অলস্পোর্ট ডেস্ক: শুক্রবার নয়াদিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে এক রাজকীয় অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার তুলে দেন কৃতিদের হাতে। জোড়া অলিম্পিক পদকজয়ী মনু ভাকর, ১৮ বছর বয়সী দাবা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ডি গুকেশ, পুরুষদের হকি অধিনায়ক হরমনপ্রীত সিং এবং প্যারালিম্পিকে সোনাজয়ী হাই জাম্পার প্রবীণ কুমারকে দেশের সর্বোচ্চ ক্রীড়া সম্মান – মেজর ধ্যানচাঁদ খেলরত্ন প্রদান করা হয়।
গত বছরের অগস্টে ১০ মিটার এয়ার পিস্তল ব্যক্তিগত এবং ১০ মিটার এয়ার পিস্তল মিক্স টিম ইভেন্টে ব্রোঞ্জ জয়ের জিতে ২২ বছর বয়সী ভাকর অলিম্পিকের এক সংস্করণে দু’টি পদকজয়ী স্বাধীন ভারতের প্রথম ক্রীড়াবিদ হওয়ার রেকর্ড করে ফেলেন।
টোকিও এবং প্যারিস অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ পদক জয়ী জাতীয় হকি দলের অংশ ছিলেন হরমনপ্রীত। অন্যদিকে, প্যারালিম্পিয়ান প্রবীণ জাপানের পাওয়া তাঁর রুপোকে প্যারিসে সোনায় নিয়ে যান। তাঁর জন্মগত বাঁ পা ছোট।
১৮ বছর বয়সী ডি গুকেশ গত মাসে চিনের ডিং লিরেনকে হারিয়ে সর্বকনিষ্ঠ দাবা বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের মুকুট পড়েছেন। মহান বিশ্বনাথন আনন্দের পর তিনি এই খেতাব অর্জনকারী দ্বিতীয় ভারতীয়। এছাড়া গত সেপ্টেম্বরে দাবা অলিম্পিয়াডে ভারতের পুরুষদের সোনা জয়ী দলের অন্যতম কারিগর তিনি।
বত্রিশ জন ক্রীড়াবিদকে অর্জুন পুরষ্কারে ভূষিত করা হয় এবার যাঁর মধ্যে অভূতপূর্ব ১৭ জন প্যারা-অ্যাথলিট রয়েছেন।
অর্জুন পুরষ্কারের জন্য নির্বাচিত ক্রীড়াবিদদের মধ্যে ছিলেন প্যারিস অলিম্পিকের ব্রোঞ্জ পদক বিজয়ী কুস্তিগীর আমান শেহরাওয়াত, শ্যুটার স্বপ্নিল কুশলে এবং সর্বজ্যোত সিং (অলিম্পিকের ১০ মিটার এয়ার পিস্তল মিশ্র প্রতিযোগিতায় ভাকরের সঙ্গী) এবং পুরুষদের হকি দলের খেলোয়াড় জার্মানপ্রীত সিং, সুখজিৎ সিং, সঞ্জয় এবং অভিষেক।
প্যারিস প্যারালিম্পিকে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের কারণে প্যারা-অ্যাথলিটরা এবার তালিকায় সক্ষমদের চেয়ে বেশি, যেখানে তাঁরা সাতটি সোনা এবং ন’টি রুপো-সহ ২৯টি পদক জিতে ফিরে এসেছিলেন। রাষ্ট্রপতি মুর্মু বারবার ঐতিহ্য ভেঙে হুইলচেয়ারে থাকা কিছু ক্রীড়াবিদকে স্বাগত জানান, যেমন প্রণব সুরমা, যিনি ক্লাব থ্রোতে প্যারালিম্পিকে রুপো জেতেন, যিনি অর্জুন জিতেছিলেন।
অনুষ্ঠানের সবচেয়ে হৃদয়গ্রাহী মুহূর্তটি ছিল যখন ভারতের প্রথম প্যারালিম্পিক স্বর্ণপদকজয়ী মুরলীকান্ত পেটকার ক্রাচে ভর দিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে অর্জুন পুরস্কার (জীবনকাল) গ্রহণ করেন।
৮০ বছর বয়সী এই যুদ্ধ নায়ক, যিনি ১৯৬৫ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সময় বুলেটের আঘাতে কোমর পর্যন্ত অক্ষম হয়ে পড়েছিলেন, তিনি মূলত একজন বক্সার ছিলেন কিন্তু প্যারা-সাঁতারুতে পরিণত হন। তিনি ১৯৭২ সালের হাইডেলবার্গ প্যারালিম্পিকে ঐতিহাসিক স্বর্ণপদক জিতে নেন। রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণের পর না বসা পর্যন্ত এই মানুষটিকে উচ্ছ্বসিত করতালি দিয়ে স্বাগত জানানো হয়।
দরবার হলে তাঁর জন্য যারা হাততালিতে ফেটে পড়েছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন অভিনেতা কার্তিক আরিয়ান, যিনি সম্প্রতি ‘চান্দু চ্যাম্পিয়ন’ বায়োপিকে পেটকারের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।
এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে ক্রীড়ামন্ত্রী মনসুখ মান্ডভিয়া, সংসদীয় ও সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেন রিজুজু, ক্রীড়া সচিব সুজাতা চতুর্বেদী-সহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। খেলরত্ন পুরস্কারের সঙ্গে ২৫ লক্ষ টাকা নগদ পুরস্কার দেওয়া হয়, এবং অর্জুন ও দ্রোণাচার্য প্রাপকদের ১৫ লক্ষ টাকা নগদ পুরস্কার দেওয়া হয়।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার