সুচরিতা সেন চৌধুরী: আইএসএল-এর শুরুটা মোটেও ভাল হয়নি ইস্টবেঙ্গল এফসির। দুটো অ্যাওয়ে ম্যাচ দিয়ে আইএসএল ২০২৪-২৫ শুরু করেছে কার্লেস কুয়াদ্রাতের দল। দুটোতেই হারের মুখ দেখতে হয়েছে। প্রথম ম্যাচে বেঙ্গালুরু এফসির কাছে হারের পর কেরালা ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে এগিয়ে গিয়েও হেরেই কলকাতায় ফিরতে হয়েছে। এবার সামনে গোয়া এফসি। ঘরের মাঠে ঘুরে দাঁড়ানোর এটাই কি তাহলে মোক্ষম সুযোগ? কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত গোয়াকে সহজ প্রতিপক্ষ না মানলেও, ঘুরে দাঁড়ানোর মঞ্চ হিসেবে ঘরের মাঠকেই বেছে নিতে চাইছেন তিনি। বলছিলেন, “বড় দলের ক্ষেত্রে এমনটা হয়। হারলে অনেক আলোচনা হয়। বিভিন্ন লোক বিভিন্ন কথা বলে। আবার জয়ে ফিরলে চিত্রটা বদলে যায়।”
তবে ঘরের মাঠে নামার আগে চোট-আঘাত নিয়ে বেশ কিছুটা সমস্যায় ইস্টবেঙ্গল কোচ। দিয়ামান্তাকোসের অনুশীলনে হালকা চোট হলেও তাঁকে নিয়ে ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। সল ক্রেসপোও সুস্থ নন। চোট রয়েছে রাকিপেরও। কোচ বলছিলেন, “সল ক্রেসপোকে কাল পাব কিনা জানি না। আমাদের সামনে কঠিন লড়াই। আইএসএল-এর পাশাপাশি খেলতে হবে এএফসিও। তাই কাউকে নিয়ে ঝুঁকি নেব না। ফুটবলে এমনটা হয়। দিয়ামান্তাকোসেরও হালকা চোট রয়েছে. ওকে নিয়ে ঝুঁকি নেব না। চোট রয়েছে রাকিপেরও।”এদিন এই তিনজনের কেউই অনুশীলনে নামেননি, যদিও মাঠে ছিলেন।
ডুরান্ড, এএফসি ও আইএসএল মিলে পর পর চারটি ম্যাচ হেরেছে ইস্টবেঙ্গল। সেখান থেকে ঘরের মাঠে খেলতে নামছে দল। তার আগে হারতে থাকা দলের কোচ হিসেবে রীতিমতো চাপে থাকারই কথা কুয়াদ্রাতের। সেটা মেনেও নিচ্ছেন তিনি। বলছিলেন, “ফুটবলে সব সময়ই চাপ থাকবে। সেটা সমস্যা নয়। একটা জয় আমাদের জায়গাটা বদলে দিতে পারে। গত মরসুমে আমরা পর পর তিনটে ম্যাচ হেরে জয়ে ফিরেছিলাম।” এবারও তেমন কিছু অপেক্ষায় তিনি।
একই কথা বলছেন কোচের পাশে বসে থাকা মাদিহ তালাল। শুধু একটা জয়ে ফেরার অপেক্ষা। বলছিলেন, “হ্যাঁ, আমরা হেরেছি। দলে অনেক নতুন প্লেয়ার রয়েছে। একে অপরকে বুঝতে সময় লাগে। আমি জানি, ফুটবলে অনেকবেশি সময় নিলে চলবে না। আমরা আমাদের ভুল ত্রুটি শুধরেই এই ম্যাচে নামব।” কেরালা ম্যাচে ভাল শুরু করেও কীভাবে দল হেরে গেল এবং ম্যাচ থেকে ছিটকে গেল সেটা নিয়ে নিশ্চিত না হলেও নিজেদের ভুল মেনে নিচ্ছেন। বলছিলেন, “আমি জানি না গত ম্যাচে ঠিক কী হয়েছিল। কেন শুরুটা ভাল করেও দ্বিতীয়ার্ধটা খারাপ খেললাম। তবে যা ভুলভ্রান্তি হয়েছে তা শুধরেই আমরা এই ম্যাচে নামব।”
ইস্টবেঙ্গল এই মরসুমে যত আগে প্রি-সিজন শুরু করেছিল তত আগে কেউই করেনি। তাও দলের পারফর্মেন্সে তার প্রভাব নেই। তা নিয়েই বার বার সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে। সেটা মেনে নিচ্ছেন প্লেয়ার, কোচ দু’জনেই। কোচ বলছে, “এটা সত্যি আমরা অনেকদিন আগে প্রি-সিজন শুরু করেছি। তবে তার মাঝে এমন অনেক কিছু ঘটেছে, যেমন আনোয়ারের ঘটনা। ওকে গত ম্যাচে আমি প্রথম খেলাতে পেরেছি। এর সঙ্গে আমরা সবাইকে একসঙ্গে ফিট অবস্থাায় পাইনি। আমাদের দলে অনেক জুনিয়র পর্যায়ের প্লেয়ার রয়েছে, যারা তৈরি হচ্ছে।” তালাল বলছেন, “আমরা অনেকদিন আগে শুরু করেছি। তবে প্রি-সিজন আর খেলাটা এক নয়। আমরা খেলার মধ্যে দিয়ে তৈরি হচ্ছি। আমরা ঘুরে দাঁড়াব।”
কিন্তু ঠিক কোথায় সমস্যা হচ্ছে ইস্টবেঙ্গলের? হয়তো কোচ সেটা ধরে ফেলেছেন। তাঁর কথায়, “শুরুতে যেভাবে দল খেলছে সেভাবে পরের দিকে খেলতে পারছে না। হয়তো ক্লান্তি চলে আসছে বা আত্মতুষ্ট হয়ে পড়ছে, কেন ৮৫ মিনিটে গিয়ে গোল হজম করতে হচ্ছে? ম্যাচ হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে। আমরা কেরালা ম্যাচে পরের দিকে ওদের আমাদের উপর চেপে বসতে দিয়েছিলাম।” এর থেকে ঠিক কী সিদ্ধান্তে পৌঁছলেন কোচ? বলছিলেন, “আমাদের খেলার মুহূর্তগুলোকে বুঝতে হবে। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। দল ফিট হচ্ছে। কাজে লাগাতে হবে, জয়ে ফিরতে হবে।”
এটা ঠিক, এই ম্যাচ ইস্টবেঙ্গলের সামনে ডু অর ডাই ম্যাচ। ঘরের মাঠে, ফ্যানদের সামনে সেই জয় তুলে নিয়ে সবাইকে চুপ করাতে চাইবেন কুয়াদ্রাত। সে সমর্থক হোক বা প্রাক্তন প্লেয়ার।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার