অলস্পোর্ট ডেস্ক: অনেকটাই কাজ এগিয়ে গিয়েছে। এ বার শুধু শেষটুকু ভাল হওয়া দরকার। শেষটা ভাল হলেও যে ইস্টবেঙ্গল সেরা ছয়ের মধ্যে থেকে আইএসএলের লিগ শেষ করতে পারবে, তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু নিজেদের তরফ থেকে যে শেষ ম্যাচ জেতার চেষ্টায় কোনও রকম ত্রুটি রাখবেন না, তা জানিয়ে দিলেন দলের অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার হরমনজ্যোৎ সিং খাবরা ।
রবিবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে সল ক্রেসপো ও ক্লেটন সিলভার গোলে বেঙ্গালুরু এফসি-র বিরুদ্ধে ম্যাচ জিতে নেয় লাল-হলুদ বাহিনী। সুনীল ছেত্রী সমতা আনলেও শেষরক্ষা করতে পারেননি তিনি। এই জয়ের ফলে ২১ ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবলের ছ’নম্বরে উঠে এল কলকাতার দল। ছ’নম্বরে টিকে থাকার সম্ভাবনা বাড়াতে তাদের শেষ ম্যাচে পাঞ্জাব এফসি-কে হারাতেই হবে। তার পরেও তাকিয়ে থাকতে হবে নর্থইস্ট ইউনাইটেড ও চেন্নাইন এফসি-র শেষ ম্যাচগুলির ফলের দিকে।
রবিবার ম্যাচের পর খাবরা বলেন, “উত্তর ভারতে অ্যাওয়ে ম্যাচ খেললে সেখানে সমর্থন পাওয়া বেশ কঠিন। যদিও এই ম্যাচে গ্যালারি ফাঁকা থাকবে। তবে আমাদের সামনে একটা লক্ষ্য আছে। এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার”।
এ রকম একটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে কার্ড সমস্যার জন্য খেলতে পারবেন না দলের নির্ভরযোগ্য গোলকিপার প্রভসুখন গিল এবং মিডফিল্ডার শৌভিক চক্রবর্তী। সে জন্য খুব একটা অসুবিধা হবে না বলেই মনে করেন খাবরা। বলেন, “ওরা দলের খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ ঠিকই। তবে কোচ সব সময়ই বিকল্প পরিকল্পনা করে রাখেন এবং দলের অন্যান্য খেলোয়াড়দের সুযোগ দেন। সে শুরু থেকেই হোক বা ম্যাচের মাঝখানে। যে-ই মাঠে নামে সে জার্সির সন্মান রাখতে নিজেদের উজাড় করে দেয়। ইস্টবেঙ্গল নামটাই বিশাল ব্যাপার। তাই যে-ই খেলুক, নিজের সেরাটা দেবে। তার দায়িত্বও একই রকম থাকবে”।
তাই এখন অন্য কোনও দিকে মন না দিয়ে পাঞ্জাব এফসি-র বিরুদ্ধে বুধবারের ম্যাচে মনোনিবেশ করার কথা বলছেন অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার। বলেন, “মাঠের মধ্যে আমরা নিজেদের দায়িত্ব পালনে সদাসচেষ্ট। এখন আমাদের শেষ ম্যাচে মনোনিবেশ করতে হবে এবং প্লে অফে ওঠার সম্ভাবনা বজায় রাখতে হবে”।
দলের তরুণ তারকা আমন সিকে রবিবার বেশ ভাল পারফরম্যান্স দেখান। একটি অবধারিত গোলের সুযোগ পেয়েও অবশ্য তিনি তা হাতছাড়া করেন শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে না পেরে। এ ছাড়া সায়ন ব্যানার্জি, পিভি বিষ্ণুর মতো ইস্টবেঙ্গলের রিজার্ভ দল থেকে আসা ফুটবলাররাও যথেষ্ট ভাল খেলছেন। রবিবার তাঁদের ভূয়ষী প্রশংসাও করেন কোচ কুয়াদ্রাত। দলের এই তরুণদের নিয়ে খাবরা বলেন, “এ জন্যই তো ওদের তৈরি করা হয়েছে। ওদের তো আর এমনি এমনি ইস্টবেঙ্গলের মতো ক্লাবে সুযোগ দেওয়া হয়নি। গত দশ মাস ধরে একসঙ্গে কাজ করে চলেছি আমরা। উন্নতি তো হবেই”।
চলতি লিগে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে তিনটি ম্যাচে ৫১ মিনিট মাঠে থাকা ২১ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড আমন সিকে বলেন, “ইস্টবেঙ্গলের হয়ে মাঠে নামতে পারাটাই আমার কাছে বড় ব্যাপার। সে জন্য আমি খুশি। গোল করার দারুন একটা সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলাম আজ। কিন্তু সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারলাম না। আরও ভাল খেলতে হবে আমাকে। আশা করি, সেই সময়ও আসবে”।
কী ভাবে প্লে-অফে উঠতে পারে ইস্টবেঙ্গল?
লিগ টেবলে এখন যা অবস্থা, তাতে ইস্টবেঙ্গল (২১ ম্যাচে ২৪, গোলপার্থক্য ছয়ে থাকলেও এই জায়গাটা দখলের দৌড়ে তাদের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে চেন্নাইন এফসি (২০ ম্যাচে ২৪) ও নর্থইস্ট ইউনাইটেড এফসি (২০ ম্যাচে ২৩)। ইস্টবেঙ্গল শেষ ম্যাচে জিতলে তারা ২৭ পয়েন্ট নিয়ে লিগ শেষ করবে। অন্য দুই দলগুলির একটি যদি তাদের শেষ দুই ম্যাচেই জয় পায়, তা হলে তারা ইস্টবেঙ্গলের চেয়ে বেশি পয়েন্ট নিয়ে শেষ করবে। সেক্ষেত্রে ইস্টবেঙ্গলের যাত্রা এখানেই শেষ হয়ে যাবে।
চেন্নাইন ও নর্থইস্ট একে অপরের মুখোমুখি হবে মঙ্গলবার, চেন্নাইয়ে। এই ম্যাচে যদি ড্র হয় এবং চেন্নাইন যদি তাদের শেষ ম্যাচে এফসি গোয়াকে হারাতে পারে, তা হলে তারাই প্লে অফে চলে যাবে। শেষ দুই ম্যাচেই যদি চেন্নাইন ড্র করে, তা হলেও তারা দৌড় থেকে ছিটকে যাবে। তবে দুই ম্যাচেই তারা জিতলে রহিম আলিদের কেউ আটকাতে পারবে না।
নর্থইস্ট চেন্নাইন এফসি-র পরে শেষ ম্যাচে খেলবে ওডিশা এফসি-র বিরুদ্ধে। দুই ম্যাচেই জিতলে তারাই প্লে অফে খেলবে। একটি জয় ও একটি ড্র হলে এবং চেন্নাইন শেষ ম্যাচ হারলে বা ড্র করলে ইস্টবেঙ্গলই প্লে অফে উঠবে। কারণ, নর্থইস্টের বিরুদ্ধে দুই মুখোমুখিতে দুই দলই একবার করে জিতেছে। কিন্তু এই দুই ম্যাচের মোট গোলের বিচারে ইস্টবেঙ্গল এগিয়ে ৭-৩-এ। তাই ইস্টবেঙ্গল তাদের শেষ ম্যাচ জেতা ছাড়াও চাইবে, চেন্নাইন তাদের শেষ দুই ম্যাচের একটিতে হারুক এবং নর্থইস্ট তাদের শেষ দুই ম্যাচের যে কোনও একটিতে পয়েন্ট খোয়াক। এতগুলি যদি-কিন্তু এক হলে তবেই লাল-হলুদের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়তে পারে। না হলে ফের বিদায়।
(লেখা আইএসএল ওয়েব সাইট থেকে)
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার