সুচরিতা সেন চৌধুরী: খুব খুশি, আবার নয়ও। আইএসএল ২০২৪-২৫-এ মহমেডানের বিরুদ্ধে বড় জয়ের পর মোহনবাগান শিবিরে উৎসবের আবহ। পুজোর আগে সমর্থকদের জন্য উপহার বলেই দিলেন অধিনায়ক শুভাশিস বসু। এক কথায় বড় হারের পর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ান। ০-৩ হার থেকে ৩-০ জয়। যেন গুনে গুনে গোল করল সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। তাতে কোচ হোসে মোলিনা যে খুশির জোয়াড়ে ভাসবেন তা তো স্বাভাবিকই। কারণ ইস্টবেঙ্গল কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতের বিদায়ের পর মুখে না বললেও তাঁর ভবিষ্যত নিয়েও যে টানাপড়েন হতে পারে তা জানাই ছিল তাঁর। তাই এই জয় তাঁর কাছে স্বস্তির। তবে তা ধরে রাখতে হবে। ম্যাচ শেষে একগাল হাসি নিয়ে যখন সাংবাদিক সম্মেলনে এলেন তখন তাঁকে দেখে বোঝাই যাচ্ছিল চাপা উত্তেজনা থেকে আপাতত মুক্ত।
বলছিলেন, ‘‘আমি আজকের ম্যাচ নিয়ে খুশি। আমরা আজকে ভাল রক্ষণ সামলেছি। কিন্তু পুরোপুরি খুশিও নই, কারণ আমরা আরও গোল করতে পারতাম।’’ এর সঙ্গেই তিনি জুড়ে দিয়েছেন, ‘‘গোলের সুযোগ তৈরি করাটাও ভাল দিক যে কোনও দলের জন্য।’’ এই ম্যাচে তাঁর সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জিং সিদ্ধান্ত ছিল দিমিত্রি, কামিন্সকে বেঞ্চে বসিয়ে ম্যাকলারেন, গ্রেগকে দিয়ে শুরু করানো। এবং তাঁর সেই পরীক্ষা-নিরিক্ষায় তিনি সফল। দু’জনেই গোল করলেন। নিজেকে প্রমান করলেন।
মোলিনা বলছিলেন, ‘‘আমি খুশি ম্যাকলারেনের খেলায়। ও নিজেকে প্রমান করতে শুরু করেছে। তবে শুধু ও একা খেলেনি, পুরো দল ভাল খেলেছে।’’ তবে এখনই রিল্যাক্স করার কোনও জায়গা নেই বলেও দলকে বার্তা দিয়ে রেখেছেন তিনি। বলছিলেন, ‘‘আমি এই জয়ের পর রিল্যাক্স করার মতো জায়গায় নেই। হাতে ১৫ দিন রয়েছে। ছ’জন প্লেয়ার জাতীয় দলে চলে যাবে। এবং আমাদের পরের ম্যাচও ডার্বি। সে কারণে এখন থেকেই আমরা পরের ম্যাচের জন্য় প্রস্তুতি শুরু করে দেব।’’
মহমেডান ম্যাচ জয়ের পরদিনই অনুশীলনে নেমে পড়ার কথা জানালেন তিনি। যেখানে যেখানে ভুলভ্রান্তি থেকে গিয়েছে সেই জায়গাগুলো শুধরে নেওয়ার কাজও শুরু করতে চান। কিন্তু আইএসএল-এর এই মরসুমের চতুর্থ ম্যাচে এসে মনে হচ্ছে মোলিনা তাঁর প্রথম একাদশ নিয়ে শেষ পর্যন্ত নিশ্চিত হতে পেরেছেন। যদিও এই মত মানতে নারাজ তিনি। বলছিলেন, ‘‘আমি শুধু ১১ জন প্লেয়ার নিয়ে চলতে পারব না। তাই এটাই আমার সেরা একাদশ এমনটা ভাবার কোনও কারণ নেই। আমি পুরো দলকে কাজে লাগাতে চাই যারা দলের সঙ্গে রয়েছে। আমাদের কোনও নির্দিষ্ট লাইনআপ নেই। আসল হল মোহনবাগান, কোনও ব্য়ক্তি নয়।’’
দলের অধিনায়ক শুভাশিস বসুকেও কম সমালোচনা শুনতে হয়নি। নিজের সেরা ফর্মে ছিলেন না তিনি। তবে এই ম্যাচ যেন অন্য শুভাশিসকে উপহার দিল। রক্ষণের পাশাপাশি উঠে এসে গোলও করে গেলেন। এই মরসুমে জোড়া গোল হয়ে গেল তাঁর। ম্যাচের সেরাও তিনি। বলছিলেন, ‘‘মোহনবাগান চ্যাম্পিয়ন দল। আর এই ম্যাচ দলের জন্য ছিল ঘুরে দাঁড়ানোর মোটিভেশন। পুরো দলের সবাই নিজেদের উজাড় করে দিয়েছে। বেঙ্গালুরু ম্যাচ হারার পর এই জয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।’’
মহমেডানকে হারানোর পরও তাদের দুর্বল দল ভাবতে নারাজ শুভাশিস। বলছিলেন, ‘‘ওরা দুর্বল দল নয় বরং যথেষ্ট শক্তিশালী দল।’’ তবে লিগের সব ম্যাচকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন অধিনায়ক। বলেন, ‘‘লিগ টেবলের সব ম্যাচই গুরুত্বপূর্ণ। তবে এটা ঠিক একটা জয় ড্রেসিংরুমের পরিবেশ আরও ভাল করবে বিশেষ করে পরের ডার্বির আগে। এই জয় আমাদের সমর্থকদের পুজো উপহার।’’
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার