Friday, November 7, 2025
No menu items!
Google search engine
Homeফুটবলসুপার কাপের নকআউট পর্যায়ের খেলার দিন ও স্থান নিয়ে ধোঁয়াশা, একটা সেমিফাইনাল...

সুপার কাপের নকআউট পর্যায়ের খেলার দিন ও স্থান নিয়ে ধোঁয়াশা, একটা সেমিফাইনাল কি কলকাতায়?‌

অলস্পোর্ট ডেস্ক:‌ সুপ্রিম কোর্টের কড়া নির্দেশ ছিল ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের জন্য। দ্রুত অচলাবস্থা কাটিয়ে ২০২৫-‌২৬ ফুটবল মরশুম শুরু করার। এফএসডিএলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার পর থেকে এআইএফএফ পড়েছিল অথৈ জলে। আইএসএলের শুরু করার জায়গা ছিল না তারা। কবে শুরু করতে পারবে, তা নিয়েও ঘোর অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। সেটা যে পুরোপুরি কেটেছে এমন নয়। কারণ সবটাই নির্ভর করছে, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে ফেডারেশন নিযুক্ত বিড ইভালুয়েশন কমিটি যে গ্লোবাল টেন্ডার আহ্বান করেছে বিভিন্ন কর্পোরেট সংস্থার কাছে, তাতে কতটা সাড়া মেলে তার ওপর।

সম্ভাব্য বিডারদের বেশ কিছু প্রশ্ন ছিল ফেডারেশনের কাছে। সেই ২৩৪ টি প্রশ্নের উত্তর ইতিমধ্যেই দিয়েছে এআইএফএফ। যার মধ্যে আর্থিক চুক্তির পরিমাণ কত হবে যেমন আছে, তেমন ২০২৫-‌২৬ মরশুম থেকে প্রোমোশনের সঙ্গে অবনমনের সুস্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে। এমনকি আইএসএল ১০ ডিসেম্বর শুরু করতে না পারলে কী কী শর্ত আরোপিত হবে নতুন করে সেটাও। একইসঙ্গে কটা দল অংশ নেবে ও ফরম্যাট কী হবে, সেটা ফেডারেশনের কম্পিটিশন কমিটির সঙ্গে নতুন বানিজ্যিক সহযোগীর প্রতিনিধিদের বৈঠকের মাধ্যমে ঠিক হবে, তারও উল্লেখ রয়েছে।

৫ নভেম্বর পর্যন্ত ফেডারেশনের বানিজ্যিক সহযোগী হিসেবে যুক্ত হওয়ার জন্য বিড জমা দেওয়ার শেষদিন। তারপরই বিড ইভালুয়েশন কমিটি সেই দরপত্রগুলি খুঁটিয়ে দেখে ফেডারেশনের বানিজ্যিক সহযোগী বেছে নেওয়ার পথে হাঁটবেন। সেই প্রক্রিয়া মিটিয়ে আইএসএল শুরু করতে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি তো বটেই, এমনকি জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ লেগে যেতে পারে। যদিও ফেডারেশনের তরফে ১০ ডিসেম্বরের একটা লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে রাখা আছে।

কিন্তু ততদিন পর্যন্ত দেশের ঘরোয়া ফুটবল মরশুম থমকে থাকা সম্ভব ছিল না। বিশেষ করে সুপ্রিম কোর্টের থেকে সংশোধিত নতুন সংবিধান তৈরি করে দেওয়ার পর। তাই ফেডারেশন সভাপতি কল্যান চৌবে আইএসএল অংশগ্রহণকারী দল ছাড়া দেশের প্রথম সারির ক্লাব প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে প্রস্তাব রেখেছিলেন, যতদিন না আইএসএল শুরু করা সম্ভব হচ্ছে, ততদিনে সুপার কাপটা সেরে ফেলা যাক। এতে বন্ধ থাকা ভারতীয় ফুটবল মরশুম চালু হবে, দলগুলোয় উপকৃত হবে খেলার মাঝে থেকে। আরও একটা লাভ হবে, সুপার কাপের বিজয়ী দলের জন্য আইএসএল টুর প্লেঅফ স্লটটাও পাকা হয়ে যাবে।

ওড়িশা এফসির মতো আইএসএলের দল ছাড়া বাকিরা এতে রাজি হয়ে যায় সুপার কাপ খেলতে। গোয়ার মাঠকেই সুপার কাপের গ্রুপ লিগের পর্যায়ের ম্যাচের জন্য বেছে নেয় এআইএফএফ। এতে কোনও দলেরই আপত্তি ছিল না। ফেডারেশন সুপার কাপের যে সূচী ঘোষণা করে, তাতে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত গ্রুপ লিগের সব ম্যাচ শেষ হচ্ছে। বাকি থাকছে, তারপর শুধু ২টি সেমিফাইনাল ও ফাইনাল। ৬ নভেম্বরের পর ফেডারেশন সুপার কাপের নকআউট পর্বের এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আগেই, ১৮ নভেম্বর ঢাকায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতীয় ফুটবল দলের এএফসি এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ারের ম্যাচ থাকায়। তবে তখন পরিস্থিতি ছিল ভিন্ন। ভারতীয় ফুটবল দলের সামনে এশিয়ান কাপের মূল পর্বে খেলার আশা জিইয়ে ছিল। কিন্তু খালিদ জামিলের কোচিংয়ে থাকা ভারতীয় দল সিঙ্গাপুরের মাটিতে ড্র করে আর ফিরতি ম্যাচে গোয়ার মাঠে ওই সিঙ্গাপুরের কাছে হেরে এশিয়ান কাপে মূল পর্বে ওঠার লড়াই থেকে ছিটকে গেছে। সেক্ষেত্রে ১৮ নভেম্বর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ম্যাচটা এখন আর শুধু নিয়মরক্ষার বা মর্যাদার লড়াই ছাড়া মূল্যহীন।

এই অবস্থায় নিয়মরক্ষার জাতীয় দলের ম্যাচ খেলার জন্য ভারতের প্রথম সারির ক্লাবগুলো তাদের ফুটবলারদের ছাড়বে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ থাকছে। এদের অনেকেই আইএসএলের প্রস্তুতির কথা বলবে। এমনকি যে চার দল সুপার কাপের সেমিফাইনালে উঠবে, তারাও বলতে পারে, জাতীয় দলে ফুটবলার পাঠিয়ে, তাদের কারও চোট হলে, সুপার কাপে তাদের পাওয়া মুশকিল হবে। একইসঙ্গে এফসি গোয়ার এসিএল টু-‌র ম্যাচ রয়েছে। ৫ নভেম্বর এসিএল টু-‌র ম্যাচ খেলার পর গোয়ার আর একটি ম্যাচ রয়েছে ২৬ নভেম্বর। তাই এখন ফেডারেশনকে নতুন করে ভাবনা চিন্তা করতে হচ্ছে সুপার কাপের সেমিফাইনাল ও ফাইনালের তারিখ নিয়ে। এমনকি স্থান নিয়েও।

শোনা যাচ্ছে, ভারতীয় ফুটবল দল ও এএফসি গোয়া আন্তর্জাতিক খেলাগুলির কথা মাথায় রেখে, সুপার কাপের নকআউট পর্বের ম্যাচগুলির সবকটিই গোয়ায় আর নাও হতে পারে। সরতে পারে অন্যত্র। তার অন্যতম একটা কারণ, গোয়ার মাঠে সুপার কাপের ম্যাচে দর্শক না হওয়ায়। তাছাড়া, আর একটা কারণ, প্রবল বর্ষণের সঙ্গে সঙ্গে গোয়ার ব্যাম্বোলিম ও মারগাঁওয়ের মাঠে বেহাল অবস্থা। সব দলই মাঠ নিয়ে অভিযোগ করেছে। তাই ফেডারেশন কর্তাদের ভাবনায় রয়েছে গ্রুপ লিগ পর্ব শেষে সেমিফাইনালে ওঠা চার দলকে দেখে নিয়ে, সেইমতো যেখানে বেশি দর্শক হবে, সেখানে বাকি ম্যাচগুলি আয়োজনের। তবে একটা সেমিফাইনাল গোয়াতেই হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। কারণ গোয়া ইতিমধ্যেই শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছে। তাই তাদের ম্যাচ অন্যত্র সরিয়ে দিলে গোয়া আপত্তি করতে পারে।

দ্বিতীয় সেমিফাইনাল কোথায় হবে,সেটা নির্ভর করছে, বাকি ৩ দলের মধ্যে কাদের মাঠে ম্যাচ করলে দর্শক বেশি হবে। এই তালিকায়, কলকাতা, বেঙ্গালুরু ও মুম্বই থাকার সম্ভাবনা। তবে কলকাতায় একটি সেমিফাইনাল আয়োজনের দায়িত্ব ফেডারেশনের সঙ্গে যৌথভাবে আইএফএ নিতে চাইবে কিনা, বলা কঠিন। ইস্টবেঙ্গল বা মোহনবাগানের মধ্যে একটা দল সেমিফাইনালে উঠলেও। কারণ ইতিমধ্যেই শিল্ড ফাইনালের ডার্বি কলকাতায় হয়ে গেছে আইএফএর উদ্যোগে। সুপার কাপের সেমিফাইনালে ডার্বির কোনও সম্ভাবনা আর নেই। সুপার কাপের গ্রুপ লিগের ম্যাচেই কলকাতার দু’‌প্রধানের মোকাবিলা হয়ে যাওয়ায়। তার থেকেও বড় কথা, ফেডারেশনের তরফে কোনও সুপার কাপের সেমিফাইনাল বা ফাইনাল কবে কবে হবে, তা নিয়ে এখনও কোনও নির্দিষ্ট দিনের ইঙ্গিত নেই।

সেক্ষেত্রে দ্বিতীয় সেমিফাইনাল মুম্বই বা বেঙ্গালুরুতে সরতে পারে। তবে এখানেও কিছু সমস্যা আছে। গোয়ায় একটা সেমিফাইনাল হলে, দ্বিতীয় সেমিফাইনাল অন্যত্র আয়োজন করতে গেলে ম্যাচ সম্প্রচারের ক্ষেত্রে বাড়তি ঝক্কি নিতে হবে সম্প্রচারকারী ইউনিটকে। তারা সেটা নিতে চাইবে কিনা সন্দেহ। কারণ গোয়া ফাইনালে উঠলে, তারা হোম গ্রাউন্ডের অ্যাডভান্টেজ নিতে গোয়ার মাঠেই খেলতে চাইবে। তখন আবার গোয়ায় সম্প্রচারের সমস্ত সাজসরঞ্জাম ফেরাতে হবে, যা বেশ খরচ সাপেক্ষ ও ঝামেলার। তাই নকআউটের তারিখ ও স্থান নিয়ে একটা ধোঁয়াশা থেকেই যাচ্ছে আপাতত।

খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com

অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন:ফেসবুক ও টুইটার

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments