অলস্পোর্ট ডেস্ক: ভারতীয় ফুটবলে টাকা কামানোর ও উত্তেজনা জিইয়ে রাখার ম্যাচ হল মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলের মধ্যে ডার্বি। আর ক্রিকেটে বিশ্বজুড়ে এই উত্তেজনা ও রেষারেষির ফায়দা তোলার ম্যাচ হল ভারত ও পাকিস্তান লড়াই।
আইএসএলে এই মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলে দু’দলের দেখা হওয়াটা স্বাভাবিক ঘটনা। এই ম্যাচের দিকে প্রবল আগ্রহ নিয়ে তাকিয়ে থাকেন আইএসএল সংগঠকরা। আর্থিক লাভের কারণে। সেখানে অন্যরাই বা কেন সেই ডার্বি ম্যাচ করিয়ে ফায়দা তুলবে না। আগে বিভিন্ন টুর্নামেন্টের সংগঠকরা প্রায় নিশ্চিত থাকতেন ফাইনালে মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গল মুখোমুখি হবে। আর এখন সময় বদলেছে। তারা এব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারছেন না বলে টুর্নামেন্টের সূচী এমনভাবে তৈরি করছেন, যাতে গ্রুপ পর্বে বা নকআউটের শুরুতেই দুই প্রধানের দেখা হয়ে যায়। ডুরান্ড কমিটি এতদিন করে এসেছে। এবার ভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনও এব্যাপারে পিছিয়ে থাকেনি সুপার কাপের সূচীতে এক গ্রুপে মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলকে রেখে লড়িয়ে দিতে। আইএফএও জানে এই একটা ম্যাচ থেকে টুর্নামেন্টের খরচ তুলতে হবে। আর তাই শিল্ডের এমন সূচী তৈরি করেছে, যাতে ফাইনালে ইস্টবেঙ্গল ও মোহনবাগানের মোকাবিলা নিশ্চিত করা যায়।
মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গল ডার্বি ম্যাচ না হয় খেলার উত্তেজনা ও উন্মাদনায় সীমাবদ্ধ, কিন্তু ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে লড়াইটা আর শুধু মাঠের খেলাতে আটকে থাকছে না, এটা দু’দেশের মধ্যে রাজনৈতিক যুদ্ধের পর্যায়ে পৌঁছে যাচ্ছে। সম্প্রতি এশিয়া কাপ ক্রিকেট বা মহিলা বিশ্বকাপ ক্রিকেটে ভারত ও পকিস্তান ম্যাচ ঘিরে যে সমস্ত ঘটনা ঘটেছে, তা মোটেই অভিপ্রেত নয় বলেই মন্তব্য করেছেন ইংল্যান্ডের প্রাক্তন অধিনায়ক মাইক আথার্টন।
আথার্টন তীব্র সমালোচনার সুরে আইসিসিকে বলেছেন, ব্যবসায়িক ফায়দা তোলার জন্য এইধরনের ফিক্সড সূচী অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত। নইলে এতে ক্রিকেট খেলার ভাবমূর্তিই শুধু নষ্ট হচ্ছে তাই নয়, দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক নষ্টের চিড় আরও বাড়ছে, সঙ্গে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ক্রিকেটারদের মধ্যে বন্ধুত্ব, সৌজন্যবোধ। যা মোটেই কাম্য নয়।
পরিসংখ্যান তুলে ধরে আথার্টন বলেছেন, ‘২০১৩ থেকে আইসিসির প্রতিটি ইভেন্টে ভারত ও পাকিস্তান গ্রুপ পর্যায়ে মুখোমুখি হয়েছে। ৩টি ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ, ৫টি টি২০ বিশ্বকাপ ও ৩টি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। এশিয়া কাপে তো কথাই নেই। সদ্য শেষ হওয়া এশিয়া কাপে সংগঠকরা এমনভাবে সূচী তৈরি করেছিলেন, যাতে পরপর তিনটি রবিবারে ভারত ও পাকিস্তান পরস্পরের মুখোমুখি হয়। তাদের লক্ষ্য সফল। আর এটা করা হয়েছে খুব সুকৌশলে সূচী তৈরির সময়। আর্থিক ফায়দা তোলার লক্ষ্যে। দু’দেশের মধ্যে খেলাগুলিতে সেই ধরনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা কমে আসার কারণে, আইসিসির এখন যাবতীয় লক্ষ্য থাকে, কীভাবে বহুদেশীয় টুর্নামেন্টে ভারত ও পাকিস্তান ম্যাচ নিশ্চিত করা যায়। এতে আইসিসির টুর্নামেন্টে সম্প্রচার স্বত্ত্ব পেতে বিশাল পরিমান টাকা দিতে হয় সংস্থাগুলোকে।’
২০০৮ সালে মুম্বই উগ্রপন্থী হামলার পর থেকে ভারত ও পাকিস্তান দ্বিদেশীয় কোনও খেলায় মুখোমুখি হয় আর এবার পহেলহাম হামলায় ২৬ জন নিরীহ মানুষের প্রাণ যাওয়ার পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্কটা সাপে নেউলের থেকেও খারাপ হয়েছে। তার প্রতিফলন এশিয়া কাপের ৩ টি ম্যাচেই বিশ্রিভাবে সামনে এসেছে। এমনকি ভারত ফাইনাল জেতার পর পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে ট্রফি দেওয়া কেন্দ্র করে যে কেলেঙ্কারি হয়েছে, সেটা সবচেয়ে বেশি নক্কারজনক। এগুলো দেখেই আথার্টন আইসিসিকে তুলোধোনা করে বলেছেন, এই গড়াপেটা সূচী তৈরি বন্ধ হোক ক্রিকেট মাঠে ভদ্রতা ও সৌজন্যবোধ বজায় রাখতে।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন:ফেসবুক ও টুইটার