অলস্পোর্ট ডেস্ক: এখনও পর্যন্ত পুরো ইউরো কাপ ২০২৪-এ দাপট দেখিয়েই ফাইনালে পৌঁছে গেল স্পেন। যদিও মঙ্গলবার গভীররাতে প্রথম সেমিফাইনালের শুরুটা করে দিয়েছিল ফ্রান্সই। কিন্তু স্পেন যে ফুটবলটা পুরো টুর্নামেন্টে খেলেছে তা দেখে অতি বড় ফ্রান্স সমর্থকও প্রথমে গোলের পর নিশ্চিত স্বস্তি পাননি। যার প্রমান দারুণভাব প্রথমার্ধেই দিয়ে দিল স্পেন। এদিন মাস্ক ছাড়াই খেলতে নেমেছিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচেই নাকে গুরুতর চোট পেয়ে ইউরো থেকে প্রায় ছিটকে গিয়েছিলেন গত বিশ্বকাপের তারকা স্ট্রাইকার। তাঁর নাকের চোট এতটাই গুরুতর ছিল যে তিনি যে এই টুর্নামেন্টেই আবার খেলতে পারবেন তা প্রাথমিকভাবে কেউই ভাবতে পারেননি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আহত নাককে আবারও চোটের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য মাস্ক পরেই এতদিন খেলছিলেন। এদিন তাঁকে পাওয়া গেল মাস্ক ছাড়া। কিন্তু এমবাপ্পের গভীর ক্ষত নিয়ে লড়াই কাজে দিল না। ২-১ গোলে ফ্রান্সকে হারিয়ে প্রথম ফাইনালিস্ট হিসেবে নাম লিখিয়ে ফেলল স্পেন।
ম্যাচ শুরুর ৮ মিনিটেই গোল করে ফ্রান্সকে এগিয়ে দিয়েছিল রানদাল কোলো মুনাই। গোলের বাঁ দিক থেকে এমবাপ্পেরই ক্রস একদম গোলের মুখেই পেয়ে গিয়েছিলেন মুনাই। উঁচু হয়ে আসা বলে মাথা ছুঁয়ে প্রতিপক্ষের জালে বল জড়ান তিনি। শুরুতেই এগিয়ে যায় ফ্রান্স। শুরুতে পিছিয়ে পড়ে আক্রমণে ঝাঁঝ বাড়ায় ফ্রান্স। আর তার ফল মাত্র ১২ মিনিটের মধ্যে সমতায় ফেরে স্পেন। গোলের কারিগর দলের কনিষ্ঠতম, ইউরোর কনিষ্ঠতম স্পেনের ওয়ান্ডার বয় লামিন ইয়ামাল।
ম্যাচের ২০ মিনিটে স্পেনের হয়ে ১-১ করে ইয়ামাল। আলভারো মোরাতার থেকে বক্সের বাইরে বল পেয়ে গিয়েছিলেন ইয়ামাল। সেখান থেকেই ফ্রান্স রক্ষণের ফাঁক গলে তাঁর শট পোস্টে ধাক্কা খেয়ে চলে যায় ফ্রান্স গোলে। গোলকিপার সঠিক দিকে ঝাঁপালেও সে বলের নাগাল তিনি পাননি। ইউরো সেমিফাইনালের ইতিহাসে কনিষ্ঠতম গোলদাতা হিসেবেও নাম লিখিয়ে ফেললেন তিনি। সমতায় ফেরার মাত্র ৪ মিনিটের মধ্যে ফ্রান্সকে পিছনে ফেলে এগিয়েও যায় স্পেন।
২৪ মিনিটে স্পেনের হয়ে ব্যবধান বাড়ালেন সেই দানি ওলমো। যিনি কোয়ার্টার ফাইনালে পার্থক্য গড়ে দিয়েছিলেন। সেদিন বাধ্য হয়েই দ্রুত তাঁকে পরিবর্ত হিসেবে নামাতে বাধ্য হয়েছিলেন কোচ। এবং নেমে দলের জয়ে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন। প্রথম গোল তো করেছিলেনই, দ্বিতীয় গোলেও ছিল তাঁরই অ্যাসিস্ট। এদিন খেললেন ৯০ মিনিটই। বক্সের ডান দিক থেকে ডান পায়ের শটে গোলের মাঝ বরাবর যে শটটি নিলেন তা আটকাতে পারেনি ফ্রান্স রক্ষণ। প্রথমার্ধেই ২-১ গোলে এগিয়ে গিয়ে আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে পৌঁছে যায় স্পেন। যা ধরে রাখল শেষ পর্যন্ত।
পুরো ইউরোতে স্পেন কোচ ইয়ামালকে পুরো ম্যাচ খেলাননি। কারণ সে দেশের শিশুশ্রম আইন। ইয়ামালের বয়স ১৬, তিনি সেই আইনের আওতায় পড়েন। এতদিন কোনও একটা অর্ধে তাঁকে খেলিয়েছেন। হয়তো তাঁর উপর বেশি চাপ তৈরি হোক সেটাও চাননি তিনি। তবে এদিন প্রায় পুরো ম্যাচেই তাঁকে দেখা গেল মাঠে। তবে আইন মেনে ম্যাচের শেষের দিকে তুলেও নিলেন কোচ। শুধু দেখা গেল না, পুরো সময়টাই ফ্রান্স রক্ষণকে ব্যস্ত রাখলেন তিনি। শেষ মুহূর্তে ফাউল করে হলুদ কার্ডও দেখলেন। এর মধ্যে কিছু সুযোগ তৈরি করল ফ্রান্সও। কিন্তু তৎপর ছিল স্পেন। শেষ মুহূর্তে নাকে চোট পেলেন স্পেনের লাপোর্তে। তবে তাঁকে মাঠ ছাড়তে হয়নি। নির্ধারিত সময়ে ম্যাচ শেষ করে ফাইনালে স্পেন।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার