অলস্পোর্ট ডেস্ক: বাঙালির আবেগ, বাঙালির আনন্দ, বাঙালির বেঁচে থাকার সব থেকে বড় উপাদান ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান। আর এই দু‘য়ের লড়াইকে ঘিরেই বার বার উত্তাল হয়েছে ভারতীয় ফুটবল। এই দিনটির জন্যই তো বছরের পর বছর ধরে অপেক্ষায় থাকে বাংলার ফুটবলপ্রেমী জনতা। এই দুই দলের ফুটবল মাঠের শত্রুতার কথা জানে গোটা বিশ্ব। ম্যাচের ৯০ মিনিট একে অপরের শত্রু। হয়তো সেই দুই বন্ধুই বাকি সময়টা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সময় কাটান। কিন্তু যেই স্টেডিয়ামের গণ্ডি পেরিয়ে যাঁর যাঁর গ্যালারিতে পৌঁছে গেলেন তখন থেকেই শুরু শত্রুতা। এই শত্রুতা চলে আসছে বছরের পর বছর ধরে। তবে এবারের ডার্বিটা একটু যেন অন্যরকম হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিল। সোশ্যাল মিডিয়া তেমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছিল। অন্য নজির গড়তে পারত ডুরান্ড ২০২৪-এর ডার্বি। কিন্তু তেমনটা আর হচ্ছে না। ডুরান্ড কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের দীর্ঘ মিটিংয়ের পর বাতিল করে দেওয়া হল এবারের ডুরান্ড ডার্বি।
ডুরান্ড ২০২৪-এর ডার্বি বাতিল হওয়ার পিছনে কারণ কী? না তা ডুরান্ড আয়োজকদের তরফে আসা ই-মেলে জানানো হয়নি। শুধুই জানানো হয়েছে, গ্রুপ-এ-র যে ম্যাচ ১৮ অগস্ট যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলের মধ্যে হওয়ার কথা ছিল তা বাতিল করা হল। যার ফলে বাতিল করা হল তার আগের দিনের প্রি-ম্যাচ সাংবাদিক সম্মেলনও। হয়তো সেই কারণেই প্রথমে সকাল ১১.৩০ সময় দিয়ে তার এক ঘণ্টা আগে বদলে বিকেল ৫.৩০ করা হয়। শেষ পর্যন্ত বাতিল হল ডার্বি। এর পর কীভাবে দুই দলকে পয়েন্ট দেওয়া হবে সেটাও জানায়নি কর্তৃপক্ষ।
গত কয়েকদিন ধরেই ডার্বি ঘিরে অন্য উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। প্রতিবার যে দৃশ্য দেখা যায় ঠিক তার উল্টো। প্রতিবার দেখা যায় ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের সমর্থকরা একে অপরকে রীতিমতো একহাত নিচ্ছেন, হুমকি দিচ্ছেন, ভালভাষা থেকে গালাগাল সবই চলে। এটাই চির পরিচিত দৃশ্য ডার্বির আগের। তবে এবার রাজ্য উত্তাল আরজি কর হাসপাতালের ডাক্তারের নৃশংস হত্যা নিয়ে। রাস্তায় নেমেছে সাধারণ মানুষ। রাতের দখল নিয়েছেন মহিলারা। সেই আন্দোলন রাজ্য, দেশের সীমানা ছাড়িয়ে পৌঁছে গিয়েছে ভীনদেশে। প্রতিবাদে সরব গোটা বিশ্ব। আর সেই প্রতিবাদেরই অংশ হতে চলেছিল এবারে ডার্বি।
ডার্বির গ্যালারি থেকে শুধুই ‘জাস্টিস ফর আরজি কর’ ধ্বনী ওঠার কথা ছিল। গ্যালারি জুড়ে থাকার কথা ছিল ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান নয় ‘জাস্টিস ফর আরজি কর’এর পোস্টার থেকে টিফো। ডার্বির লড়াইয়ের মঞ্চেই এক সুরে গাওয়ার কথা ছিল ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান সমর্থকদের। গ্যালারি ভরানোর কথা ছিল মহিলাদের। পুরুষরা তাঁর বাড়ির মহিলাকে গ্যালারিতে পাঠাতে এগিয়ে এসেছিলেন। এই সবই জানা যাচ্ছিল সোশ্যাল মিডিয়া থেকে। কিন্তু এক ধাক্কায় সব ভেস্তে গেল। এই ডার্বির রঙ লাল-হলুদ বা সবুজ-মেরুন নয় ‘জাস্টিস’এর হওয়ার কথা ছিল। যা হল না।
কেন ডার্বি বাতিল করা হল তা সরকারিভাবে এখনও অবশ্য জানা যায়নি। তবে শোনা যাচ্ছে ডুরান্ডের আর কোনও ম্যাচ নাও হতে পারে কলকাতায়, সরে যেতে পারে জামশেদপুরে।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার