অলস্পোর্ট ডেস্ক: মঙ্গলবার আইএসএল ক্লাব ও এআইএফএফ সভাপতি কল্যান চৌবের মধ্যে বৈঠক নিষ্ফলা গেছে। কারণ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অগ্রাহ্য করে কেউ কিছু করে ওঠার সাহস দেখাতে পারছে না। না ফেডারেশন, না আইএসএল ক্লাব। ১২ আইএসএল ক্লাবের অধিনায়করাও সুপ্রিম কোর্টের কাছে পিটিশন দাখিল করেছেন ঘরোয়া ফুটবল ঘিরে অচলাবস্থা কাটানোর অনুরোধ রেখে। তাঁদের সেই আবেদনে শামিল হয়েছে ফুটবল প্লেয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন। ফুটবলারদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে দ্রুত সমাধান সূত্র খোঁজার জন্য চাপ দিয়েছে ফিপপ্রো। কিন্তু যতক্ষণ না সুপ্রিম কোর্ট নয়া কোনও নির্দেশিকা জারি করছে, বা আগের দেওয়া রায়ে কোনও রদবদল ঘটাচ্ছে,তখন এই অচলাবস্থা কাটার কোনও সম্ভাবনা নেই।
মঙ্গলবারের বৈঠকে এআইএফএফ সভাপতি কল্যান চৌবের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলার পরই আইএসএলের ক্লাব সিইওরা বুঝে যান, কল্যানের কিছু করার ক্ষমতা নেই। শুধু আলোচনার নামে সময় নষ্ট করা ছাড়া। কল্যান বরং ক্লাবগুলোর কাছে পরোক্ষভাবে সাহায্য চাইছেন আইএসএল শুরুর জন্য। ক্লাবগুলোর কাছে প্রস্তাব রেখেছেন বানিজ্যিক সহযোগী খুঁজে এনে অন্তত ২০২৫-২৬য়ের আইএসএলটা উতরে দিতে। ক্লাবগুলো কল্যানের এই প্রস্তাবে এইমুহূর্তে সাড়া দেয়নি। তার প্রধান কারণ গোটা বিষয়টা বিচারাধীন থাকায়। অর্থাৎ সুপ্রিম কোর্টের হাতে থাকায়। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করে কিছু করার অর্থ হল আদালত অবমাননা করা। আর তার জন্য আদালতের শাস্তির কোপ নেমে আসতে পারে।
তাই মঙ্গলবারের নিষ্ফলা বৈঠকের পর আইএসএল ক্লাবপ্রতিনিধিরা নিজেদের মধ্যে আলোচনায় বসেছিলেন। সেখানে ঠিক হয়, এইমুহূর্তে নিজেরা উদ্যোগী হয়ে কিছু করা ঠিক হবে না। বরং বৃহস্পতিবারের সুপ্রিম কোর্টের শুনানির জন্য অপেক্ষা করাই ভাল। বরং তাঁরা যেটা করতে পারেন, শুনানির আগে ক্লাবের তরফে বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে সুপ্রিম কোর্টের কাছে অচলাবস্থা কাটাতে আবেদন করা। সেটাই করেছে আইএসএলের ১২ ক্লাব। ওড়িশা এফসি দল রাখার পক্ষপাতী নয়। তাই তাদের কোনও আগ্রহ নেই আইএসএল আদৌ হল কিনা, তা নিয়ে। চেন্নাই এফসি সুপার কাপে খেললেও এখন হঠাৎ আইএসএল ক্লাব জোট থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে। মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট ও ইস্টবেঙ্গল, ক্লাব জোটে থাকলেও, প্রথমে সুপ্রিম কোর্টের কাছে নতুন করে কোনও পিটিশন দাখিল করার পথে হাঁটা নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত ছিল। পরে তারাও যোগ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টে জমা করা পিটিশনে। এখন পর্যন্ত যা খবর তাতে ২ ক্লাব বাদ দিয়ে কলকাতার মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল, মহমেডান, প্রোমোশন পাওয়া ইন্টার কাশী সহ ১২ দল সুপ্রিম কোর্টে পিটিশন দাখিল করেছে বৃহস্পতিবারের শুনানির আগে।
ফেডারেশনের দেওয়া প্রতিশ্রুতিমতো বিড ইভালুয়েশন কমিটির চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাওয়ের তৈরি বিস্তারিত রিপোর্ট, যেটা সুপ্রিম কোর্টে ইতিমধ্যেই জমা পড়েছে, সেটা আইএসএল ক্লাবগুলোর মধ্যে বিলি করা হয়েছে। তার ভিত্তিতেই ১২ আইএসএল ক্লাব সুপ্রিম কোর্টে নিজেদের বক্তব্য দাখিল করেছে আবেদন আকারে। এল নাগেশ্বর রিপোর্টে দুটি বিষয়ের ওপরই বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। যেটা নিয়ে আপত্তির কারণে কোনও বিডার আগ্রহ দেখায়নি আইএসএলের বানিজ্যিক সহযোগী হওয়ার। আইএসএল গভর্নিং কাউন্সিলে পুরো নিয়ন্ত্রণ বানিজ্যিক সহযোগীর হাতে থাকতে হবে। ফেডারেশনের বা আদালতের সেখানে কোনও হস্তক্ষেপ থাকবে না। আর একটা বিষয় হল, প্রোমোশনের সঙ্গে রেলিগেশন চালু করা। এই দুটো বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট যাতে একটু শিথিলতা দেখায়, সেটাই এল নাগেশ্বর রাওয়ের রিপোর্টে আবেদন আকারে উল্লেখ করা হয়েছে বলে নাকি শোনা যাচ্ছে। একইসঙ্গে আইএসএলের বানিজ্যিক সহযোগী হতে যে ৩৭.৫ কোটি টাকা অঙ্কের কথা বিডিং প্রসেসে উল্লেখ করা হয়েছে, তা কমানোর কথাও ভাবা হচ্ছে গোটা বিষয়টার জট ছাড়াতে।
এখন দেখার বিষয় বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে কোনও সুরাহা হয় কিনা আইএসএল ঘিরে তৈরি অচলাবস্থা কাটাতে।
খেলার খবরের জন্য ক্লিক করুন: www.allsportindia.com
অলস্পোর্ট নিউজের সঙ্গে থাকতে লাইক আর ফলো করুন:ফেসবুক ও টুইটার





