অলস্পোর্ট ডেস্ক: ভারতীয় খেলাধুলোর ইতিহাসে নজির গড়লেন সর্বেশ কুশারে। টোকিও বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে হাইজাম্প ফাইনালে উঠে। এই প্রথমবার কোনও ভারতের কোনও পুরুষ অ্যাথলিট এই ইভেন্টের ফাইনালে উঠল। এখন দেখার মঙ্গলবার নিজের পারফরমেন্স অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়ে সর্বেশ পদক জিততে পারেন কিনা।
টোকিও অলিম্পিকে সোনা জয়ী হাইজাম্পার জিয়ানমার্কো তামবেরির ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হওয়ার দিনে সর্বেশের ১৩ জন ফাইনালিস্টের মধ্যে সর্বেশের থাকা নিঃসন্দেহে এক দারুন ব্যাপার। গতবছর প্যারিস অলিম্পিকে নেওয়া সর্বেশ টেকিওতে নিজের দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় ২.২৫ মিটার উচ্চতা পার করে ফাইনালে ওঠার যোগ্যতার্জন করেন।
মহারাষ্ট্রের নাসিকের পেঁয়াজ চাষীর ছেলে ৩০ বছরের সর্বেশ প্রথমে ২.১৬ মিটার, পরের দুটো প্রচেষ্টায় ২.২১ মিটার ও ২.২৫ মিটার উচ্চতা পার করে ফাইনালে উঠে উচ্ছ্বসিত। বলেন, ‘ বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের ওঠার অনুভূতিটা মুখে বলে বোঝানো যাবেন। আত্মবিশ্বাস ছিল, ফাইনালে যাব। দেশবাসীর বিশ্বাস ছিল, ফাইনালে যাওয়ার ক্ষমতা আমাদের আছে। সকলের মাঝেই এই বিশ্বাস থাকাটা জরুরি। আমার শুরু থেকেই মনে হয়েছিল, সফল হব ফাইনালে ওঠার লক্ষ্যপূরণে। তাই নিজের সেরা লাফ ২.২৭ মিটারের কাছাকাছি পৌঁছানোর লক্ষ্য নিয়েই ফিল্ডে নেমেছিলাম।’
টোকিওতে সোনা জয়ী তামবেরির ফাইনালে না ওঠার ঘটনা কি চাপে রেখেছিল? সর্বেশের জবাব, ‘ তেমন নয়। সকলেই শুরুর দিকে নিজেদের পারফরমেন্স নিয়ে ভাবে। নিজের সেরা দিতে চেষ্টা করে। আসলে সবটাই নির্ভর করে প্রস্তুতির ওপর। কেউ যেখানে ৪ থেকে ৫ বছর ট্রেণিং করছে, কেউ সেখানে ১৫ থেকে ১৭ বছর।’ প্যারিস অলিম্পিকে সোনা জয়ী হাইজাম্পার হামিশ কার দ্বিতীয় প্রচেষ্টাতেই ২.২৫ মিটার লাফিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নিয়ে বুঝিয়ে দেন চেনা ছন্দেই আছেন।
মঙ্গলবারের ফাইনালের জন্য মানসিকভাবে তৈরি সর্বেশ। জানিয়েছেন, কোয়ালিফাইং রাউন্ড অপেক্ষাকৃত সহজ ছিল। আসল লড়াই তো এবার শুরু। ফাইনালে বিশ্ব সেরাদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করাটা বেশ কঠিন, চ্যালেঞ্জিং। আমি সেরা দেওয়ার লক্ষ্যে নামব। কোয়ালিফাইং রাউন্ডের আগে দু’দিন প্রস্তুতির সুযোগ পেয়েছিলাম। সেইমতো পরিকল্পনা নিয়েছিলাম। এবার ফাইনালের আগে তৈরি হওয়ার জন্য একটাই দিন পেয়েছি। নিজেকে যতটা সম্ভব চাপমুক্ত রাখছি ফাইনালে নামার আগে।’
একদা সর্বেশের কাছে আধুনিক কোনও ট্রেণিং পরিকাঠামো বা সরঞ্জাম ছিল না। ভুট্টার পাতা ভরা বস্তা, তুলোর বস্তা আর ছেঁড়া গদি রেখে অনুশীলন চালাতেন। পরে ধাপে ধাপে সাফল্য সর্বেশকে অত্যাধুনিক পরিকাঠামো ও পরিকল্পনামাফিক ট্রেণিংয়ের সুযোগ এনে দেয়। সেই অচেনা এক গ্রাম থেকে টোকিওর বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে পৌঁছে যাওয়া সর্বেশের কাছে এই দাঁতে দাঁত চেপে লড়াইটাই মোটিভেশন।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন:ফেসবুক ও টুইটার