মোহনবাগান ২ (জেসন কামিন্স-পেনাল্টি, সাহাল আব্দুল সামাদ)
নর্থইস্ট ২ (আলাদিন আজারে, ফার্নান্দেজ হেরো)
টাইব্রেকার:
মোহনবাগান ৩ জেসন কামিন্স (গোল), মানবীর সিং (গোল), লিস্টন কোলাসো (সেভ), দিমিত্রি পেত্রাতোস (গোল), শুভাশিস বসু (সেভ)
নর্থইস্ট ৪ ফার্নান্দেজ হেরো (গোল), মিগুয়েল জাবাকো (গোল), পার্থিব গোগোই (গোল), আলাদিন আজারে (গোল)
সুচরিতা সেন চৌধুরী: অনেকটা আশা জাগিয়েও শেষরক্ষা হল না। তীরে এসে তরী ডুবলো মোহনবাগানের। গত দুই ম্যাচে পিছিয়ে পড়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল মোহনবাগান। দলকে সমতায় ফিরিয়ে টাইব্রেকারে শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ফল নির্ধারিত হয়েছিল। হারতে হারতে জেতা রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে টানটান উত্তেজনার ফাইনাল আর চাইছিলেন না মোহনবাগান কোচ থেকে ফুটবলার কেউই। শনিবারের যুবভারতীতে নর্থইস্ট ইউনাইটেডের বিরুদ্ধে ৯০ মিনিটেই ম্যাচ শেষ করার ইচ্ছের কথা আগের দিন সাংবাদিক সম্মেলনে শুনিয়েছিলেন মোলিনা। এও বলে দিয়েছিলেন, সব সময় একরকম হয় না। ডুরান্ড কাপ ২০২৪ ফাইনালেও ৯০ মিনিটে ম্যাচ শেষ করা গেল না। তবে আগের দুই ম্যাচের পিছিয়ে পড়ার ইতিহাস কাটিয়ে এদিন প্রথমার্ধেই দুই গোল করে এগিয়ে গিয়েছিল মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। শুধু চেনা জয়টাই এল না। নায়ক বিশালের মুকুট শেষ দিন জোড়া গোল বাঁচিয়ে নিয়ে গেলেন গুরমিত।
প্রি-ম্যচ সাংবাদিক সম্মেলনে এসে গ্রেগ স্টিওয়ার্ট নিজের ইচ্ছের কথা জানিয়েছিলেন, খেলতে চান প্রথম থেকে। ছাত্রের ইচ্ছের কথা জানতে পেরে তার মান রেখেছিলেন মোলিনা। যদিও সুযোগ পেয়ে তেমনভাবে জ্বলে উঠতে ব্যর্থ তিনি। শনিবার ডুরান্ড কাপ ২০২৪ ফাইনালে দিমিত্রি পেত্রাতোসকে বসিয়ে প্রথম দলে নামিয়েছিলেন গ্রেগকে। হাফটাইমে দলে এলেন দিমি। যে ভয়ঙ্কর ট্রায়োকে নিয়ে কথা উঠছে তা দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই মাঠে থাকলেও কোনও কাজে লাগল না। প্রথমার্ধ ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে শেষ করে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই দুই গোল হজম করে বসল মোহনবাগান। এতদিন পিছিয়ে পড়ে সমতায় ফিরেছে আর এদিন এগিয়ে গিয়েও তা ধরে রাখতে ব্যর্থ।
ম্যাচ শুরুর ৯ মিনিটের মধ্যেই পেনাল্টি আদায় করে নিয়েছিল মোহনবাগান। নর্থইস্টের আশীর আখতার বক্সের মধ্যে সাহালকে ফেলে দিলে পেনাল্টি পায় মোহনবাগান। পেনাল্টি থেকে গোল করতে ভুল করেননি জেসন কামিন্স। শুরুতেই গোল তুলে নেওয়ায় ঘরের মাঠে প্রায় হাজার ৫২-এর গ্যালারির সামনে অনেকটাই আত্মবিশ্বাসী দেখাচ্ছিল মোহনবাগানকে। তবে প্রথমার্ধ মোহনবাগানের হলে দ্বিতীয়ার্ধ নর্থইস্টের। সঙ্গে শেষটাও তাদেরই থেকে গেল। ক্লাবের ১০ বছরের ইতিহাসে প্রথম ট্রফি গেল নর্থইস্টের ঘরে। যেভাবে পুরো মোহনবাগান রক্ষণকে দাঁড় করিয়ে পর পর তাদের জালে বল জড়াল নর্থইস্ট তাতে বিরতিতে ড্রেসিংরুমে ভোকাল টনিক পেয়েছিলেন ফুটবলাররা নিশ্চিত।
তার আগে অবশ্য ২-০ করে দিয়েছিল মোহনবাগান। ১১ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে এগিয়ে যাওয়ার পর প্রথমার্ধের অতিরিক্ত সময়ে (৪৫+৫ মিনিটে) ২-০ করেন সাহাল। বাঁ দিক থেকে লিস্টন কোলাসোর অনবদ্য কাট করে ঢুকে মাপা ক্রসে চলতি বলেই সাহালের শক্তিশালী শট চলে যায় গোলে। ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধে খেলতে নেমে রীতিমতো খাবি খেল মোহনবাগান। রক্ষণের পুরনো রোগ আবার বেরিয়ে এল। তা থেকে প্রমান হয়ে গেল প্রথমার্ধে আক্রমণই করেনি নর্থইস্ট। দ্বিতীয়ার্ধে আক্রমণ শানাতেই বেরিয়ে এল চেনা সমস্যা। যার ফল তিন মিনিটের মধ্যেই দুই গোল করে সমতায় ফিরল নর্থইস্ট।
৫৫ মিনিটে আলাদিন আজারির গোলে ১-২ করে নর্থইস্ট। তার ঠিক তিন মিনিটের মধ্যে ২-২ করে ফেলেন ফার্নান্ডেজ হেরো। তার পর আর প্রথমার্ধের খেলা দ্বিতীয়ার্ধে ফিরিয়ে আনতে পারেনি মোহনবাগান। নির্ধারিত সময়ের ম্যাচ শেষ হয় ২-২ গোলে। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারেই নিষ্পত্তি। প্রতিদিন বিশাল কাইথ ম্যাচ জিতিয়ে দেবেন এটা যে হবে না তা ডুরান্ড শেষের টাইব্রেকারে প্রমান হয়ে গেল। বরং জ্বলে উঠলেন আর এক গোলকিপার। লিস্টন কোলাসো ও শুভাশিস বসুর শট আটকে দিয়ে গোল্ডেন গ্লাভস জিতে নিলেন গুরমিত সিং।
মোহনবাগান: বিশাল কাইথ, শুভাশিস বসু, থমাস আলড্রেড, আলবার্তো রডরিগজ (আশিস রাই), লিস্টন কোলাসো, অনিরুদ্ধ থাপা, আপুইয়া, সাহাল আব্দুল সামাদ (দিমিত্রিয়স পেত্রাতোস), গ্রেগ স্টিওয়ার্ট (অভিষেক সূর্যবংশী), মনবীর সিং, জেসন কামিন্স
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার