সুচরিতা সেন চৌধুরী: মরসুমের শুরুটা মোটেও ভাল হয়নি ইস্টবেঙ্গলের। ডুরান্ড থেকে আইএসএল, বার বার হতাশাই জুটেছে ভাগ্যে। আইএসএল ২০২৪-২৫-এ এখনও জয়ের মুখ দেখা হয়নি লাল-হলুদ ব্রিগেডের। যার জেরে বদলে গিয়েছে দলের সাম্প্রতিক সময়ের সফল কোচ। কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতের হাত ধরেই দীর্ঘদিন পর সাফল্যের মুখ দেখেছিল কলকাতার অন্যতম দল ইস্টবেঙ্গল এফসি। সে ডুরান্ড ফাইনাল খেলা হোক বা সুপার কাপ জয়, এমনকি দীর্ঘদিন পর মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ডার্বি জয়ের স্বাদ পেয়েছিল সমর্থকরা। সেই কোচকেও সরে যেতে হয়েছে। তার জায়গায় রাতারাতি নিয়ে আসা হয়েছে অস্কার ব্রুজোঁকে। ব্যর্থতার দায়ে যে দলের কোচ বদলে যায়, সে দলের দায়িত্ব নেওয়া সহজ কাজ নয়। ব্রুজোঁর জন্যও সহজ হয়নি। সে কথা কোচ নিজে মুখে না বললেও আইএসএল-এ মহমেডানের বিরুদ্ধে নামার আগে হাঁটে হাড়ি ভেঙে দিলেন দলের অন্যতম প্লেয়ার নন্ধাকুমার।
‘‘কোচিং স্টাফ বদলে যাওয়া প্লেয়ারদের জন্য সহজ নয়। কিন্তু কোচ প্রথম প্রথম খুব বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছিলেন। একদিন ট্রেনিং করিয়েই নেমে পড়তে হয়েছিল ম্যাচে। সব মিলে সমস্যায় ছিলেন।’’ ম্যাচের মধ্যে তাঁকে অন্য প্লেয়ারের নামে ডাকার ঘটনার কথাও হাসতে হাসতে ভাগ করে নিলেন নন্ধা। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দ্রুত দলকে সাফল্যের রাস্তায় হাঁটতেও সাহায্য করেছেন তিনি। সেটা আবার আন্তর্জাতিক পর্যায়ে।
তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, কোচ বদলে দলের মধ্যে কতটা বদল এল শেষ পর্যন্ত?
নন্ধা বলছেন, ‘‘বদল তো এসেছে। ড্রেসিংরুম চনমনে রয়েছে। পাশাপাশি আমরা স্বাধীনভাবে খেলার সুযোগ পাচ্ছি। সব কিছুই বদলে গিয়েছে, আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছি। এবার শুরু দরকার তিন পয়েন্ট।’’ আর এই তিন পয়েন্টের জন্যই মহমেডান ম্যাচকেই পাখির চোখ করছে তাঁর দল, সেটা বোঝা গেল নন্ধার কথায়। আসলে এটাই ফুটবল। সাময়িক ব্যর্থতা দীর্ঘ সাফল্যকে ঢেকে দেয়। তাই এখন আর পিছন ফিরে তাকাতে চায় না ইস্টবেঙ্গল ফুটবলাররা। এদিনই নন্ধার পাশে বসে ভারতীয় ফুটবলারদের প্রশংসা শোনা গিয়েছে ব্রুজোঁর মুখে। সেটার মান রাখতে চাইবেন নিশ্চই।
কোচের মতো এএফসির পারফর্মেন্সকে একদম উড়িয়ে দিচ্ছেন না নন্ধাকুমার। তিনি বলছেন, ‘‘অবশ্যই এএফসির ফল আমাদের জন্য খুবই সদর্থক। এবার লক্ষ্য এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখা। তিন পয়েন্ট পেতে হবে।’’ এএফসিতে গোল করেছেন। দলের জয়ে নিজের ভূমিকা রেখেছেন। গত মরসুমে ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের ভালবাসার মানুষ হয়ে উঠেছিলেন নন্ধা। কিন্তু এই মরসুমের শুরুটা দলের মতোই তাঁরও ভাল হয়নি। দলের সঙ্গে সঙ্গে তিনিও ফর্মে ফিরেছেন। বলছিলেন, ‘‘দলের জয়ে নিজের ভূমিকা রাখতে পেরে আমার ভাল লাগছে।’’
সমর্থকদেরও পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। বলছিলেন, ‘‘বড় ক্লাবে খেলার সব থেকে বড় প্রেরণাই হচ্ছে সমর্থক। এএফসি ম্যাচে ফ্যানরা ভুটানে পৌঁছে গিয়েছিল আমাদের সমর্থন করতে। এটাই অনেক বড় বিষয়। আমি ফ্যানদের বলব, আমার পাশে যেন তারা একশো শতাংশ এইভাবেই থাকে।’’
তিনি এও জানেন, এখনও অনেক রাস্তা চলা বাকি। বলেন, ‘‘আমাদের এখনও অনেক রাস্তা চলা বাকি। আপাতত তিন পয়েন্ট পেতেই হবে। সঙ্গে ক্লিনশিট রাখার চেষ্টা করতে হবে, যেটা আমরা পাইনি। আমি এই ম্যাচের জন্য মুখিয়ে রয়েছি।’’
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার