সুচরিতা সেন চৌধুরী: এ এক অসাধারণ মুহূর্ত, স্বস্তির রাত। ইস্টবেঙ্গল কোচ অস্কার ব্রুজোঁ অবশ্য বলছেন, “দ্বিতীয়ার্ধের ইস্টবেঙ্গলটাই আসলে আমরা। এই অনুশীলটাই তো রোজ করি। প্রথমার্ধটা ব্যতিক্রম ছিল।” আত্মবিশ্বাসটা আসলে একটু একটু করে তৈরি করছিলেন ভেঙে পড়া একটা দলের অন্দরে। সাত ম্যাচ সময় লেগেছে তাতে। তার পর দুই ম্যাচ জিতে আবার একটা হারের মুখ দেখা। তবে এবার যে ঘুরে দাঁড়ানোর নজির রাখল অস্কার ব্রুজোঁর ছেলেরা তা এক ধাক্কায় প্রত্যাশার পারদ অনেকটাই বাড়িয়ে দিল নিশ্চিত। শনিবারের ম্যাচে সেই প্রত্যাশা নিয়েই এদিনের প্রায় ১০ হাজারের গ্যালারি যে সেদিন দ্বিগুণের গণ্ডি পেরিয়ে যাবে তা আগাম বলে দেওয়া যায় চোখ বুজে। কারণ ছেলেদের তাঁতিয়ে দিয়েছেন অস্কার ব্রুজোঁ। আর এমনজয়, সমর্থকদের তাঁতিয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট।
প্রথমার্ধের পুরো সময়টা কোনঠাসা অবস্থায় হারতে থাকা একটা দল যে এভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারে তা এদিনের ম্যাচ না দেখলে বোঝা সম্ভব নয়। অনেকে তো প্রথমার্ধের শেষে স্টেডিয়াম ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। তাঁরা নিশ্চয়ই আফসোস করছেন এখন। আইএসএল-এ ইস্টবেঙ্গলের সেরা ম্যাচটা গ্যালারিতে বসে দেখা হল না যে। তবে কোচ ব্রুজোঁর ভোকাল টনিক যে এভাবে কাজ করবে তা হয়তো স্বয়ং কোচও ভাবতে পারেননি।
বিরতিতে প্লেয়ারদের এমন কী বললেন যে ০-২ গোলে পিছিয়ে থাকা ম্যাচ ৪-২ গোলে জিতে শেষ হল?
ব্রুজোঁ বলেন, “আমাদের প্রথমার্ধে সব যেমন যেমন থাকার কথা তেমনি ছিল। দ্বিতীয়ার্ধে তির কোনও পরিবর্তন হয়নি। আমি বিরতিতে বলি, তোমরা ঘরের মাঠে খেলছ গ্যালারি থেকে সারাক্ষণ সমর্থকরা তোমাদের জন্য চিৎকার করে যাচ্ছে। তোমাদের দেখাতে হবে পরিবর্ত রাও ৯০ মিনিট খেলতে পারে। তার পর মাঠে নেমে ওরা যেটা করল সেটা আসলে মানসিকতার পরিবর্তন। আমাদের কোনও টেকনিক্যাল সমস্যা ছিল না, সমস্যা ছিল বিশ্বাসের, অভিব্যক্তির। যেটা দ্বিতীয়ার্ধে ওরা দেখিয়েছে।”
আসলে পার্থক্যটা গড়ে দিয়ে গেল একটাই পরিবর্তন। এমনটাই দাবি করেছেন পঞ্জাব এফসি কোচ। প্রথমার্ধে ২-০ গোলে এগিয়ে থাকা দলকে যদি ৪-২ গোলে হারতে হয় তখন স্বাভাবিকভাবেই হতাশা আসে। হতাশ ছিলেন তিনিও। তবুও পঞ্জাব কোচ নিজের দলের একাধিক দোষের পাশাপাশি ইস্টবেঙ্গলের একটা পরিবর্তনকেই এই ম্যাচের ফল বদলে দেওয়ার মূল কারণ হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন, “ওদের ওই ৮২ নম্বর (বিষ্ণু) নামার পরেই খেলাটা ঘুরে গেল। বাকিটা আমার দলের একাধিক ভুল সঙ্গে শুরুতেই ইভানের চোট পেয়ে যাওয়া আর আমাদের সব থেকে বিশ্বস্ত ডিফেন্ডারের ভুলে দুটো গোল হজম করা। এগুলোই আজকের ম্যাচে পার্থক্য করে দিল।”
বিষ্ণুকে নামানোটা যে মাস্টারপ্ল্যান হিসেবে কাজে লেগে গিয়েছে তা মেনে নিলেন ইস্টবেঙ্গল কোচ অস্কার। তিনি বলেন, “হ্যাঁ, এটা ঠিক যে বিষ্ণু নামার পর খেলা অনেকটাই ভাল হয়ে যায় বিশেষ করে উইং প্লে। পাশাপাশি মহেশের চোটের কারণেও তাঁকে তুলে নিতে হয়।”
মহেশের চোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ওর চোট গুরুতর নয়, প্রথমার্ধে ও মাথার পেছনে আঘাত পেয়েছিল। বিরতিতে যখন ড্রেসিংরুমে ফিরল তখন দেখা গেল ও কী হয়েছে কিছু মনে করতে পারছে না। যে কারণে ওকে বিশ্রাম দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কাল থেকে ও স্বাভাবিকভাবেই আবার অনুশীলন করবে।” যদিও ম্যাচ শেষে হুইল চেয়ারে করে মাঠ ছাড়তে দেখা যায় না নাওরেম মহেশ সিংকে।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার