সুচরিতা সেন চৌধুরী: আর মাত্র একটা ম্যাচ। রাত পোহালেই সেই মাহেন্দ্রক্ষণ যখন আইএসএল ২০২৩-২৪-এর ফাইনালে মুখোমুখি হবে মোহনবাগান ও মুম্বই সিটি এফসি। তার আগের দিন লিগ ফাইনাল ঘিরে শেষ বেলার প্রস্তুতি। শহরের পাঁচতারা হোটেলে বসেছিল দুই দলের সাংবাদিক সম্মেলনের আসর। যা শুরু করল মুম্বই ও শেষ করল মোহনবাগান।
মরসুম শেষের এক জমজমাট সমাপ্তির সঙ্গেই যেন পরের বছরের আগমনীর ঢাকে কাঠি পড়ে গেল। তার আগে শনিবার সন্ধ্যায় কলকাতার সল্টলেকের যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন অপেক্ষায় এক হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের সাক্ষী থাকার জন্য। লিগের শেষ ম্যাচে মোহনবাগান সমর্থকরা বুঝিয়ে দিয়েছে আরও একটা আইএসএল ট্রফির জন্য তারা আবার মাঠ ভরাতে প্রস্তুত। কয়েকদিন আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে টিকিট। ৬২ হাজারের মোহনবাগান গ্যালারির সামনে আইএসএল ফাইনালে নামার আগে তাই মুম্বই কোচ, ফুটবলারদের মুখে মোহনবাগান সমর্থকদের প্রশংসা। যদিও মা খবর ১০ হাজার টিকিট নিয়েছে মুম্বই। তাহলে কি মোহনবাগানের সমর্থনে সামান্য হলেও ভাগ বসাবে মুম্বই? এর উত্তর পাওয়া যাবে ম্যাচ ডে-তেই।
তবে লড়াই রে পর্যায়েই হোক না কেন মুম্বই সিটি এফসি কোচের গলায় বাগান সমর্থকদের প্রশংসা শোনা গেল। বলছিলেন, “লিগ-শিল্ডের ম্যাচে দেখেছিলাম। এটা একটা অসাধারণ বিষয়। দারুণ সমর্থক। এর জন্যই তো খেলা।” তাদের সমীহ করলেও ভয় পাচ্ছে না মুম্বই। বরং বলছেন, “ফুটবলাররা যখন মাঠে নামে তখন আর কিছু মাথায় থাকে না খেলার বাইরে। দলের জন্য নিজের সেরাটা দেওয়াই একমাত্র লক্ষ্য থাকে।”
মুম্বই অধিনায়ক রাহুল ভেকে একসময় খেলেছেন মোহনবাগানের হয়ে। সেই দলের বিরুদ্ধেই শনিবার ফাইনালে খেলতে নামছেন তিনি। তবে কলকাতা মিডিয়া যতই সেই আবেগকে উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করুক না কেন রাহুলের কাছে শনিবারের সন্ধেয় মোহনবাগান শুধুই তাঁর প্রতিপক্ষ।
বলছিলেন, “আমরা এর আগে এই মরসুমে তিনবার মোহনবাগানের বিরুদ্ধে খেলেছি। তাই নতুন কিছু নয়। আলাদা কোনও অনুভূতিও নেই। এটা আমাদের জন্য ট্রফি জয়ের ম্যাচ। আর আমরা চাইব ক্লিনশিট রাখতে। ওদের দলে যেমন ভাল প্লেয়ার রয়েছে আমাদেরও ভাল প্লেয়ার আছে। অতীত নয় আমরা এই ম্যাচটা জিততে নামব।”
রাহুল ভেকে ছাড়াও এই দলে রয়েছেন আরও এক ফুটবলার যিনি খেলে গিয়েছেন কলকাতায়। তবে তিনি খেলেছেন লাল-হলুদ জার্সি গায়ে। তিনি জয়েশ রানে। এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে ছিলেন তিনিও। তবে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা তাঁর জন্য আইএসএল ফাইনালে মুম্বইকে সমর্থন করবেন কি না তা নিয়ে ভাবতে নারাজ তিনি। কলকাতা এখন স্মৃতি, বর্তমান মুম্বই, তাই মুম্বইয়ের জয়ই এখন মূল লক্ষ্য তাঁর কাছে। তবে তিনিও কলকাতার সমর্থকদের প্রশংসা না করে পারলেন না।
পাশাপাশি উঠে এল তাঁর সঙ্গে ছাংতের ফুটবল মাঠের বোঝাপড়ার কথা। সেমিফাইনালে প্রথম লেগের ম্যাচে গোয়ার মাঠে এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে অতিরিক্ত সময়ে দুরন্ত কামব্যাকের নেপথ্যে ছিল জয়েশ-ছাংতে জুটি। ০-২ গোলে পিছিয়ে থাকা ম্যাচ ৩-২ গোলে জয়ের পিছনে ছাংতের জোড়া গোলের পিছনে ছিল জয়েশ রানের অনবদ্য পাস। জয়েশ বলছিলেন, “আমাদের দু’জনের মাঠের বাইরের বোঝাপড়াটাই মাঠের মধ্যে ভীষনভাবে কাজ করে যায়।”
সেদিন এই জুটি অসাধ্য সাধন করেছিল। দ্বিতীয় লেগে অবশ্য বেশি খাটতে হয়নি মুম্বইকে। শেষ পর্যন্ত আরও একবার মোহনবাগানের মুখোমুখি মুম্বই। আইএসএল ২০২৩-২৪-এ এই নিয়ে তৃতীয় বার দেখা হচ্ছে দুই যুযুধান প্রতিপক্ষের। মরসুমে অবশ্য চতুর্থবার দেখা হতে চলেছে দুই দলের। প্রথমবার দেখা হয়েছিল ডুরান্ড কাপে। এদিন শুরুতেই সেটা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন রাহুল ভেকে। সব মিলে মুম্বই কোচ, প্লেয়াররা মেনেই নিচ্ছেন ফাইনাল সবসময় আলাদা ম্যাচ।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার