খেয়ে সোজা উপরের কোণা দিয়ে গোলে ঢুকে গেল তাতে কয়েক সেকেন্ডের জন্য থমকে গিয়েছিল কলিঙ্গ স্টেডিয়ামও। লাফিয়েও বলের নাগাল পেলেন না ধীরজ। এখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়ানো হল না মোহনবাগানের।
মোহনবাগান- ধীরজ সিং, অমনদীপ সিং (সেরতো), নুনো রেইস, দীপেন্দু বিশ্বাস, সৌরভ ভানওয়াল, অভিষেক সূর্যবংশী,দীপক টাংরি, আশিক কুরুনিয়ান, সাহাল আব্দুল সামাদ, সালাহউদ্দিন (টাইসন সিং), সুহেল ভাট
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার