Sunday, November 16, 2025
No menu items!
Google search engine
Homeঅন্য খেলাসাহিল, শ্রেয়র চোখে অধরা অলিম্পিক পদক জয়ের স্বপ্ন

সাহিল, শ্রেয়র চোখে অধরা অলিম্পিক পদক জয়ের স্বপ্ন

মুনাল চট্টোপাধ্যায়: দুই সফল তীরন্দাজ।‌ সাহিল রাজেশ যাদব। ২০২৫ জার্মানিতে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি গেমসে ব্যক্তিগত বিভাগে সোনা ও দলগত বিভাগে রুপো জিতেছেন। অন্যজন শ্রেয় ভরদ্বাজ। ২০২৫ বিশ্ব পুলিশ ও ফায়ার গেমসে জিতেছেন ৩টি সোনা। এঁদের শুক্রবার কলকাতার সাই পূর্বাঞ্চল ও ন্যাশানাল সেন্টার অফ এক্সেলেন্স কেন্দ্রে সংবর্ধনা জানানো হল। তাঁদের সঙ্গে সংবর্ধিত হলেন কলকাতা সাই কেন্দ্রের আঞ্চলিক অধিকর্তা অমরজ্যোতি, ও তিন কোচ বোম্বাইলা দেবী, মঙ্গল সিং চাম্পিয়া ও রীণা কুমারী।

সংবর্ধনা মঞ্চে বসে ২৪ বছর বয়সী মহারাষ্ট্রের তীরন্দাজ সাহিল শোনালেন তাঁর চমকপ্রদ উত্থানের কাহিনী। ছেলেবেলায় দাবা, রোপ স্কিপিং, ক্যারাটের মতো খেলায় ঝোঁক থাকলেও একাদশ শ্রেণীতে পড়ার সময় এক প্রতিবেশীকে দেখে উদ্বুদ্ধ হন সাহিল, তীরন্দাজি শুরু করতে। শুরুর সে দিনগুলো ছিল খুব কঠিন। প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে অত্যাধুনিক তীর-‌ধনুকের জোগান দিতে গিয়ে বেশ সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিল সাহিলের পরিবারকে। বাবাকে চাকরি ছাড়তে হয়েছিল। মা গয়না বেচেন টাকা জোগাড়ে। একটা সময় মনে হয়েছিল টাকার অভাবে তীরন্দাজি ছাড়তে হবে সাহিলকে। কিন্তু অদম্য জেদ ও পারিবারিক সমর্থনের জোরে আজ আন্তর্জাতিক স্তরে চমকপ্রদ সাফল্য পেয়েছেন সাহিল।

ফিসু ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি গেমসে সোনা জিতেছেন করমবীর ভারাও পাটিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাহিল ফাইনালে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে (‌১৪৯-‌১৪৮)‌ গ্রেট ব্রিটেনের অজয় স্কটকে হারিয়ে। তীরন্দাজির সিরিয়াস পাঠ শুরু হয়েছিল সাতারার দ্রুষ্টু অ্যাকাদেমিতে কোচ প্রভীন সাওয়ান্তের হাত ধরে। সোনা জয়ের কৃতিত্ব সাহিলকে আরও বড় স্বপ্ন দেখতে উজ্জীবিত করছে। আপাতত লক্ষ্য, জাপান এশিয়ান গেমসে সোনা জয়। ২০২৮ লস এঞ্জেলস অলিম্পিকে পদক জয়। সাহিলের পছন্দের কম্পাউন্ড ইভেন্ট অন্তর্ভুক্ত হয়েছে এলএতে। তাই তীরন্দাজিতে এতদিনের অধরা অলিম্পিক পদকের আশা করা যেতেই পারে সাহিলের হাত ধরে লস এঞ্জেলসে।

সাহিলের গলাতেও আত্মবিশ্বাসের সুর। বললেন, ‘‌ হরেশ কুমার, প্রভীন সাওয়ান্ত, রাহুল ব্যানার্জির মতো কোচরা আমাকে সবসময় ফোকাস ঠিক রাখতে সাহায্য করেছেন। ব্যক্তিগত ইভেন্টে রুপো জয় নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পর আমার মধ্যে একটা রিল্যাক্সড ভাব এসেছিল। ওঁরাই আমাকে তাতান এটা বলে, শুধু রুপোয় সন্তুষ্ট থাকলে চলবে না। পুরো একাগ্রতা নিয়ে ঝাঁপাতে হবে সোনা জিততে। তার ফল মিলেছে।’‌

জামশেদপুরের ছেলে ২৩ বছরের শ্রেয় ভরদ্বাজ সোনা জয়ের হ্যাটট্রিক করেছেন আমেরিকার আলবামায় রিকার্ভের আউটডোর, থ্রি ডি ও ফিল্ড তীরন্দাজ ক্যাটিগরিতে। তিনটি ভিন্ন ফরম্যাটে মানসিক জোর দেখানো ভরদ্বাজের নজরও পদক পাওয়া, আন্তর্জাতিক গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চে।

অতীতে তীরন্দাজির আন্তর্জাতিক মঞ্চে বারবার তীরে এসে তরী ডোবার মতো পদক হাতছাড়া হয়েছে। সেই অভিজ্ঞতার কথা এদিন তুলে ধরেন অলিম্পিয়ান বোম্বাইলা দেবী, মঙ্গল সিং চাম্পিয়া ও রীণা কুমারী। তাঁদের মতো সাহিলের কোচ হরেশ কুমারও মানছেন, অলিম্পিকের মতো মঞ্চে পদক জিততে যে মেন্টাল ফিটনেস বা মনঃসংযোগ দরকার, তা থাকছে না একবারে পদক জেতায় দোরগোড়ায় পৌঁছে। ওটাই একমাত্র ঘাটতি। ওই জায়গাতেই অধিকাংশ ভারতীয় খেলোয়াড় মার খাচ্ছে। তার জন্য মেন্টাল ফিটনেস কোচ, মনোবিদ খেলোয়াড়দের মানসিক জোর বাড়ানোর জন্য জরুরি। তাছাড়া বিশেষ ধরনের প্রস্তুতি জরুরি। তীরন্দাজদের মনঃসংযোগ বাড়াতে অলিম্পিকের মতো কৃত্রিম পরিবেশ তৈরি করে অনুশীলন করালে ফল মিলবে। ‌‌

খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com

অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন:ফেসবুক ও টুইটার

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments