Tuesday, December 3, 2024
No menu items!
Google search engine
Homeঅন্য খেলাবাংলার টেনিসকে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন আকাঙ্খা ঘোষ, লক্ষ্য দেশের প্রতিনিধিত্ব

বাংলার টেনিসকে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন আকাঙ্খা ঘোষ, লক্ষ্য দেশের প্রতিনিধিত্ব

সুচরিতা সেন চৌধুরী: ভারতীয় টেনিসে কয়েকজন বড় নাম উঠে এলেও বাংলার টেনিস আন্তর্জাতিক স্তরে সেই জায়গার স্বপ্ন দেখিয়েও বার বার পিছিয়ে পড়েছে। ক্ষমতা বা যোগ্যতা দুই-ই রয়েছে বাংলার টেনিস খেলোয়াড়দের কাছে কিন্তু বার বার বাধ সাধছে টাকা। এমনিতে টেনিস বড় লোকের খেলা বলেই খ্যাত। টেনিস র‍্যাকেট থেকে বল, সঙ্গে খেলা শেখার বিপুল খরচ সামলাতেই হিমশিম অবস্থা। তার উপর দেশের বাইরে গিয়ে প্রশিক্ষণ নেওয়া বা টুর্নামেন্ট না খেললে মান বাড়ে না। তাই সব মিলে বিপুল খরচের মধ্যেই প্রতি প্রজন্ম থেকে উঠে আসা ছেলে-মেয়েরা স্বপ্ন দেখায় বাংলা তথা ভারতের টেনিসকে। এবার বাংলাকে লন টেনিসে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন আকাঙ্খা ঘোষ।

অনূর্ধ্ব-১৬ ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপের ডবলসে চ্যাম্পিয়ন হয়ে নতুন করে দৃষ্টি আকর্ষণ করে নিয়েছেন আকাঙ্খা। সামনেই মাধ্যমিক। তাই দুটো চালাতে বেশ চাপে তিনি। তবে টেনিসটাই লক্ষ্য সঙ্গে পড়াশোনাটাকেও চালিয়ে যেতে চান এই মেয়ে। আট বছর বয়সে টেনিসের হাতেক্ষরীর।  তার পর থেকে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। এবার শুরু সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া।

বলছিলেন, ‘‘ছোটবেলা থেকে রজার ফেডেরারের খেলা দেখতাম। খুব ভাল লাগত। তখনই মনে হয়েছিল এই খেলাটা আমিও খেলব।’’ এক কথায় আকাঙ্খার টেনিস খেলার পিছনে বড় ভূমিকা রয়েছে রজার ফেডেরারের। যদিও তিনি সেটা জানেন না। কিন্তু যখন বিশ্বের দরবারের নিজেকে প্রমাণ করবেন আকাঙ্খা তখন নিশ্চই তাঁর টেনিস খেলার অনুপ্রেরণার গল্প সবাই জানতে পারবে। জানতে পারবেন ফেডেরারও।

চোখে হাই পাওয়ারের চশমা। কিছু আগেই বেঙ্গল টেনিস অ্যাসোসিয়েশনের কোর্ট থেকে প্রতিযোগিতা খেলে উঠেছেন। জার্সি ঘামে চুপচুপে ভেজা। সাংবাদিকদের সামনে এখনও অতটাও পেশাদার হয়ে উঠতে পারেননি। তবুও কথায় কোনও জড়তা নেই। চশমা পরে খেলতে অসুবিধে হয় না? ‘‘না। চশমাটা মাথার সঙ্গে বাধা থাকে।’’ বল লেগে গেলে? না সেই ভয় নেই তার। বরং চশমা পরেই খেলতে সচ্ছ্বন্দ আকাঙ্খা। সকালে স্কুলের পর দিনে চার ঘণ্টা অনুশীলন করেন আকাঙ্খা। স্কুলের পর দুপুরে দু’ঘণ্টা আর বিকেলে দু’ঘণ্টা। মাঝে জোড়ও দিতে হয় ফিটনেসের উপর। তারও আলাদা ট্রেনার রয়েছে।

এখন বয়স ১৫। মাধ্যমিকের পরে অনেক পরিকল্পনা রয়েছে আকাঙ্খাকে নিয়ে তাঁর বাবা সুরজিৎ ঘোষের। বলছিলেন, ‘‘মাধ্যমিকটা হয়ে গেলে ইচ্ছে আছে দু’বছরের জন্য বিদেশের কোথাও রেখে সঠিক পরিকাঠামোর মধ্যে অনুশীলন করানো।’’ তিনিই বলছিলেন, আপাতত জুলাই মাসে আফ্রিকায় দুটো টুর্নামেন্ট খেলতে যাবে আকাঙ্খা। তাতে র‍্যাঙ্কিংয়ের উন্নতি হবে। এই মুহূর্তে এশিয়ার বয়সভিত্তির র‍্যাঙ্কিংয়ে আকাঙ্খা রয়েছেন ১২ নম্বরে। ভারতে তাঁর র‍্যাঙ্কিং ১৫। সদ্য জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মেয়ে, তাই ধরেই নেওয়া যায় সেরা ১০-এ যে কোনও সময় ঢুকে পড়বেন।

আপাতত অনুশীলন করছেন এক সময় বাংলার টেনিসের বিখ্যাত মুখ শিবিকা বর্মনের কাছে। গত পাঁচ বছর ধরেই তাঁরই অধিনে আকাঙ্খার বেড়ে ওঠা। শিবিকা বলছিলেন, ‘‘আমি পারিনি একটা সময়ের পর খেলাটা নিয়ে এগিয়ে যেতে কিন্তু টেনিস ছেড়ে তো থাকতে পারব না তাই পুরোপুরি কোচিংয়ে চলে আসা। আমি তো আর টাকা দিয়ে কাউকে সাহায্য করতে পারব না। নিজের জানাটা দিয়ে যদি কাউকে সাহায্য করতে পারি। তবে নিজে খেলার থেকে শেখানোর দায়িত্বটা অনেকবেশি। আকাঙ্খার মধ্যে প্রতিভা রয়েছে। চেষ্টা করছে। কিন্তু সব আটকে যায় একটা জায়গায় গিয়ে।’’

আকাঙ্খা বেঙ্গল টেবল টেনিস অ্যাসোসিয়েশন থেকে কিছুটা সাহায্য পায়। তবে সেটা যথেষ্ট নয়। বিদেশে খেলতে যেতে হলে দরকার স্পনসর। সেই চেষ্টাই করছেন আকাঙ্খার বাবা। আত্মবিশ্বাসী পেয়ে যাবেন আফ্রিকা খেলতে যাওয়ার আগে। কারণ আকাঙ্খা জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। এই দিকগুলো বাবাই দেখেন। মেয়ে শুধু মজে খেলায়। স্বপ্ন দেশের হয়ে সোনা জয়। বলছিলেন, ‘‘পার্থসারথি অরুণ মুন্ডের সঙ্গে জুটি বেঁখে আমি জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলাম। আমরা শীর্ষ বাছাই অনিন্দিতা উপাধ্যায় ও পঞ্জাবের রঞ্জনা সংগ্রামকে আমরা হারাই।’’ ফাইনাল ম্যাচে প্রথম সেট হেরে গিয়ে ঘুরে দাঁড়ান আকাঙ্খারা। খেলার ফল ছিল ৪-৬, ৭-৫, ১১-৯। এর আগে দু’বার রাজ্যস্তরেও চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আকাঙ্খা। লক্ষ্য আন্তর্জাতিক ইভেন্টে নিজেকে প্রমান করা। কোচ শিবিকা চাইছেন জাতীয় দলে জায়গা করে নিক ছাত্রী।

খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com

অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments