অলস্পোর্ট ডেস্ক: দীর্ঘ খারাপ সময় কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল দলটা। পর পর ম্যাচ জিতে ফিরে পেয়েছিল আত্মবিশ্বাসও। কিন্তু বাধ সাধল কিছু সিদ্ধান্ত যা একধাক্কায় সেই ফিরে পাওয়া আত্মবিশ্বাসে চির ধরানোর জন্য যথেষ্ট। তবে হাল ছাড়ছেন না ইস্টবেঙ্গল কোচ অস্কার ব্রুজোঁ। বরং দলের সঙ্গে দাঁড়িয়ে সবাইকে চাঙ্গা করারই চেষ্টা করছেন তিনি। কুয়াদ্রাতকে আইএসএল-এর শুরুতে সরিয়ে তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল দলকে সাফল্য এনে দেওয়ার লক্ষ্য়েই। সেটা তার পেতে লেগে গিয়েছে সাত ম্যাচ। অষ্টম ম্যাচে এসে প্রথম জয়ের মুখ দেখেছে দল। ঘরে বাইরে ম্যাচ জিতেই ঘুরে দাঁড়িয়েছিল। তার পরই বড় ধাক্কা। ম্যাচে রেফারিং থেকে শুরু করে প্লেয়ারদের চোট— সব কিছু নিয়ে জর্জরীত লাল-হলুদ শিবির।
সল ক্রেসপো আগেই ছিটকে গিয়েছিলেন। আগের ম্যাচে চোট পেয়ে ছিটকে গিয়েছেন মাদিহ তালাল। লাল কার্ডের জন্য নেই জিকসন সিং। তবে সুখবর সোমবার দলের সঙ্গে পুরো সময় অনুশীলন করলেন দিয়ামান্তাকোস। যা ভরসা দিচ্ছে কোচকে। তিনি আবার ফিরতে পারেন দলে। তবে দলের দুই গুরুত্বপূর্ণ বিদেশি দীর্ঘ দিনের জন্য ছিটকে যাওয়ায় দল গড়া নিয়ে সমস্যায় ইস্টবেঙ্গল কোচ। বলছিলেন, ‘‘চ্যালেঞ্জিং মুহূর্ত, সততার সঙ্গে মোকাবেলা করতে হবে।’’
তবে তিনি নিশ্চিত করে দিয়েছেন, দলের সঙ্গে যা ঘটছে তার পরও ইস্টবেঙ্গলকে সেরা দলগুলির মধ্যে নিয়ে যেতে হবে এবং তাঁর দল ইতিবাচক বার্তাই দিতে চলেছে এই ম্যাচে। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ভাল কাজ করছি, আগামীকাল ভালো প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা যাবে।’’ তবে প্রতিপক্ষকেও সমীহ করছেন ইস্টবেঙ্গল কোচ। তিনি বলেন, ‘‘বাস্তব দিক হল ওরা ১৮ পয়েন্টে রয়েছে। ওরা ধারাবাহিক, ট্যাকটিক্যালও খুব ভাল। এই অবস্থায় আমাদের জন্য আসল পরীক্ষা হতে চলেছে। আমরা দল হিসেবেই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হব। ট্যাকটিক্যাল দিক বাদ দিলে ঘরের মাঠে সমর্থকদের পাশে নিয়ে খেলাটা গুরুত্বপূর্ণ।’’
এদিকে আবারও রেফারি প্রসঙ্গ উঠে এল ইস্টবেঙ্গলের সামনে। কারণ গত কয়েক ম্যাচ ধরে এই সমস্যায় ভুগছে দল। তবে কোচ সরাসরি রেফারিকে আক্রমণ না করলেও ঘুরিয়ে বলেন, ‘‘আমার প্রতিপক্ষ আমাদের থেকে বেশি ফাউল করলেও আমরা কম প্লেয়ার নিয়ে শেষ করেছিলাম। এটা ঠিক আমরা সিদ্ধান্তের জন্য সমস্যায় পড়েছি যা আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। আশা করি কখনও আমাদের পক্ষে সিদ্ধান্ত হবে।’’ তবে এই নিয়ে তিনি মাথা খারাপ করতে চান না। বরং সামনে থেকে দলকে আবার ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করতে চান।
তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সামনে দুটো বিকল্প রয়েছে। রাতে না ঘুমিয়ে, সারাক্ষণ অনেক কিছু ভেবে কাটানো অথবা নিজের অবস্থান পরিবর্তন করে নতুন নতুন আইডিয়া দিয়ে দেখে নেওয়া কোনটা কাজ করছে। কোচ হিসেবে আমার কাছে দুটো বিকল্প রয়েছে, পাগলামো করা, বা আমরা যেটা রোজ করছি সেটার প্রতি আস্থা রাখা।’’ প্রতিপক্ষ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘ওরা এমন একটা দল যারা আইএসএল-এর বড় দলদের হারিয়েছে বড় ব্যবধানে। ধারাবাহিকতার পাশাপাশি ওদের দলে প্লেমেকার রয়েছে। আমরাও ধারাবাহিক, তাদের শক্তিকে আটকাতে হবে।’’
ব্রুজোঁর তাঁর লক্ষ্যের কথা জানিয়ে দিলেন এদিন। তিনি বলেন, ‘‘পঞ্জাবের কাছে ১০ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট রয়েছে। আমাদের এই ব্যবধানটা কমাতে হবে আগামী চার ম্যাচে। এটাই আমার লক্ষ্য।’’ এদিকে ইস্টবেঙ্গল কোচের প্রশংসা শোনা গেল পঞ্জাব কোচের গলায়। তাঁর মতে, যখন অস্কার ব্রুজোঁ আছে তখন যা কিছু হতে পারে। তিনি বলেন, ‘‘ব্রুজোঁ আসার পর থেকে ইস্টবেঙ্গল কিন্তু বদলে গিয়েছে। তার কিছু পরিকল্পনা আছে। তার ব্যক্তিত্বের প্রভাব দলের উপর পড়েছে। কালকের ম্যাচ কঠিন হবে।’’
তবে তিনি তালালের চোটে হতাশা প্রকাশ করেছেন। বলেন, ‘‘তালালের চোটের জন্য খারাপ লাগছে। ও গত বছর দলের অংশ ছিল। আমি কখনওই চাই না কেউ চোট পাক। আশা করি ও আরও শক্তিশালী হয়ে ফিরে আসবে। আমাদের চোট ও কার্ড সমস্যা রয়েছে। সমানে সমানে লড়াই হবে।’’
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার