অলস্পোর্ট ডেস্ক: ওড়িশা এফসির ঘরের মাঠে তাদের বিরুদ্ধে খেলাটা সব সময়ই কঠিন। বিশেষ করে প্রতিপক্ষ যখন মোহনবাগান। শুরু থেকেই এই দুই দলের লড়াই ঘিরে উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে থাকে। এখন তো সেটা অনেক বেড়ে গিয়েছে, দুই প্রাক্তন মোহনবাগানী রয় কৃষ্ণা আর হুগো বুমৌসের ওড়িশায় যোগ দেওয়ার পর থেকে। প্রাক্তন দলকে মাত দেওয়ার জন্য মুখিয়ে থাকেন তাঁরা। প্রতিপক্ষ যদি ওড়িশা হয় তাহলে মোহনবাগানও রীতিমতো তেতে থাকে মাঠে নামার আগে থেকেই, সে ঘরের মাঠ হোক বা অ্যাওয়ে ম্যাচ। রবিবার ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল। সেখানে শুরুতেই মোহনবাগানকে গোল হজম করতে হল নিয়ম ভেঙে।
তখন সবে ম্যাচ শুরু হয়েছে। গ্যালারিতে সবাই তখনও গুছিয়ে বসতে পারেনি। তার মধ্যেই আশিস রাই আর বিশাল কাইথের যুগ্ম ভুলে ইনডাইরেক্ট ফ্রিকিক পেয়ে যায় ওড়িশা এফসি। ম্যাচের বয়স তখন সবে ৪ মিনিট। বক্সের মধ্যে থেকেই গোলকিপারকে লক্ষ্য করে ব্যাকপাস করেছিলেন আশিস রাই। সেই বল হাত দিয়ে ধরতেই প্রতিবাদ করে ওড়িশা ফুটবলাররা। নিয়ম অনুযায়ী বক্সের মধ্যে থেকে ব্যাকপাস হাত দিয়ে ধরতে পারবে না গোলকিপার। কিন্তু সেই ভুলটাই করে ফেলেন বিশাল। বকসের মধ্যেই ফ্রি কিক পায় ওড়িশা। জোহুর ছোট্ট টোকা থেকে মোহনবাগানের দেওয়াল ভেঙে গোল করেন হুগো বুমৌস।
শুরুতেই পিছিয়ে পড়ে আক্রমণে ঝাঁঝ বাড়ায় মোহনবাগান। যার ফল ৩৬ মিনিটেই সমতায় ফেরে সবুজ-মরুন ব্রিগেড। কর্নার থেকে দিমিত্রির ক্রস বক্সের মধ্যে থেকেই মাপা হেড করেন মনবীর সিং। যা ডানদিকের কোণা দিয়ে চলে যায় গোলে। বলের নাগাল পেলেও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি প্রতিপক্ষ গোলকিপার অমরিন্দর সিং। প্রথমার্ধ শেষ হয় ১-১ গোলে সমতা রেখেই।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে দুই দলই পর পর আক্রমণ করতে শুরু করে। কখনও ওড়িশা তো কখনও মোহনবাগান। লক্ষ্য গোলের ব্যবধানটা বাড়িয়ে নেওয়া। গোলের নিচে এদিন আবারও বেশ কিছু অসাধ্য সাধন করেন বিশাই কাইথ। এর মধ্যেই ৫৭ মিনিটে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন অনিরুদ্ধ থাপা। তাঁর জায়গায় নামেন দীপক টাংরি। ৫৯ মিনিটে ওড়িশার গোলমুখি শট পোস্টে লেগে না ফিরলে বিপদে পড়তে হত মোহনবাগানকে। সুযোগ পেয়েছিলেন রয় কৃষ্ণাও, কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি। দিমি-মনবীর জুটি এদিন বার বার ওড়িশা রক্ষণকে সমস্যায় ফেলেন।
৭৭ মিনিটে মনবীরকে তুলে সামাদ ও ম্যাকলারেনকে তুলে কামিন্সকে নামান মোহনবাগান কোচ হোসে মোলিনা। তার আগে বেশ কয়েকবার মোহনবাগান গোলের সামনে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয় কিন্তু জটলার মধ্যে থেকে গোলের ব্যবধান বাড়াতে পারেনি ওড়িশা। আর বিশাল কাইথের নির্ভরযোগ্য হাত তো ছিলই। নিজের ভুলে প্রতিপক্ষকে গোল পাইয়ে দিয়েছিলেন ঠিকই। কিন্তু সেই ভুল বার বার শুধরে নিলেন পুরো ম্যাচে। শেষের দিকে বক্সের মধ্যে যেভাবে রয় কৃষ্ণার পা থেকে বল কাড়লেন তা প্রশংসনীয়। পুরো ম্যাচে অসাধারণ লড়াই করলেন দিমিত্রি পেত্রাতোস।
ম্যাচের নির্ধারিত সময়ের সাত মিনিট বাকি থাকতে এক সঙ্গে হুগো বুমৌস, রয় কৃষ্ণাকে তুলে ডেলগাদো ও মরিসিওকে নামিযে খেলায় গতি আনার চেষ্টা করলেন ওড়িশা কোচ। শেষ বেলায় লিস্টন কোলাসোকে তুলে আশিক কুরুনিয়ানকে নামালেন মোহনবাগান কোচ। এত পরিবর্তনেও কোনও দলই স্কোর লাইনে কোনও পরিবর্তন আনতে পারলেন না। ম্যাচ শেষ হল ১-১ গোলেই। টানা তিন ম্যাচে ক্লিনশিটের পর ওড়িশার বিরুদ্ধে ড্র করেই সন্তুষ্ট থাকতে হল মোহনবাগানকে।
মোহনবাগান: বিশাল কাইথ, আশিস রাই, থমাস আলড্রেড, আলবার্তো রডরিগেজ, শুভাশিস বোস, অনিরুদ্ধ থাপা (দীপক টাংরি), লিস্টন কোলাসো (আশিক কুরুনিয়ান), আপুইয়া, মনবীর সিং (সাহাল আবদুল সামাদ), দিমিত্রি পেত্রাতোস, জেমি ম্যাকলারেন (জেসন কামিন্স)
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার