অলস্পোর্ট ডেস্ক: ১৮ বছরের তপস্যা শেষ হল বিরাট কোহলিদের। শেষ বল হওয়ার আগেই জয় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল, শুরু হয়ে গিয়েছিল উৎসব। অন্য প্রান্তে তখন ১৮ বছরের অপেক্ষা দীর্ঘায়িত হল। আইপিএল পেল নতুন চ্যাম্পিয়ন। এবার যে দলই চ্যাম্পিয়ন হতো সেটাই আইপিএল-এর ইতিহাসে নতুন নাম হতো। ২০২৫ লেখা ছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর জন্য। বেঙ্গালুরুর সঙ্গে এই অপেক্ষা ছিল বিরাট কোহলিরও। হয়তো সে কারণেই তিনি এতটাই আবেগান্বিত ছিলেন জয়ের পর। পর পর দু’বার দুই দলের হয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়া হল না শ্রেয়াসের। কাল থেকে আবার নতুন করে বর্তমানটা নিয়ে হয়তো ভাবতে শুরু করবেন তিনি। শ্রেয়াসের একটা সাক্ষাৎকারে দেখছিলাম তিনি বলছিলেন, ‘‘এমন এক একটা সময় আসে যখন অনেক কিছু ভেবে মাথা খারাপ হয়ে যায়, বিশেষ করে ভবিষ্যতে কী হবে। তখনই ভাবার চেষ্টা করি এখন আমি কী করছি। বর্তমানটাই শেষ কথা। এটা আমি অনুশীলন করেছি। আর এটাই আমাকে শান্তি দেয়।’’ ঠিক এটাই পঞ্জাব অধিনায়ক। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার জিতে বলেছিলেন, ‘‘কাজ অর্ধেক সম্পূর্ণ হয়েছে।’’ ৩ জুন, আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে সেই অর্ধেক কাজটা এ যাত্রায় অসম্পূর্ণই থেকে গেল। অধরা স্বপ্ন পূরণ হল রয়্যালদের।
মঙ্গলবার টস জিতে আবারও প্রতিপক্ষকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন পঞ্জাব অধিনায়ক। যে ফিল সল্টকে নিয়ে সংশয় ছিল যে তিনি আদৌ ম্যাচের আগে আহমেদাবাদে ফিরবেন কিনা। কারণ সদ্য বাবা হয়েছেন। তবে সেখান থেকেই ম্যাচের দিন দুপুর তিনটের সময় তিনি আহমেদাবাদে পৌঁছে বিরাটের সঙ্গে ওপেন করতে নামেন। তবে বড় রান করতে পারেননি। মাত্র ১৬ রান করেই ফিরে যান। কিন্তু পর পর দু’বছর দুই আইপিএল দলের হয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতিহাসে জায়গা করে নিলেন ফিল সল্ট। অন্যদিকে আর এক ওপেনার বিরাট কোহলি অনেকটা সময় চেষ্টা করেন ক্রিজে টিকে থেকে দলের রানকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। তাঁর ব্যাট থেকেই আসে সর্বোচ্চ ৪৩ রানের ইনিংস। ওমোরজাইয়ের বলে তাঁকেই ক্যাচ দিয়ে ফিরতে হয় তাঁকে। এর পর আর কেউ ভরসা দিতে পারেননি। নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারাতে থাকে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু।
মায়াঙ্ক আগরওয়াল ২৪, রজত পতিদার ২৬, লিয়াম লিভিংস্টোন ২৫, জিতেশ শর্মা ২৪, রোমারিও শেফার্ড ১৭, ক্রুনাল পাণ্ড্যে ৪, ভুবনেশ্বর কুমার ১ রান করে আউট হন। ১ রানে অপরাজিত থাকেন যশ দয়াল। ২০ ওভারে ১৯০-৯-এ থামে বেঙ্গালুরু। পঞ্জাবের হয়ে বল হাতে সফল সকলেই। সঙ্গে এক দুটো ভুল ছাড়া ফিল্ডিংয়েও বাজিমাত প্রীতি জিন্টার দলের। এদিন পঞ্জাবের হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন অর্শদীপ সিং ও কেইল জেমিসন। একটি করে উইকেট আজমাতুল্লা ওমরজাই, বিজায়কুমার ও যুজবেন্দ্র চাহালের।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভাল হলেও সেটা ধরে রাখতে পারেনি দলের টপ অর্ডার। দুই ওপেনার প্রিয়াংশ আর্য ২৪ ও প্রভসিমরান সিং ২৬ রান করে আউট হয়ে যান। তবে এদিন পঞ্জাব গ্যালারিকে থমকে দেয় শ্রেয়াস আইয়ারের ১ রানে ফিরে যাওয়া। যদিও রোজ একজন খেলবে সেটাও তো হতে পারে না। তিন নম্বরে নামা জোশ ইঙ্গলিশ দ্বিতীয় কোয়ার্টার ফাইনালের পর ফাইনালেও রানের গতি ধরে রাখার চেষ্টা চালিয়ে গেলেন। চার নম্বরে নেমে দুই বল খেলে মাত্র ১ রান করে ফিরে গেলেন শ্রেয়াস আইয়ার। এর পর ইঙ্গলিশ ৩৯ রানে ফিরতেই টেনশনটা চেপে বসে পঞ্জাবের খেলায়। যদিও গত ম্যাচে শ্রেয়াসের সঙ্গে সমানে সমানে খেলা নেহাল ওয়াধেরা মাঠে নেমেছেন। তিনিও বড় কিছু শট হাঁকিয়ে ফিরে গেলেন দ্রুত।
ব্যক্তিগত ১৫ রানে যখন নেহাল ওয়াধেরা যখন ফিরলেন তখন পঞ্জাব ১৬.৩ ওভারে ১৪২-৫। জিততে হলে দরকার ২১ বলে ৪৯ রান। মার্কাস স্তইনিস নেমেই প্রথম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ভরসা দেওয়ার চেষ্টা করলেন কিন্তু পারলেন না। পরের বলেই ক্যাচ তুলে ফিরে গেলেন। হতাশায় নিজের ব্যাটটাই আছাড় মাড়তে গিয়েও সামলে নিলেন। আজমাতুল্লা ওমরজাইও ফিরলেন মাত্র ১ রান করে। শেষ পর্যন্ত লড়াই চালালেন ছয় নম্বরে ব্যাট করতে নামা শশাঙ্ক সিং। তবে সেটা যথেষ্ট ছিল না। ৩০ বেল ৬১ রান করে অপরাজিত থাকলেন। শেষ বলেও ছক্কা হাঁকালেন কিন্তু সবটাই জলে গেল বা সবটাই তোলা থাকল ভবিষ্যতের জন্য। শেষ ওভারে জিততে হলে পঞ্জাবের দরকার ছিল ২৯ রান। জয়ের থেকে ৬ রান আগে থামতে হল। ২০ ওভারে ১৮৪-৭-এ থামল পঞ্জাব।
বেঙ্গালুরুর হয়ে দুটো করে উইকেট নিলেন ভুবনেশ্বর কুমার ও ক্রুনাল পাণ্ড্যে। একটি করে উইকেট যশ দয়াল, জোশ হেজেলউড ও রোমারিও শেফার্ডের।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন: ফেসবুক ও টুইটার