সুচরিতা সেন চৌধুরী: উদ্বোধনী দিনের পর আবার ১২৬তম বেটন কাপের গ্যালারি ভরল ফাইনাল ডে-তে। হাতে হাতে খাবার প্যাকেট আর সঙ্গে নাচ, গান, লেজার শোয়ের জমজমাট অনুষ্ঠান। তালে তালে গ্যালারি থেকে পা মেলালেন আগত সাময়িক হকি সমর্থকরা। যদিও কলকাতায় হকিকে আবার আগের জায়গায় ফেরাতে খাবার প্যাকেট দিয়ে দর্শক আনাটা যথেষ্ট নয়, তা সবারই জানা। তবে শুরুর জন্য এই উদ্যোগকে কিছু পয়েন্ট দেওয়া যেতে পারে। এর পর দীর্ঘকালীন পরিকল্পনা না করলে বাংলার হকি যেখানে ছিল সেখানেই থেকে যাবে। এবার নতুন স্টেডিয়াম, রাজ্য সরকারের উদ্যোগ ও ক্রীড়ামন্ত্রীর সৌজন্যে বেটন কাপ আলোচনায় উঠে এসেছিল না হলে গত ১০ বছরে যদি ফিরে তাকাই তাহলে দেখা যাবে ক্রীড়াপ্রেমী থেকে সংবাদ মাধ্যম, কেউই খুব একটা দেশের প্রাচীনতম হকি টুর্নামেন্ট নিয়ে আগ্ৰহ দেখায়নি। এর পরও সেই ছবির বদল হবে কিনা তা নিয়ে খুব আশাবাদী হওয়ার মতো কিছু রসদ পাওয়া গেল না।
ফিরে আসি ফাইনাল ডে-তে। রবিবারের যুবভারতী বিবেকানন্দ হকি স্টেডিয়ামে ফাইনালের আগে যেমন ছিল নাচ, গানের অনুষ্ঠান, তেমনি ছিল লেজার শো। আর ছিল বেটন কাপ ফাইনালের মঞ্চ থেকে জুনিয়র বিশ্বকাপ ট্রফির বোধন। এবার চেন্নাইয়ে বসতে চলেছে এই আসর। যদিও যে ট্রফি দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরছে তা নিয়ে একটা বিতর্ক তৈরি হয়েছে। জানা যাচ্ছে মেটাল বেস-সহ যে ট্রফিটি রয়েছে সেটিই আসল ট্রফি। তবে বেশিরভাগ জায়গায় যাচ্ছে কাঠের বেস-সহ ট্রফি, যি রেপ্লিকা। কলকাতায়ও সেটিই এসেছিল এদিন। যার বোধন করলেন, ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, হকি ইন্ডিয়ার সভাপতির দিলীপ তির্কে, হকি বেঙ্গলের সভাপতি সুজিত বোস, মেয়র ফিরহাদ হাকিম ও বাংলার হকির অন্যতম মুখ গুরবক্স সিং।
সব কর্মকাণ্ড শেষে সন্ধ্যা ছ’টায় শুরু হয় বেটন কাপ ফাইনাল। ম্যাচের প্রথমার্ধের শেষের দিকেই মাঠে প্রবেশ দিকপাল জার্মান ফুটবলার লোথার ম্যাথিউসের। এই মুহূর্তে তিনি কলকাতা সফরে রয়েছেন। এদিন তিনি ফুটবলের মঞ্চ থেকেই পৌঁছে গিয়েছিলেন হকির মাঠে। এদিন টাউন হলে ছিল আইএফএ-এর বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। সেখান থেকেই তিনি হাজির হয়েছিলেন বেটন কাপ ফাইনালে। তির হাত দিয়েই পুরস্কার তুলে দেওয়া হয় দলগুলোর হাতে।

আর্মি বনাম এয়ারফোর্স ম্যাচের প্রথমার্ধের খেলা শেষ হয় গোলশূন্য ভাবেই। অনেকদিন পর এতো মন্থর গতির হকি দেখলাম এবারের বেটন কাপে। যা অপ্রত্যাশিত। যা খেলার উত্তেজনাকে থমকে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। এক্ষেত্রেও সেটাই হল। শেষ পর্যন্ত তৃতীয় কোয়ার্টারে গোলের মুখ খুলল আর্মি একাদশ (রেড)। ৩৮ মিনিটে ফিল্ড গোল করে দলকে এগিয়ে দিলেন সিমরানদীপ সিং।
সেদিক থেকে দেখতে গেলে দ্বিতীয়ার্ধের খেলায় দাপট দেখাল আর্মি দল। প্রথম দুই কোয়ার্টার গোলশূন্য থাকার পর তৃতীয় কোয়ার্টারেই জোড়া গোল করে এগিয়ে গেল আর্মি। দ্বিতীয় গোলটি এল ৪৫ মিনিটে ধৈর্যশীল যাদবের স্টিকে। আর্মি শেষ কোয়ার্টার খেলতে নামল ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে। এয়ারফোর্স দল ১০টি পেনাল্টি কর্নার পেয়েও কাজে লাগাতে পারল না। শেষ বেলায় দুই দলের মধ্যে উত্তেজনা ছড়াল, তবে তা বড় আকার নেয়নি। ভিআইপি বক্স থেকে পুরো খেলা উপভোগ করলেন লোথার ম্যাথাউস।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন:ফেসবুক ও টুইটার





