অলস্পোর্ট ডেস্ক: ইস্টবেঙ্গলের সামনে এখন আর হারানোর কিছু নেই। এখন যতটুকু লড়াই বেঁচে রয়েছে সেটা সম্মানের। কার্লেস কুয়াদ্রাত পরবর্তী সময়ে এই ইস্টবেঙ্গলকে অন্য যে কোনও কোচ কত দূর নিয়ে যেতে পারে তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। প্রমাণ হয়ে গিয়েছে, দল খারাপ ফল মানেই দোষ কোচ নয়। নেপথ্যে আরও অনেক কিছু কাজ করে, যা দলের পারফর্মেন্সের উপর প্রভাব ফেলে। না হলে ইস্টবেঙ্গলকে সম্মান এনে দেওয়া একজন কোচকে পরের মরসুমে শুরুর ব্যর্থতার দায় নিয়ে সরে যেতে হয়! অতী বড় ইস্টবেঙ্গল সমর্ধকও এটা মেনে নেবেন, সুপার কাপ দেওয়া, ডার্বি জেতানো কোচকে সরিয়ে ঠিক করেনি ক্লাব কর্তৃক্ষ। যার দায় মরসুমের শেষ পর্যন্ত বহন করতে হবে অস্কার ব্রুজোঁকে। তাও শুক্রবার মুম্বই থেকে এক পয়েন্ট নিয়ে ফিরছে তাঁর দল, এটাই যা স্বস্তি।
তবে হ্যাঁ, এই দলটা এই মুহূর্তে মিনি হাসপাতালে পরিণত হয়েছে। গত মরসুমের মতো এই মরসুমে একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর দীর্ঘ চোটের কবলে চলে গিয়েছেন দলের রক্ষণের অন্যতম ভরসা আনোয়ার আলি। এমনিতেই রক্ষণে বাকি যাঁরা রয়েছেন তাঁরা কলকাতা লিগে খেলারও যোগ্য নন। বিশেষ করে দুই বিদেশি হিজাজি মেহের আর হেক্টর ইউয়েস্তে। ডিফেন্সে প্লেয়ারের অভাব এই জায়গায় পৌঁছেছে যে পিভি বিষ্ণু, নন্ধাদের মতো অ্যাটাকিং মিডিওকে রক্ষণে খেলাতে হচ্ছে কোচের। আনোয়ারের পর চোটের জন্য বাইরে চলে গিয়েছেন হিজাজিও। বরং এদিন নজর কাড়লেন নুঙ্গা। যে ভাবে গিলের বার কয়েক ভুল আউটিংযে প্রতিপক্ষের সামনে গোলের দরজা খুলে দিয়েছিল, সেখান থেকে দলকে উদ্ধার করলেন তিনিই। আবার নিশ্চিত গোলের সুযোগও বাঁচালেন গিল।
অনেক না থাকার মধ্যেও মুম্বই থেকে তিন পয়েন্ট নিয়ে ফিরতে চেয়েছিলেন অস্কার ব্রুজোঁ। সত্যিই ইস্টবেঙ্গল কোচকে আজকাল বেশ অসহায় দেখায়। চাওয়া আর পাওয়ার মধ্যে সামঞ্জস্য রাখতে রীতিমতো হিমশিম অবস্থা তাঁর। তাও এদিন লড়াই করতে দেখা গেল ইস্টবেঙ্গলকে। শুধু গোলের সামনে যাঁকে রেখে অনেক বড় স্বপ্ন দেখেছিল লাল-হলুদ টিম ম্যানেজমেন্ট সেই দিয়ামান্তাকস পুরো মরসুমে গত বারের একটুও ঝলক দেখাতে পারলেন না। বরং চূড়ান্ত ব্যর্থ। এদিন ৪-৩-৩-এ দল সাজিয়ে আক্রমণাত্মক ফুটটবলেরই ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছিলেন কোচ।
ম্যাচ শুরুর ১৩ মিনিটেই গোলের বল তৈরি করে ফেলেছিলেন সেলিস এবং নন্ধা। কিন্তু একাই মুম্বই দূর্গ রক্ষা করলেন লাচেনপা। প্রতিপক্ষের ঘরের মাাঠে ম্যাচের রাশ শুরু থেকে দখলে রেখেছি ইস্টবেঙ্গল। মুম্বই বক্সে লাল-হলুদ হানায় রীতিমতো ব্যস্ত থাকতে হল প্রতিপক্ষ রক্ষণকে। প্রথম ৩৫ মিনিটের পর থেকে খেলায় ফিরতে শুরু করে ক্রাতকির ছেলেরা। ৪৪ মিনিটে দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বিষ্ণুর অসাধারণ বল ফাঁকা গোল পেয়েও রাখতে পারলেন না দিয়ামান্তাকস। সিটার মিস করলেন সঙ্গে হলুদ কার্ডও দেখলেন। প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে তাঁর শট পোস্টে লেগে ফিরল। এদিন বিষ্ণু, সেলিসরা যে বল বাড়ালেন দিয়ামান্তাকসকে সেখান থেকে গোল করতে না পারাটা অপরাধ।
৭৪ মিনিটে নন্ধা যেটা করলেন সেটা রীতিমতো চমকে দেওয়ার মতো। বক্সের বাইরে থেকে মুম্বইয়ের একটা আক্রমণ হাত দিয়ে আটকানোর চেষ্টা করলেন। কেন সেটা তিনিই বলতে পারবেন। যার জন্য হলুদ কার্ড দেখলেন। এর ঠিক পরের মিনিটেই আবার দিয়ামান্তাকসের হেড পোস্টে লেগে ফিরল। যাইহোক, হেরে ফিরতে হচ্ছে না ইস্টবেঙ্গলকে। এই গোলশূন্য ম্যাচ একাধিক গোলে জিতে ফিরতে পারত অস্কার ব্রুজোঁর দল। তবে এই পরিস্থিতিতে এক পয়েন্টও ইস্টবেঙ্গলের জন্য বড় প্রাপ্তি।
ইস্টবেঙ্গল: বিশাল কাইথ, লাল চুংনুঙ্গা, নিশু কুমার, হেক্টর ইউয়েস্তে, পিভি বিষ্ণু (সায়ন), নন্ধা কুমার, সৌভিক চক্রবর্তী, নাওরেম মহেশ সিং, রিচার্ড সেলিস, ডেভিড লালহানসাঙ্গা (মার্ক), দিমিত্রিয়স দিয়ামান্তাকস
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার